‘সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় বলেছিলেন, তুমি কি আমার গল্পই আমাকে শোনাচ্ছ’

সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়শুটিংয়ে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।

নবনীতা দাশগুপ্ত


সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, একাই কথা বলে যাচ্ছেন। না ঠিক বলে যাচ্ছেন না, মাত্র পাঁচটি শব্দই শোনা যাবে তাঁর গলায়। চারদিক থেকে ভেসে আসবে আরও অনেক শব্দ। কিন্তু কে বলছেন? না তা দেখার উপায় নেই। দেখা যাবে শুধু সৌমিত্রকেই। এমনই এক শর্ট ফিল্ম বানিয়ে ফেলেছেন মানস বসু।

মানস বসু, দেবব্রত সামন্ত, উত্তমকুমার দাস এবং জয়জিত বন্দ্যোপাধ্যায়। মানস পরিচালক, জয়জিত অভিনেতা আর বাকি দুজন ব্যবসায়ী। এই চারজন মিলে বানিয়ে ফেললেন একটি প্রযোজনা সংস্থা। নাম ‘ফ্যান্টাসম্যাগোরিয়া ফিল্মস’।

দুটি শর্ট ফিল্ম দিয়ে শুরু হচ্ছে ‘ফ্যান্টাসম্যাগোরিয়া ফিল্মস’-এর  নতুন পথ চলা। একটি হল মানস বসু পরিচালিত ‘অরোরা বোরিয়ালিস’। এই ছবিতে একক অভিনয় করবেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। অন্যটির নাম ঠিক হয়নি এখনও। পরিচালক জয়জিত বন্দ্যোপাধ্যায়। সাহেব ভট্টাচার্য এবং ঋদ্ধিমা ঘোষকে নিয়ে ১০-১২ মিনিটের সময় সীমায় তৈরি হবে এই ছবি। চরিত্র দুটির নাম সৌমি আর সমরেন্দ্র। ১১ অগস্ট একদিনেই শুটিং সারবেন জয়জিত। শুটিং হবে কলকাতার রাস্তায়। ফেস্টিভ্যালে পাঠানোর ইচ্ছা আছে ছবিটিকে। তারপর কোনও ওয়েব চ্যানেলে দেখানো হবে ছবিটি।

পরিচালক মানস বসু।

প্রথম ছবির কাজ ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে নতুন এই প্রযোজনা সংস্থা। গত ১৬ জুলাই মানস বসু শেষ করলেন ‘অরোরা বোরিয়ালিস’-এর শুটিং। সব মিলিয়ে ২২ মিনিটের এই ছবিতে ঠিক পাঁচটি শব্দ বলবেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। আছে আরও অনেক চরিত্রের আনাগোনা। কিন্তু তাদের দেখা যাবে না ছবিতে। শুধুই সংলাপ শোনা যাবে তাদের।

এমন সোনার পাহাড়ই তো সবাই চায়

গল্পটা অনেকটা এ রকম, মূল চরিত্র রাতুল একজন বিখ্যাত অভিনেতা। আজ বয়স হয়েছে। কাজ পেলেও পারিশ্রমিক হাতে আসে না সময় মতো। গল্পটা মানস বসুর মুখে শোনার পর সৌমিত্রর প্রশ্ন ছিল, ‘‘তুমি কি আমার গল্পই আমাকে শোনাচ্ছ?’ মানস উত্তর ছিল, “না ঠিক তা নয়। তবে মানুষ ছবিটা দেখলে আপনাকে খুঁজবেন। এক বর্ষীয়ান অভিনেতার গল্প। যার সঙ্গে আপনার জীবনের মিল আছে, আবার নেই। এটাই চমক ছবির।“

রাজি হয়ে যান সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। পাঁচ ঘণ্টায় সেরে ফেললেন শুটিং। এই ছবিটিকেও  ফেস্টিভ্যালে পাঠানোর ইচ্ছে আছে মানস বসুর। আরও একটি ছবির কথা ভেবে রেখেছেন তিনি। যেখানে থাকবে তিন বন্ধুর গল্প। সেই ছবিতে অভিনয়ে দেখা গেলেও যেতে পারে মানস বসুর অন্তরঙ্গ বন্ধু জয়জিত বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তবে, তাড়াহুড়ো করে কাজ করতে নারাজ তিনি। মানস বলেন, “আমি কোনও কাজ নিয়ে তাড়াহুড়ো করি না। বেশি ছবি বানানোর ইঁদুর দৌড়েও আমি নেই। তাই আমি কমই কাজ করি।’’