বাংলা টিভি সিরিয়াল: নতুন করে শুটিং না হওয়ায় দেখতে হচ্ছে পুরনো পর্বই

বাংলা টিভি সিরিয়ালবাংলা টিভি সিরিয়াল

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: বাংলা টিভি সিরিয়াল সম্পর্কে নানাবিধ ‘অভিযোগ’ শোনা গেলেও একটা বড় অংশের দর্শক কিন্তু তার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়নি কখনওই। কিন্তু, এ বার সেই বাংলা টিভি সিরিয়াল দর্শকদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিল। যদিও সাময়িক ভাবে। তবুও কবে যে ঠিক আবার বাংলা টিভি সিরিয়ালের নতুন পর্ব দেখা যাবে, তা নিয়ে কেউই নিশ্চিত নন।

মঙ্গলবারও পুরনো পর্বগুলোই দেখেছেন দর্শকরা। আজ বুধবারও সেই সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ প্রায় কোনও প্রযোজকের কাছেই সিরিয়ালের শুট করা অংশ নেই, যা দিয়ে নতুন পর্ব দেখানো যেতে পারে। কাজেই, এ ক্ষেত্রে আর পুরনো চাল ভাতে বাড়ছে না।

ঘটনার সঙ্গে কোনও ভাবেই যুক্ত নন দর্শকরা। তারা তো পর্দার এ পারের মানুষ। গন্ডগোলটা হয়েছে পর্দার ও পারে। পর্দায় তাঁরা যাদের নিত্য দিন দেখেন, সেই শিল্পীরা সময় মতো পারিশ্রমিক পাচ্ছেন না। সিরিয়াল নির্মাণের সঙ্গে যে সমস্ত কলাকুশলী জড়িয়ে থাকেন, তাঁদেরও একই সমস্যা। পারিশ্রমিক সময় মতো মিলছে না। দু’পক্ষের অনেকেরই দীর্ঘ দিন ধরে তা বকেয়া পড়ে রয়েছে। যাদের কাছে এই পাওনা, সেই প্রযোজক সংস্থাগুলি নাকি এ ব্যাপারে নির্বিকার। আর সেখানেই গন্ডগোলের সূত্রপাত। সঙ্গে আরও অভিযোগ রয়েছে। কাজের সময় নির্দিষ্ট করে না দেওয়া। ফলে, এক জন শিল্পীকে অনেকটা সময় কাজ করতে হচ্ছে। অথচ সেই অনুপাতে পারিশ্রমিকও মিলছে না।

বাংলা সিরিয়াল কি বন্ধ হয়ে যাবে? টালিগঞ্জে শুটিং-এ অনড় শিল্পী-কলাকুশলীরা

এ সবের জেরে গত শনিবার থেকে বাংলা টিভি সিরিয়ালের শুটিং বন্ধ। প্রথমে জানা গিয়েছিল, শিল্পী এবং কলাকুশলীরা বকেয়া না মেটা পর্যন্ত কাজ করবেন না। ফলে বন্ধ হয়ে যায় শুটিং-এর কাজ। কিন্তু, মঙ্গলবার আর্টিস্ট ফোরমারে তরফে অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, শিল্পী-কলাকুশলীরা নন, শুটিং বন্ধ করেছে প্রযোজক সংস্থাগুলি। তারা কলটাইম দিলে শিল্পীরা যে কোনও সময়ে কাজ করতে প্রস্তুত। এমনকি তিনি এটাও বলেন, ‘‘কোনও শর্ত না রেখে কাজটা শুরু করতে চাই আমরা। বাকি যেগুলো সমস্যার জায়গা সেগুলো একটা একটা করে মেটানো যাবে। আমরা এক টেবিলে বসতে রাজি, কিন্তু কোনও শর্ত না মেনে ওঁরা বসতে রাজি কি?’’ এই ওঁরা মানে, প্রযোজক সংস্থাগুলির কর্ণধারেরা।

এ সবের জেরে আখেরে কার ক্ষতি? যে দর্শক প্রতি দিন টিভির মুখাপেক্ষী হয়ে থাকেন সিরিয়াল দেখবেন বলে, এখানে তাঁর ভূমিকাটা ঠিক কী? অথচ, প্রযোজক সংস্থাগুলি তাঁদের জন্যই সিরিয়াল তৈরি করছে। ব্যবসাটা আসছে তাঁদের কাছ থেকেই। কারণ সিরিয়ালের ফাঁকে যে বিজ্ঞাপন দেখানো হয়, যেখান থেকে মুনাফা করে প্রযোজক সংস্থাগুলো, তারও দর্শক কিন্তু একই। যে ভাবে সেই দর্শকের কথা না ভেবে সিরিয়ালগুলো বন্ধ করে দেওয়া হল (হতে পারে তা সাময়িক), তাতে সেই দর্শক যদি অপমানিত বোধ করেন! যদি সেই দর্শক এ বার টিভি সিরিয়াল থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন! তা হলে বিজ্ঞাপনদাতারা আর আপনাদের সঙ্গে হাত মেলাবেন তো! প্রযোজক সংস্থাগুলি ভাবছে কি! 

এ দি ন আর্টিস্ট ফোরামের সাধারণ সভা ছিল নজরুল মঞ্চে। প্রসেনজিতের দাবি, ওই সভায় প্রায় ১২-১৩ শো শিল্পী হাজির ছিলেন। সকলেরই মত, প্রযোজক সংস্থাগুলির অবিলম্বে বকেয়া টাকা মেটানো উচিত। এর আগে সংস্থাগুলি জানিয়েছিল, ১৬ অগস্টের মধ্যে বকেয়া মিটিয়ে দেবে। কিন্তু বাস্তবে তা না হওয়ায় শিল্পীরা বেঁকে বসেন। যদিও প্রসেনজিতের দাবি, শনিবারও শিল্পীরা মেক আপ করে শুটিং-এর জন্য বসে ছিলেন। পরে প্রযোজক সংস্থার তরফে ফোন জানিয়ে দেওয়া হয় শুটিং হবে না।

কিন্তু, এ সবের জেরে আখেরে কার ক্ষতি? যে দর্শক প্রতি দিন টিভির মুখাপেক্ষী হয়ে থাকেন বাংলা টিভি সিরিয়াল দেখবেন বলে, এখানে তাঁর ভূমিকাটা ঠিক কী? অথচ, প্রযোজক সংস্থাগুলি তাঁদের জন্যই সিরিয়াল তৈরি করছে। ব্যবসাটা আসছে তাঁদের কাছ থেকেই। কারণ সিরিয়ালের ফাঁকে যে বিজ্ঞাপন দেখানো হয়, যেখান থেকে মুনাফা করে প্রযোজক সংস্থাগুলো, তারও দর্শক কিন্তু একই। যে ভাবে সেই দর্শকের কথা না ভেবে সিরিয়ালগুলো বন্ধ করে দেওয়া হল (হতে পারে তা সাময়িক), তাতে সেই দর্শক যদি অপমানিত বোধ করেন! যদি সেই দর্শক এ বার টিভি সিরিয়াল থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন! তা হলে বিজ্ঞাপনদাতারা আর আপনাদের সঙ্গে হাত মেলাবেন তো! প্রযোজক সংস্থাগুলি ভাবছে কি!