কলকাতা শহরের যান চলাচল: খাঁ খাঁ স্টেশন, বাসে বাদুড়ঝোলা ভিড়

কলকাতা শহরের যান চলাচল

জাস্ট দুনিয়া ব্যুরো: কলকাতা শহরের যান চলাচল গত এক বছরে বার বার থমকে গিয়েছে। করোনা আবহের মধ্যে রুটি-রুজির জন্য প্রতিদিন রাস্তায় বেরনো মানুষগুলোকে বার বার গৃহবন্দি হতে হয়েছে। গত বছরটা দীর্ঘদিন বন্ধ থেকেছে লোকালট্রেন। শহর ও শহরতলীর এক কথায় লাইফ লাইন। কিন্তু কোভিড থেকে বাঁচতে সেই সময় লোকাল ট্রেন বন্ধ হওয়াটা খুবই দরকার ছিল। যেখানে কোনওভাবেই সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিং মেনে চলা সম্ভব ছিল না। সেই ভিড়ে ঠাসাঠাসি অবস্থা। আর দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার পর গোটা দেশ রীতিমতো দিশেহারা। কী ভাবে সামলানো যাবে সেই রাস্তাই খুঁজে চলেছে প্রশাসন।

ভোট পরবর্তী সময়ে তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী হয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলায় সবার আগে হাল ধরতে চেয়েছেন কোভিড পরিস্থিতির যা ততদিনে খুব খারাপ জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে। আর সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিং রক্ষা করতে সবার আগে লোকাল ট্রেন বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আরও একটা বিষয় রয়েছে, লোকাল ট্রেন চালু হওয়ার পর শিয়ালদহ ও হাওড়া শাখায় প্রচুর রেলকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। যে কারণে ট্রেন বন্ধ করা বাধ্যতামূলক ছিল।

তা বলে কি সমস্যা মিটেছে?

বরং দেখা গিয়েছে অন্য সমস্যা। ট্রেন না চললেও রাস্তায় বাস, অটো, ট্যাক্সি চলছে। তবে বাসের সংখ্যা ৫০ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। কিন্তু যতক্ষণ না পুরোপুরি বন্ধ হবে ততক্ষণ মানুষ রুটি-রুজির সন্ধানে রাস্তায় বেরবেই। আর তার ফলে দেখা দিয়েছে এক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি। বাসগুলোতে বাদুড়ঝোলা ভিড়। সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিংয়ের দফারফা। এতে যে কোভিড-১৯ সংক্রমণ বাড়বে তা স্বাভাবিক। এর প্রতিকার কী, তা এখনও জানা যায়নি।

শহরের দু’প্রান্তে এখন দুই দৃশ্য। পৃথিবী বিখ্যাত শিয়ালদহ ও হাওড়া স্টেশনের ভিড়। সারাক্ষণ ভিড়ে ঠাসা থাকে এই দুই স্টেশন। এখানে সবাই সারাক্ষণ দৌঁড়য়। কেউ ট্রেন থেকে নেমে অফিসের পথে দৌঁড়চ্ছে তো কেউ অফিস থেকে বাড়ি ফেরার পথে দৌঁড়চ্ছে। কিন্তু এখন সব বন্ধ। রীতিমতো খাঁ খাঁ করছে দুই স্টেশন। বন্ধ স্টেশনের স্টলগুলো। যা প্রচুর মানুষের একমাত্র রোজগার। এই স্টেশন থেকে বেরিয়ে বাস স্ট্যান্ডে পৌঁছলেই দৃশ্যটা পুরো অন্য।

ভিড় থিক থিক করছে। অনেক পড়ে পড়ে বাস এসে দাঁড়াচ্ছে তাতেই ওঠার জন্য ধাক্কাধাক্কি। যাঁরা উঠতে পারলেন না তাঁদের পরের বাসের অপেক্ষা। ততক্ষণে আবার ভিড় জমে গিয়েছে বাস স্ট্যান্ডে। না সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিং মানা সম্ভব হচ্ছে না। যতদিন না অফিসগুলো বন্ধ হবে। মুখ্যমন্ত্রী প্রাইভেট সেক্টরকে অনুরোধ জানিয়েছিল রোটেশনে ৫০ শতাংশ বা তার কম কর্মী নিয়ে কাজ চালাতে। সরকারি অফিসগুলোতে সেই সার্কুলার জারি হয়ে গিয়েছে প্রথম দিনই। কিন্তু প্রাইভেট সেক্টর সেটা না করলে এই সমস্যা চলবেই।

পুরোপুরি লকডাউন এখন কেউ চাইছে না। গত বছরটা ভয়ঙ্কর গিয়েছে। আর সেই পরিস্থিতি আসুক চায় না কেউ কিন্তু তার জন্য নিয়মটা মানতে হবে। তবে সুরাহা হবে। কোভিড সংক্রমণ কমবে যার ইঙ্গিত এখনও পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে না।

(প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে)

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)