কৃষ্ণকলি কি এ বার ফর্সা হয়ে উঠবেন মেকওভার করে?

কৃষ্ণকলি

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: কৃষ্ণকলি গো আমাদের কৃষ্ণকলি। ওই যে রোজ জি বাংলায় সন্ধে বেলায় হাজির হন কালো মুখ আর একচোখ জল নিয়ে, যে জল থামতেই চায় না। সে স্বামী, শসুর বা সংবাদ মাধ্যম সবার সামনেই অঝোরধারায় বইতে থাকে। আর তা করতে গিয়ে কৃষ্ণকলি ক্রমশ কালো রঙ হারিয়ে ফেলছেন। যে কালো নিয়েই এত গল্প।

হ্যাঁ ঠিক ধরেছেন। আপনারা যাঁরা গোগ্রাসে কৃষ্ণকলি দেখেন তাঁরাও নিশ্চই লক্ষ্য করেছেন, শ্যামার (সিরিয়ালে কৃষ্ণকলির আসল নাম) গায়ের রঙে বদল আসছে। ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে রিয়ালিটি। একটা সময় এই সিরিয়ালটির টিআরপি সর্বোচ্চ ছিল। কিন্তু ছোপ ছোপ গাল ওয়ালা নায়িকা কি আর মন কাড়ছে শ্যামাপ্রেমীদের?

কৃষ্ণকলি ক্লাইমেক্সের উপরই রয়েছে। মাঝ মাঝে বেশ টানটান বিষয় থাকছে। কখনও ছোটছেলে-বউকে ঘর থেকে বের করে দিচ্ছেন শ্বাশুরি আবার কখনও সেই ছোট বউয়ের গান শুনে মৃতপ্রায় শ্বশুর বেঁচে উঠছেন। তা দেখে আপ্লুত শ্বাশুরি বুকে টেনে নিচ্ছেন কালো বউমাকে, তুলে দিচ্ছেন সংসারের চাবি।

আবার সেই মহান ছোট বউ সেই চাবি প্রত্যাখ্যান করে তাঁর হাতে তুলে দিচ্ছেন যে সব থেকে বেশি তাঁর পিছনে লেগেছে। এতেও কোনও আপত্তি নেই। সংসারের টানাপড়েনকে নাটকীয় তো করে তুলতেই হবে। সেটাই দেখতে ভালবাসেন আমাদের মা, কাকিমা, মামিমারা। তা নিয়ে আমার পরিচালকের প্রতি কোথাও অভিযোগ নেই। মানে জাস্ট দুনিয়ার কোনও অভিযোগ নেই।

(বিনোদনের আরও খবরের জন্য ক্লিক করুন এই লিঙ্কে)

তবে কয়েকটা প্রশ্ন তুলে আনতে চায় জাস্ট দুনিয়া। তার জবাব হয়তো পাবে না, তবুও প্রশ্নগুলো থাকল।

এক, শ্যামা চরিত্রের জন্য সত্যিকারের কালো কোনও মেয়ে পাওয়া গেল না? শ্যামা চরিত্রে অভিনয় করা তিয়াশা রায় রীতিমতো ফর্সা একজন মানুষ। এ বার তাঁকে আপনারা কালো করলেন। তাতে কী হল? মুখটাই শুধু কালো করতে পারলেন, গলা, হাত, শরীরের দৃশ্যত আরও অনেক অংশের সঙ্গে মুখের রঙের কোনও মিল থাকল না। এই সমস্যা সিরিয়ালের প্রথম থেকেই রয়েছে।

দুই, প্রশ্নটা মেকআপ আর্টিস্টকে পরিচালকের করা উচিৎ ছিল, যা জাস্ট দুনিয়া তুলছে। প্রতি এপিসোডে শ্যামার গায়ের রঙ বদলাতে দেখা গেল। আর সম্প্রতি একমাসের যা ট্রেন্ড তাতে শ্যামার মুখটা সারাক্ষণই ছোপ ছোপ থাকে। আর তার মুখেই বার বার ক্যামেরা ক্লোজআপ করে।

তিন, আপনার নায়িকা এত না কাঁদলে হয়তো রঙটা ম্যানেজ করতে পারত মেকআপ আর্টিস্টরা। তাঁদেরও তো কিছু প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। সঙ্গে আবার জাঁকিয়ে গরম। যাতে সব মেকআপের বারোটা বেজে যাচ্ছে।  এখন কিন্তু শ্যামার এই ঘ্যানঘ্যানে কান্না মা-মাসিমারাও পছন্দ করছেন না। আর তার সঙ্গে বড্ড বেশি দৃষ্টিকটূ লাগছে শ্যামার মুখে ছোপ ছোপ কালো রঙ।

চার, শেষে অস্বাভাবিক সব ক্লাইমেক্স। ০৮ জুলাই ২০১৯-এর এপিসোডে হঠাৎ একদল সংবাদ মাধ্যমের লোকজন ঢুকে পড়ে নিখিলদের বাড়িতে। তার পর হঠাৎ কোনও একজন একটি রেকডিং বের করে শ্যামার গলায় বেশ কিছু তার শ্বাশুরির সম্পর্কে বলা কথা শোনায়। সেখানেও কেঁদে ভাসাল শ্যামা। আর গোটা পরিবার সংবাদ মাধ্যমকে তাদের মতামত জানাতে থাকল।

জাস্ট দুনিয়া বাংলার এই বিশাল টেলিভিশন ইন্ড্রাস্টির কাজকে কূর্নিশ করে। কত মানুষের রুটি-রুজির জোগান হয় এখান থেকে। কত মানুষের স্বপ্ন পূরণ হয়। সাধারণ মানুষ কত ভাল প্রোডাকশন দেখতে পায়। সেখানে দাঁড়িয়ে বাংলা সিরিয়ালগুলো আর একটু বাস্তবের মাটিতে পা রেখে চললে হয়তো কোনও ক্ষতি হবে না। একটা সময় তো হত, তাও রমরমিয়ে চলত। মনে পড়ছে ‘বিবাহ অভিযান’এর কথা? পুরনো, নতুনের তুলনার বাইরে বেরিয়ে অন্যভাবে কি ভবা যায় না? ইতিমধ্যেই তো এক বছর বয়স হয়ে গিয়েছে এই সিরিয়ালের। এ বার একটা অন্যরকম কিছু টুইস্ট হোক না, যা সাধারণ মানুষ আগাম ধরে ফেলতে পারবে না।