Lata Mangeshkar Died ভারতীয় সঙ্গীতে শেষ হল একটা যুগের

Lata Mangeshkar Diedলতা মঙ্গেশকর

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক:  ৯২ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন ভারতীয় সঙ্গীতের নাইটিঙ্গেল (Lata Mangeshkar Died)। গত ২৮ দিন ধরে ভর্তি ছিলেন মুম্বইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে। কোভিড সংক্রমিত হয়ে ভর্তি হন তিনি। তার পর থেকে নিরলস যুদ্ধ চলে তাঁকে সুস্থ করে তোলার। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। রবিবার সকালে প্রয়াত হলেন তিনি। শন‌িবার বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁকে ভেন্টিলেশনে স্থানান্তরিত করা হয়। খবর পেয়েই হাসপাতালে যান বোন আশা ভোঁসলে। তিনি বেরিয়ে জানিয়েছিলেন স্থিতিশীল রয়েছেন লতা। কিন্তু তাঁর চোখে মুখে ধরা পড়ছিল আতঙ্ক। সেটাই সত্যি হল।

১১ জানুয়ারি কোভিডে আক্রান্ত হন লতা মঙ্গেশকর। প্রথম থেকেই তাঁকে আইসিইউতে রাখা হয়েছিল। লতার জন্ম ১৯২৯-এ।  বাড়ির বড় সন্তান। তার পর রয়েছে আরও তিন বোন আর এক ভাই। বাবা দীনানাথ মঙ্গেশকরের কাছেই গানের তালিম নেওয়ার শুরু। কিন্তু হঠাৎই ছন্দপতন ঘটে যায় পরিবারে। লতার যখন মাত্র ১৩ বছর বয়স তখন প্রয়াত হন বাবা। পুরো সংসারের দায়িত্ব সেই বয়সেই চলে আসে তাঁর কাঁধে। শুরু হয় নতুন লড়াই।

মধ্যপ্রদেশ থেকে গোটা পরিবার চলে যায় মুম্বইয়ে। সেখানে শুরু হয় জীবন যুদ্ধ। কিন্তু গান তো  ধ্যান-জ্ঞ্যান, সেটা ছেড়ে কী করে থাকবেন। তাই চলতে থাকে দুটোই। সংসার চালাতে অভিনয়ও করেন। মুম্বইয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা হয় গুলাম হায়দারের কাছে। তিনিই লতাকে নিয়ে যান বিখ্যাত প্রযোজক শশধর মুখোপাধ্যায়ের কাছে। কিন্তু বাতিল হন লতা। সেদিন থেকেই গুলাম হায়দার চ্যালেঞ্জ নিয়ে নেন লতাকে গায়িকা তৈরি করার। ১৯৪৮-এ ‘মজবুর’ ছবিতে প্লে-ব্যাকের পর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি।

তার পর থেকে দশকের পর দশক মজে থেকেছে লতার কণ্ঠে। ১৯৪১-এ রেডিওতে অভিষেক হয়েছিল লতা মঙ্গেশকরের। যেখানে দুটো গান গেয়েছিলেন তিনি। তার পর ১৪টি ভাষায় ৫০ হাজারের উপর গান গেয়েছেন তিনি। দেশের সব প্রজন্মের নায়িকাদের লিপে টানা শোনা গিয়েছে লতার কণ্ঠ। পাঁচের দশক থেকে ন’য়ের দশক পর্যন্ত দীর্ঘ এই পথ চলা আজ শেষ হল। মুঘল-এ-আজম, পাকিজা থেকে দিলতো পাগল হ্যাল, রং দে বসন্তি, লাগান পর্যন্ত শোনা গিয়েছে তাঁর সুরেলা সেই গলা।

তাঁকে ঘিরে একটা কাহিনী খুব প্রচলিত আছে। যেখানে তাঁর গানে কেঁদে ফেলেছিলেন পণ্ডিত জওহরলাল নেহেরু। সেটা ১৯৬৩। তখন ভারত-চীন যুদ্ধ তুঙ্গে। সেই বছরের ২৭ জানুয়ারি লতা গাইলেন ‘অ্যায় মেরে বতন কে লোগো’। সামনে বসে শুনছিলেন নেহেরু। তার পরটা তো ইতিহাস। দেশে তো বটেই বিদেশেও অনেক সম্মান পেয়েছেন তিনি। গানের সঙ্গেই সংসার পেতেছিলেন সবার লতা দিদি। তার সেই একলা সংসারের ইতি হল। কিন্তু তিন‌ি বাঁচবেন তাঁর গায়ে যুগের পর যুগ। আসলে শিল্পির মৃত্যু হয় কিন্তু শিল্প বেঁচে থাকে। তাঁর প্রয়াণে দু’দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে।

প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)