অভিষেক বচ্চন পা দিলেন নেট দুনিয়ায় ‘ব্রিদ: ইনটু দ্য শ্যাডোস’ সিরিজে

অভিষেক বচ্চন

জাস্ট দুনিয়া ব্যুরো: অভিষেক বচ্চন এ বার তা হলে বাবার ছত্রছায়া থেকে বেরিয়ে আসতে পারলেন। আসলে বেরিয়ে আসতে তিনি প্রথম দিন থেকেই পারতেন, সে যোগ্যতা, ক্ষমতা তাঁর ছিল এক কথায় তাঁর রক্তেই ছিল। যাঁর বাবা অমিতাভ বচ্চন ও মাম জয়া বচ্চন তাঁর তো রক্তেই অভিনয় থাকবে তা আর এমন কী বড় বিষয়। কিন্তু তাঁর এই পারাটা, জানাটা কেউ সোজা পথেও গ্রহন করেননি। বরং তাঁর গায়ে তকমা লেগে গিয়েছিল অমিতাভের ছেলের। যা হয় তাই হয়েছে। বড় বাপের ছেলেদের বলিউডে যে হাল হয়। অভিষেক বচ্চন হারিয়ে গিয়েছেন তুলনাতেই।

যদি পিছন ফিরে যুবা, ধুম সিরিজ, সরকার, গুরু, সরকার রাজ, দোস্তানা, পা, রাবন-এর মতো সিনেমাগুলো দেখা যায় তাহলে বোঝা যায় অভিষেক বচ্চন সত্যিই বড় মাপের অভিনেতা। হ্যাঁ নায়িকার সঙ্গে নেচে-গেয়ে নায়ক নাই বা হওয়া হল। তিনি যে অভিনয়ে বাজিমাত করতে পারেন তা তিনি এই যে সিনেমার নামের তালিকা দিলাম তাতেই প্রমান করে দিয়েছিলেন অনেক আগে, তা সে কেউ মেনে নিক আর না নিক।

এরকম ফেমাস বাবাদের ছেলেদের সব সময়ই শুনতে হবে ‘‘বাবা হলে এটা এমন হত।’’ আদৌ হত কিনা তা কে জানে। তবে এই মুহূর্তে হঠাৎ করে কেন অভিষেক বচ্চনকে নিয়ে পড়লাম এ বার সেটা বলি।

১০ জুলাই অ্যামাজন প্রাইমে রিলিজ হয়েছে ১২ এপিসোডের সিরিজ ‘ব্রিদ: ইনটু দ্য শ্যাডোস (Breathe: Into the Shadows)’। ছবিটি একটি ক্রাইম থ্রিলাম। একজন স্প্লিট পার্সনালিটির গল্প। এক কথায় ছবিটি অভিষেকের। তিনি একাই টেনে নিয়ে গেলেন ১২টি এপিসোড।

ছবির গল্প ও অসাধারণ পরিচালনার জন্য মায়াঙ্ক শর্মাকে ধন্যবাদ। টানটান প্রতিটি মুহূর্ত ছেড়ে ওঠা যায় না। অসাধারণ গল্প আর মেকিংয়ের ক্ষমতায়। সঙ্গে অভিষেকর অনবদ্য অভিনয়। অভিষেকের অভিব্যাক্তি নিয়ে সব সময়ই নানা প্রশ্ন উঠেছে। যাঁরা তুলেছেন তাঁদের বলব এই সিরিজটি দেখুন। পাশাপাশি দুটো চরিত্রে বদলে যাওয়া অভিষেকের অভিব্যক্তি বাড়তি পাওনা।

