গুঞ্জন সাক্সেনা: দ্য কার্গিল গার্ল, অসম লড়াই পিছনে ফেলে যুদ্ধ জয়ের নাম

গুঞ্জন সাক্সেনা: দ্য কার্গিল গার্ল

গুঞ্জন সাক্সেনা: দ্য কার্গিল গার্ল এক সত্যি কাহিনী উঠে এসেছে সিনেমার পর্দায়। বায়ুসেনার প্রথম মহিলা বিমান চালক হিসেবে কার্গিল যুদ্ধে ভারতের জয়ের অন্যতম কারিগর। তাঁর লড়াই ছুঁয়ে যায় বাস্তব জীবনে প্রতিটি মেয়ের কাহিনীকে লিখলেন সুচরিতা


গুঞ্জন সাক্সেনা: দ্য কার্গিল গার্ল সিনেমার নাম হলেও গুঞ্জন সাক্সেনা— লড়াই, হেরে যাওয়া, আবার লড়াই করে ফিরে আসার নাম। গুঞ্জন সাক্সেনা পুরুষশাসিত সমাজে মহিলাদের লড়াইয়ের প্রতীক। আর তাঁর জীবন নিয়েই নেটফ্লিক্সে সম্প্রতি রিলিজ হয়েছে ১ ঘণ্টা ৫২ মিনিটের এই সিনেমা। মূল ভূমিকায় জাহ্ণবী কাপুর।

এই সিনেমা যে ভাবে গুঞ্জনের কাহিনি তুলে ধরেছে তা আমাদের দেশে সব ঘরের রোজকার বাস্তব। মেয়ে হয়ে জন্ম নেওয়ার ‘শাস্তি’। সেই সমাজেই যখন কোনও পুরুষ তার বিরুদ্ধে গিয়ে নিজের পরিবারের মেয়েটির পাশে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘‘ককপিটে যে বসে তাঁকে পাইলট বলা হয়, তা সে মহিলা হোক বা পুরুষ,’’— তখন সেই হতাশায় ডুবে যাওয়া মেয়েটাও নতুন করে ওড়ার ডানা খুঁজে পায়।

গুঞ্জন সাক্সেনার সঙ্গে এমনটাই হয়। ওড়ার স্বপ্ন দেখত মেয়েটা। পাইলট হতে চেয়েছিল। কিন্তু, সেই ট্রেনিং নিতে গেলে যা যা লাগে, সেই সময় তার সেটা ছিল না। ইচ্ছেটাতে অল্প একটু মোচড় দিয়ে তিনি এ বার যেতে চাইলেন বায়ুসেনায়। বাবার পর দাদাও সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছেন। ছোট থেকেই তা দেখে বড় হওয়া। তার সঙ্গে মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়েছিল বিমান ওড়ানোর স্বপ্নটা।

বেঁকে বসল মা, দাদা। কিন্তু সে দিনও বাবাকে পাশে পেয়েছিলেন গুঞ্জন, যখন তিনি পাইলট হতে চেয়েছিলেন। এ বারও পেলেন। এর পর বাধ সাধল তার ওজন ও উচ্চতা। সেখানেও হতাশা থেকে তাকে বার করে আনল সেই বাবা। শেষ পর্যন্ত সাফল্য। পরিবারের একগুচ্ছ বিরোধিতার বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করেছিল যে বাবা, এই পুরুষশাসিত এয়ারবেসে কি তার পাশে দাঁড়াবে? মহিলা হওয়ার নতুন পরীক্ষার শুরু হয় সেখানে। যখন কেউ তাঁকে ট্রেনিং দিতে এগিয়ে আসছেন না, তখন পাশে দাঁড়ান এক সিনিয়র অফিসার। শুরু হয় ট্রেনিং। সেরা পারফরম্যান্স তাকে সোজা পৌঁছে দেয় কার্গিল যুদ্ধের মঞ্চে।

সেখানেও বাধ সাধে তার মেয়ে জন্ম। কিন্তু লড়াই ছাড়েনি। শুরুর একটা একটা ধাপ অদম্য জেদ দিয়ে পার করে আসা মেয়েটা যুদ্ধ জিতে যায় সাহসের জোরে। শেষ পর্যন্ত যাঁরা এক দিন তার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন, সেই তাঁরাই হাততালি দিয়ে তাঁদের জগতে স্বাগত জানায় গুঞ্জন সাক্সেনাকে।

গুঞ্জন সাক্সেনার ভূমিকায় জাহ্নবী কাপুর, তাঁর বাবার ভূমিকায় পঙ্কজ ত্রিপাঠী ও দাদার ভূমিকায় অঙ্গদ বেদী যাঁর যাঁর জায়গায় সেরাটাই দিয়েছেন। এই ছবিতে দেখানো এক মহিলা অফিসারের বিরুদ্ধে পুরুষ অফিসারদের ব্যবহারে বিরুদ্ধে মামলাও হয়, তা ভুল তথ্য হিসেবেও ব্যাখ্যা করা হয়।

সবার শেষে এই ছবি আসল বার্তাটাই দিয়ে যায়, যে পুরুষতান্ত্রিক সমাজ এক মহিলা পাইলটকে বার বার মেয়ে বলে অবহেলা করছিল সেই সমাজেরই দুই পুরুষ তাকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করেন। বাড়িতে বাবা আর কাজের জগতে সিনিয়র অফিসার।

(বিনোদন জগতের আরও খবরের জন্য ক্লিক করুন এই লিঙ্ক)

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)