ইউনিকর্ন, নৈশব্দের রঙের ছবি তৈরি দর্শকদের জন্য, একটু অপেক্ষা

ইউনিকর্নইউনিকর্ন

নবনীতা দাশগুপ্ত


ইউনিকর্ন, নৈশব্দের রঙের ছবি। এতদিন তাঁকে দেখা গিয়েছে টেলিভিশনের পর্দায়। বানিয়েছেন টেলিফিল্মও। এ বার সেই তথাগত কাজ করলেন ক্যামেরার পিছনে, বানিয়ে ফেললেন পূর্ণদৈর্ঘ্যের ছবি। যদিও সময় এক ঘণ্টা। আর সেই এক ঘণ্টায় তথাগত বলে ফেলবেন একটা পুরো গল্প। তার আগে বিদেশের মাটিতে কখনও উপদেশ দিলেন বিখ্যাত অভিনেতা চিরঞ্জিত চক্রবর্তীকে আবার কখনও নিজের স্ত্রীকে। কখনও আবার ক্য়ামেরা নিয়ে শুট করলেন জলের নিচে।

অভিনেতা, পরিচালক তথাগত মুখোপাধ্যায়। এক ঘণ্টার হলেও এটি একটি ফিচার ফিল্মই। জানালেন ছবির এক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করা চিরঞ্জিত চক্রবর্তী। এই ছবিতে একই দিনে ১৪টি সিনের শট দিয়েছেন চিরঞ্জিত চক্রবর্তী। এটিকে তাঁর অভিনয় জীবনের অন্যতম সেরা অভিজ্ঞতা বলে মনে করছেন তিনি।

পূর্ণদৈর্ঘ্যের ছবি করার সঙ্গে সঙ্গেই সম্পূর্ণ হলেন পরিচালক তথাগত। ছবির নাম ‘ইউনিকর্ন’।  ছোটবেলা থেকেই ‘ইউনিকর্ন’-এর প্রতি বিশেষ আকর্ষন ছিল তথাগতর। রূপকথার গল্পও তাকে বড্ড টানে সেই ছোটবেলা থেকেই। তাই পরবর্তীকালেও ছবি বানালে রূপকথার গল্পই বেছে নেবেন বলে জানিয়ে দিললেন তথাগত।

সাংবাদিক সম্মেলনে ছবির পোস্টার ও ট্রেলার লঞ্চ হয়ে গেল। এ বার অপেক্ষা মুক্তির। ছবির শুটিং ও পোস্ট প্রোডাকশনের কাজেও ইতি টেনেছেন এই নবীন পরিচালক। সবমিলিয়ে এক ঘণ্টার ছবি।
ছবির বেশিরভাগ শুটিং হয়েছে বিদেশে। আন্ডারওয়াটার শুটও হয়েছে। বাংলা ছবির ইতিহাসে আন্ডারওয়াটার শুট এই প্রথম।

জলের তলায় ক্যামেরার দায়িত্বে ছিলেন তথাগত স্বয়ং। নৈশব্দের রঙের ছবি এই ‘ইউনিকর্ন’। দুটো ফ্যান্টাসির মেলবন্ধন ঘটবে এখানে। যা ক্রমশ প্রকাশ্য। ওয়ার্ডস ওয়ার্থের বিখ্যাত লেখা ‘দ্য সলিটরি রিপার’এ সুর দিয়েছেন ময়ূখ ভৌমিক। গানটি সোনা যাবে এই ছবিতে। দেখা হবে ঐতিহ্যশালী ‘নকশি কাথা’। এই ছবিতে এক বিশেষ ভূমিকায় পাওয়া যাবে নকশি কাথাকে। বরং বলা ভাল ‘ইউনিকর্ন’কে এগিয়ে নিয়ে যাবে একটি নকশি কাথাই। এই ছবির জন্য তিনজন দক্ষ শিল্পীকে দিয়ে তৈরি করা হয়েছে সেই কাথা।

যীশুদার প্রতি আমার একটা ক্রাশ আছে

সাংবাদিক সম্মেলনে যে গল্প জানা গেল…

অপালা কলকাতার বনেদি পরিবারের মেয়ে। ছোটবেলায় ঠাকুমার কাছে শোনা পারিবারিক নকশি কাথার গল্প। শুনেছিলেন সেই কাথায় নাকি জাদু আছে। যা তাকে অনেক বিপদ থেকে রক্ষা করবে। ওই কাথায় নিজের দৈনন্দিন জীবনের ছবি শেষ বুনেছিলেন অপালার ঠাকুমা। বিয়ের পর সেই কাথাটিও শ্বশুরবাড়ি যায় তার সঙ্গে। তারপর আলমারি ভিতর হারিয়েও যায় একদিন।

বরের চোখ রাঙানীস ছেলে মানুষ করার ঝক্কি সঙ্গে অফিসের বসের রোজকার সেক্সচুয়াল হ্যারাসমেন্টের মধ্যে হঠাৎই কাথাটা খুঁজে পায় অপালা। ছবির মোড় ঘুরবে ঠিক এর পর থেকে। অপালা এর পর চলে যায় আর একটি সমান্তরাল পৃথিবীতে। সাংসারিক দায়হীন সমাজের চোখ রাঙানীর বাইরে। তৃতীয় বিশ্বের রীতির থেকে আলাদা একটা অন্য জগতে।

এ সবের উত্তর খুঁজতে সে হাজির হয় মনোবিদ দিগম্বরের কাছে। তার কাছে জানা যায় সবটাই নাকি অপালার হ্যালুসিনেশন। তবে সত্যি কোনটা? তা জানতে হলে অপেক্ষা করতেই হবে। কিন্তু বলা যেতেই পারে একদম ভিন্ন স্বাদের একটা ছবি নিয়ে আসছেন তথাগত। হিট-ফ্লপ পরের কথা। কখনও আসল হয়ে দাড়ায় ভাবনাটাই। যেটা ইতিমধ্যেই বাস্তব রূপ দিয়েছে অভিনেতা থেকে পরিচা‌লক হওয়া তথাগত।

বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন দেবলীনা দত্ত মুখোপাধ্যায়, চিরঞ্জিত চক্রবর্তী, রাজর্ষি দে, রানা বসু ঠাকুর, পুজা মৈত্র প্রমুখ। সিনেমাটোগ্রাফি শুভদীপ দে। ছবির সহ পরিচালক সত্রাবিত পাল।  সঙ্গিত পরিচালক ময়ূখ ভৌমিক। কাহিনি-চিত্রনাট্য-পরিচালনা তথাগত মুখোপাধ্যায়। এ ছাড়াও টিম ‘ইউনিকর্ন’এ আছে আরও অনেক মানুষের অবদান।

শেষে বলতেই হচ্ছে স্বামী-স্ত্রীর (তথাগত-দেবলীনা প্রোডাকশন) যৌথ প্রযোজনায় ‘ইউনিকর্ন’ কলকাতার দর্শকদের সামনে কবে আসবে তা কিন্তু জানাননি তথাগত কিন্তু ইতিমধ্যেই ছবিটিকে বিভিন্ন ফেস্টিভ্যালে পাঠানোর পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন পরিচালক।