ছোটবেলায় এক দুর্ঘটনায় বাবা-মাকে হারিয়ে অনাথ হওয়া অবিনাশ পৌঁছে গিয়েছিলেন নৈনিতালের এক বোর্ডিং স্কুলে। দুর্ঘটানর দিন থেকেই জেগে ওঠে অবিনাশের মধ্যে ঘুমিয়ে থাকা চরিত্র ‘জে’। আর বোডিং স্কুলে সেই ‘জে’কেই অবিনাশের জীবনের মুখ্য চরিত্র করে তোলেন প্রিন্সিপাল। অবিনাশকে বাঁচাতে জে-র উপর দায়িত্ব দেন তিনি। সেই থেকে শক্তিশালী হয়ে ওঠে যে।

এই বোডিং স্কুলের সময় পর পর অবিনাশের সঙ্গে বেশ কিছু নেগেটিভ ঘটনা ঘটতে থাকা। বান্ধবীর প্ররোচনায় তাঁকে ছেলেদের হস্টেলে নিয়ে গিয়ে ধরা পড়ে যাওয়া এবং বান্ধবীর সব দোষ অবিনাশের উপর চাপিয়ে দেওয়া। প্রিয় বন্ধুর আগুনে পুড়ে মৃত্যু হস্টেলের মধ্যে অন্য এক ছাত্রের কারণে, প্রিয় কুকুরে গাড়ি চাপা পড়া, সব অবিনাশের মধ্য জে-কে বাঁচিয়ে তোলে ক্রমশ। আর সেখান থেকেই শুরু হয় বদলা নেওয়ার পালা।

মনোরোগ বিশেষজ্ঞ অবিনাশ সাবারওয়াল (অভিষেক বচ্চন) নিজের মেয়েকেই কিডন্যাপ করেন এবং স্ত্রী আভা (নিথ্য মেনন)-র সঙ্গে মিলে সেই মানুষগুলোকে খুন করতে শুরু করেন।

জেল থেকে ছাড়া পেয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরেন মুম্বই ক্রাইম ব্রাঞ্চের অফিসার কবির সাবন্ত (অমিত সাধ)। এক ক্রিমিনালের হাত থেকে একটি মেয়েকে বাঁচাতে গিয়ে ভুল বশত তিনি সেই মেয়েটিকে উপর থেকে নিচে ফেলে দেন। পঙ্গু হয়ে যায় গায়েত্রী মিশ্রা (রেশম শ্রীবর্ধন)। পাশাপাশি চলতে থাকে এই দু’জনের অন্য লড়াইয়ের কাহিনিও।

এর মধ্যেই জে-র আলাপ হয় দেহ ব্যবসায়ী শার্লির (সাইয়ামি খের) সঙ্গে। জে তো এতদিন কিছু পায়নি যা পেয়েছে সব অবিনাশ। তাঁর স্ত্রী আছে, কন্যা আছে। জে শুধু অবিনাশকে বাঁচিয়ে চলেছেন। সেখান থেকেই শার্লিকে ভালো লাগতে শুরু করে তাঁর। ততদিনে মুম্বই থেকে দিল্লি ক্রাইম ব্রাঞ্চে এসে এই খুনের মামলার দায়িত্ব নিয়েছেন কবির সাবন্ত। কিন্তু কী করে ধরবে খুনি কে? খুনি তো পুলিশের কাছের মানুষ, ক্রিমিনালকে ধরতে তাঁর মনস্তাত্বিক অভিজ্ঞতার সাহায্য নেয় পুলিশ। এই কেসেও তাই নিয়েছে। নিজের কেসকে কী করে সামলাচ্ছেন অবিনাশ?

ব্রিদ: ইনটু দ্য শ্যাডোস -এর প্রত্যেকটি চরিত্র যাঁর যাঁর জায়গায় অনবদ্য। অবিনাশের স্ত্রীর চরিত্রে আভা অসাধারণ। পুলিশ অফিসার কবির সাবন্ত যেন অমিতের জন্যই তৈরি হয়েছিল। এর সঙ্গে ছোট ছোট, টুকরো টুকরো একগুচ্ছ চরিত্র এই কাহিনিকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে।

(বিনোদন জগতের আরও খবরের জন্য ক্লিক করুন এই লিঙ্ক)

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)