কলকাতায় তরুণীর শ্লীলতাহানি, আটকাতে যাওয়া মহিলার পা পিষে দিল‌ গাড়ি

কলকাতায় তরুণীর শ্লীলতাহানিনীলাঞ্জনা চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর স্বামী।

জাস্ট দুনিয়া ব্যুরো: কলকাতায় তরুণীর শ্লীলতাহানি এবং সেই ঘটনা করোনা আবহের মধ্যেই তুলে দিল রাতের শহরে মেয়েদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন। যখন গোটা দেশ বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গল করোনাভাইরাসের সঙ্গে লড়াইয়ে ব্যস্ত তার মধ্যে রাতের শহরে শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটে গেল। সেই শ্লীলতাহানি আটকাতে গিয়ে হাসপাতালে পৌঁছে গেলেন এক মহিলা। তবে এই কলকাতা শহরই একই সঙ্গে উদাহরণ দিয়ে গেল দুই মানসিকতার। রাতের অন্ধকারে এক মহিলাকে বড় ক্ষতির হাত থেকে বাঁচাতে নিজের প্রানের পরোয়া করলেন না আর এক মহিলা।

শনিবার রাতে মায়ের জন্মদিন পালন করে কালিকাপুরে নিজের বাড়িতে ফিরছিলেন নীলাঞ্জনা চট্টোপাধ্যায় তাঁর স্বামী ও তাঁদের কন্যা। রাস্তায় যখন তাঁরা বাড়ির দিকে ফিরছেন তখন তাঁদের পিছন পিছন আসা একটি গাড়ি থেকে একটি মেয়ের আর্তনাদ শুনতে পান তাঁরা। মেয়ে টি বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করছিলেন।

নীলাঞ্জনা ভয় না পেয়ে স্বামীকে বলেন গাড়িটির রাস্তা আটকাতে। দ্বিতীয়বার ভাবেননি তাঁর স্বামীও। নিজের গাড়ি দাঁড় করিয়ে সেই হন্ডাসিটি গাড়ির রাস্তা আটকান তিনি। গাড়ি দাঁড়াতেই নেমে পড়েন নিলাঞ্জনা। একজন মহিলাকে তাঁদের গাড়ির দিকে এগোতে দেখে ভয় পেয়ে যায় গাড়ির ভিতর থাকা বাকিরা।  মেয়েটিকে রাস্তায় ছুঁড়ে ফেলে গাড়ি নিয়ে পালানোর সময় নীলাঞ্জনার পায়ের উপর দিয়ে গাড়িয়ে চালিয়ে দেয় তারা।

তখন রাত ১২ টা। এখানেই শেষ ন‌য়। যখন এটা নিয়ে গর্ব করার কথা গোটা শহরের যে এখনও এমন মানুষ বেঁচে রয়েছেন এখানে। যাঁরা অচেনা মানুষের সাহায্যে নিজের প্রানেরও কথা ভাবেন না। তখন নীলাঞ্জনার স্বামী দেখলেন, যে স্ত্রী একটি মেয়েকে বাঁচালেন তাঁকে বাঁচাতে একটিও অ্যাম্বুলেন্স পেলেন না রুবি হাসপাতালে ফোন করে। তকড় তিনি ফোন করেন ১০০ নম্বরে। কিছুক্ষণের মধ্যেই পৌঁছে যায় কসবা ট্র্যাফিক গার্ডের এক সার্জেন্ট। তিনিই পুলিশের ট্রমা কেয়ার অ্যাম্বুলেন্সে নীলাঞ্জনাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন।

পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নীলাঞ্জনার স্বামী। আনন্দপুর থানার এলাকা হওয়ায় স্থানীয় পুলিশ ঘটনাস্থলে হাজির হলে পুলিশকে দুটো আলাদা মমলা করতে বলেন তিনি। তিনি খুনের মামলা করার কথা বলেন। কিন্তু পুলিশ তাতে রাজি হয়নি বরং শ্লীলতাহানি হওয়া তরুণীর বয়ানের ভিত্তিতেই মামলা রুজু করা হয়। এদিকে নীলাঞ্জনার পায়ের সিনবোন দু’টুকরো হয়ে গিয়েছে। মাথায় সেলাই পড়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, তরুণীকে জামা-কাপড় ছেড়া অবস্থায় পাওয়া যায়। জানা গিয়েছে তিনি জলপাইগুড়ি থেকে এসে কলকাতায় একটি ব্যাঙ্কে চাকরী করছিলেন। পরিচিত এক যুবকের সঙ্গেই বেরিয়েছিলেন। সেই যুবকই তাঁর শ্লীলতাহানি করে, যার নাম অমিতাভ। তাঁর খোঁজ করছে পুলিশ।

(বাংলার আরও খবর জানতে ক্লিক করুন এই লিঙ্কে)

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)