বিশ্বভারতীর সমাবর্তন অনুষ্ঠান নিয়ে তোলপাড় দেশ, রাজ্য, প্রধানমন্ত্রীর দফতর

বিশ্বভারতীর সমাবর্তন অনুষ্ঠানবিশ্বভারতীর সমাবর্তন অনুষ্ঠান

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: বিশ্বভারতীর সমাবর্তন অনুষ্ঠান এবং তার নিরাপত্তা বলয় পেরিয়ে কী ভাবে প্রধানমন্ত্রী তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য নরেন্দ্র মোদীর কাছে পৌঁছেছিল আগন্তুক? সেই ঘটনায় নড়েচড়ে বসল প্রধানমন্ত্রীর দফতর।

সূত্রের খবর, কী ভাবে এই ঘটনা ঘটল, সে ব্যাপারে শো কজ নোটিস ধরানো হয়েছে এসপিজি-কে। অন্তর্তদন্তের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

শুক্রবার সমাবর্তন অনুষ্ঠান শেষে নিরাপত্তার বেড়াজাল ডিঙিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে চলে গিয়েছিলেন এক ব্যাক্তি। পরে জানা যায় তাঁর নাম স্বপন মাঝি। তিনি ভদ্রেশ্বরের বাসিন্দা। মঞ্চেই মোদীকে প্রণাম করে রবীন্দ্রনাথের একটি ছবিও উপহার দেন। তিনি কী ভাবে মঞ্চ অবধি পৌঁছলেন? প্রশ্ন উঠছে তা নিয়েই।

পাশাপাশি বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে বিশৃঙ্খলা ঘিরেও বিভিন্ন প্রশ্ন উঠেছে। হাতাহাতি থেকে শুরু করে বেদ-গানের সময় সিটি দেওয়া, জয় শ্রীরাম ধ্বনি, বিক্ষোভ, এ সব নিয়েও সমালোচনার মুখে পড়েছে বিশ্বভারতী। তবে এ সব ঘটনায় ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সবুজকলি সেনও বিরক্ত।
নরেন্দ্র মোদীও রয়েছে‌ন অভিযোগের তিরে। সমাবর্তনের অনুষ্ঠানকে তিনি রাজনৈতিক প্রচারের মঞ্চে পরিণত করেছিলেন বলে অভিযোগ।

বিশ্বভারতী সূত্রের খবর, বিজেপির নেতা-নেত্রীদের জন্য প্রায় দেড়শো আমন্ত্রণপত্র দেওয়া হয়েছিল। আচার্যের ভাষণের সময় তাঁরাই চিৎকার করেন।
বিশ্বভারতীর অব্যবস্থায় ক্ষুব্ধ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। জলের অব্যবস্থা, বিক্ষোভ, নিরাপত্তা ভেঙে মঞ্চে যুবকের উঠে আসা— সব মিলিয়ে গত কালের অনুষ্ঠানে যে চরম বিশৃঙ্খলার ছবিটি ফুটে উঠেছে, তাতে ক্ষুব্ধ প্রধানমন্ত্রীর দফতর বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের কাছে। অভ্যন্তরীণ তদন্ত শুরু করেছেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।

প্রচণ্ড গরমে এবং জলের অভাবে গত কাল সমাবর্তন অনুষ্ঠানে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন বেশ কিছু ছাত্রছাত্রী। ধৈর্য হারিয়ে বিক্ষোভ দেখান অনেকে। বিশ্বভারতী এমন একটি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, যার আচার্য খোদ প্রধানমন্ত্রী। তাই গত কালের অব্যবস্থার জন্য ব্যক্তিগত ভাবে ক্ষমা চেয়ে নেন খোদ প্রধানমন্ত্রীই। বিষয়টি মোটেই ভাল ভাবে নেয়নি প্রধানমন্ত্রীর দফতর। তাই বিশৃঙ্খলার কারণ খতিয়ে দেখার জন্য মন্ত্রকের উচ্চ শিক্ষা দফতরের সচিব আর সুব্রহ্মণ্যমের কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দফতর। মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক সূত্র জানায়, অব্যবস্থার কারণ খুঁজতে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছেন মন্ত্রক কর্তারা।

ডায়াবেটিস আসলে নিঃশব্দ খুনি, কিন্তু পরিশীলিত জীবনযাপনই পারে তাকে ঠেকাতে

বিশ্বভারতী.র যুক্তি, দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে সমাবর্তন না হওয়ায় গত কাল প্রায় ৭ হাজার স্নাতক উপস্থিত ছিলেন। নিরাপত্তার কারণে অনুষ্ঠান শুরুর বেশ কিছু ক্ষণ আগে ছাত্রছাত্রী, এবং অভ্যাগতদের অনুষ্ঠান স্থলে পৌঁছে আসন নিতে হয়। এক দিকে চড়া গরম, অন্য দিকে নিরাপত্তার কারণে অনুষ্ঠান স্থলে জলের বোতল নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেয়নি প্রধানমন্ত্রীর এসপিজি। বসানো যায়নি জলের ট্যাঙ্কারও। পরিস্থিতি সামলাতে প্রায় ছয় হাজার জলের পাউচের ব্যবস্থা করেছিলেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা যায়, তা প্রয়োজনের তুলনায় বহু কম। ফলে জল নিয়ে রীতিমতো কাড়াকাড়ির কারণে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়।