সর্দার উধম-এ সব ছিল শুধু দেশাত্ববোধ জেগে উঠল না, জানা গেল না উধমকেও

সর্দার উধম

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: সর্দার উধম, তৈরি করেছিলেন সুজিত সরকার অজানা এক হিরোকে মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য। তিনি উধম সিং। ব্রিটিশ আমলে বার বার নাম বদলে অনেক কিছু হয়েছিলেন। কিন্তু তিনি আসলে সর্দার উধম সিং। যিনি জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যা কাণ্ডের বদলা নেবেন ব্রিটিশদের মাটিতে দাঁড়িয়ে। উধম সিং-এর ভূমিকায় ভিকি কৌশল তাঁর অভিনয়ের দৌলতে সেরা। গল্পটা অনেকটা এরকম, ১৯১৯-এ হওয়া জালিয়ানওয়ালবাগ হত্যাকাণ্ডের বদলা নিতে লন্ডনে পৌঁছন উধম সিং। সেই হত্যাকাণ্ডের অনুমতি যিনি দিয়েছিলেন সেই মাইকেল ও’ডোয়েরকে হত্যা করেন জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের বদলা নিতে ২১ বছর পর।

১৯১৯-এ পঞ্জাব সরকারের লেফ্টেনেন্ট গভর্নর ছিলেন তিনি। ভারতের স্বাধীনতার ইতিহাসে এক অন্ধকার অধ্যায় জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ড। শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের মঞ্চে নির্দয়ের মতো গুলি চালায় ব্রিটিশ সরকার। ২০ বছরের একটা ছেলে সেই যন্ত্রণা বয়ে বেড়ায় আরও ২০ বছর। বেআইনি পথে, নাম বদলে কী ভাবে কীভাবে তিনি পৌঁছে যান লন্ডনে। খুঁজে ফেলেন জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের আসল দোষীকে। বইয়ের ভাজে পিস্তল নিয়ে লন্ডনের এক ভরা সভায় সামনে থেকে খুন করেন ডো’য়েরকে। ধরা পড়েন পুলিশের হাতে। তার পর ব্রিটিশ পুলিশের অত্যাচার। আর সবার শেষে কেন তিনি এই ঘটনা ঘটালেন তার বিস্তারিত ব্যাখ্যা।

পুরো ছবিতে অযথা টানা হয়েছে সব দৃশ্য। মাঝে মাঝে হঠাৎ হঠাৎ এমন দৃশ্য ঢুকে আবার বেরিয়ে গিয়েছে যার সঙ্গে রিলেট করতে রিওয়াইন্ড করে আবার দেখতে হয়েছে। ভাগ্যিস ওটিটি প্ল্যাটফর্মে রিলিজ করেছিল। হলে তো আর রিওয়াইন্ড অপশন থাকত না। অনেক সিনের মাহাত্ম তার পরও বোঝা সম্ভব হয়নি। ছন্নছাড়া স্ক্রিপ্ট, যাতে খেই হারিয়ে যায়। সিনেমার আসল মুহূর্তটাই শুরুতে দেখিয়ে দিয়ে তার পর বাকি সিনেমার ২ ঘণ্টা চালানো সহজ ছিল না। আর শেষ বেলায় জালিয়ানওয়ালবাগ হত্যাকাণ্ডের পর আহতদের উদ্ধার করতে নামা নামেন এক এবং একমাত্র উধম সিং। দীর্ঘ সিন দেখতে দেখতে আগে কী ঘটেছে ভুলতে বসার উপক্রম হয়।

সর্দার উধম-এর গল্প বলা, দৃশ্য চয়ন, দৃশ্যের অতি দীর্ঘায়িতকরণ, ডায়লগ বাদ দিলে বাকি যা থাকছে, অভিনয়, সেট, সিনেমাটোগ্রাফি, আলো অসামান্য। লন্ডন হোক বা ভারত প্রতিটি দৃশ্যকে আলোর কাজ আলাদা মাত্রা দিয়েছে। কাহিনি লিখেছেন, রীতেশ শাহ এবং শুভেন্দু ভট্টাচার্য, যাঁরা গল্পের ধারাবাহিকতাটা ধরে রাখেননি। পরিচালক কোনও কিছু অতিরঞ্জিত করতে চাননি, কিন্তু উধম সিং-এর জীবনী দেখতে বসে তাঁকে ঠিক জানা হল না। ২৭ মিনিটে ডোয়ের খুন, যা গল্পের নায়কের মূল লক্ষ্য। রক্তাক্ত জালিয়ানওয়ালবাগের দৃশ্য আসে ১১৭ মিনিটে। আর উধম সিং-এর মৃত্যু দণ্ড হয় ১৫০ মিনিটে। সব মিলে ছবির সময় ১৬৩ মিনিট। দীর্ঘই বটে তবে মেকিং তাঁর অনুভূতিকে আরও দীর্ঘায়িত করেছে। চেনা ধারাকে ভাঙতে গিয়ে স্পর্শ করে না সর্দার উধম।

প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)