বিশ্বভারতীতে ধুন্ধুমার, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত, মমতা বললেন…

বিশ্বভারতীতে ধুন্ধুমার

জাস্ট দুনিয়া ব্যুরো: বিশ্বভারতীতে ধুন্ধুমার বাঁধল পৌষমেলার মাঠে পাঁচিল দেওয়াকে কেন্দ্র করে। তার জেরে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। সেই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেওয়া হয় কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকে। তবে মন্ত্রক এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেনি বা বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফেও কোনও বিবৃতি প্রকাশ করা হয়নি।

সোমবার সকাল ১০টা নাগাদ স্থানীয় বাসিন্দা, পড়ুয়া, ব্যবসায়ী সংগঠন এবং মানবাধিকার সংগঠনের হাজারখানেক মানুষ পৌষমেলার মাঠে হাজির হয়ে পাঁচিলের কাজ বন্ধ করে দেন। ভেঙে দেন নতুন নির্মাণ। শ্রমিকদের সরিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয় কাজ। উত্তেজিত জনতার একটি বড় অংশ নির্মাণ সামগ্রী লন্ডভন্ড করে দেন। তার পর এলোপাথাড়ি ভাঙচুর চালানো হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পে। তার মধ্যেই নির্মাণের জন্য আনা জেসিবি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গেট ভেঙে দেওয়া হয়।


বাংলার আরও খবর জানতে ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

এর পরেই বিষয়টি নিয়ে টুইট করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথাও বলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীও সেই ফোনের কথা স্বীকার করেছেন।

এ দিন নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘রাজ্যপালের কাছ থেকে ফোন পেয়ে আমি এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়েছি। জেলাশাসককে বলেছি, উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলে সব পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে।’’ পাশাপাশি তিনি বলেন, রবীন্দ্রনাথ বিশ্বভারতী তৈরিই করেছিলেন খোলা পরিবেশে পড়ুয়ারা যাতে পড়াশোনা করতে পারে। সেই ঐতিহ্য ভুলে গেলে চলবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘সব নির্মাণ কিন্তু সৌন্দর্য বাড়ায় না।’’

পৌষমেলার মাঠে পাঁচিল দেওয়ার সিদ্ধান্তে অখুশি আশ্রমিক সুপ্রিয় ঠাকুর। আবার বিশ্বভারতীতে ধুন্ধুমার নিয়েও তিনি চিন্তিত। তিনি বলেন, ‘‘নিরাপত্তার জন্য অনেক জায়গায় পাঁচিল দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু, পৌষমেলার মাঠ কেন পাঁচিল দিয়ে ঘেরা হচ্ছে বুঝতে পারছি না। আমি এটা সমর্থন করি না। সারা বিশ্বভারতীতে রবীন্দ্র আদর্শ বিরোধী কাজকর্ম চলেছে৷ এখন কোথায় রবীন্দ্র আদর্শ অনুযায়ী কাজ হচ্ছে? কোথাও হচ্ছে না৷ রবীন্দ্র আদর্শের কথা না বলাই ভাল৷’’

সম্প্রতি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ পৌষমেলার মাঠে পাঁচিল দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। সেই অনুযায়ী শনিবার পাঁচিলের কাজ শুরু হয়। রবিবারও কাজ চলে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী-সহ আরও অনেকে। এ বিষয়ে পুলিশের কাছে এফআইআর দায়ের করে একটি মানবাধিকার সংগঠন। করোনা পরিস্থিতিতে কী ভাবে এত লোক নিয়ে মাঠে গেলেন উপাচার্য, এফআইআরে সে প্রশ্নও তোলা হয়।

এর পর সোমবার কাজ শুরু হতেই হাজারখানেক মানুষ সকাল ১০টা নাগাদ মেলার মাঠে হাজির হয়ে কাজ বন্ধ করে দেন। যেটুকু কাজ হয়েছে, তার সবটাই ভেঙেচুরে দেওয়া হয়। পুলিশ যদিও সে সময় ক্ষটনাস্থলে যায়নি বলে অভিযোগ। তবে পুলিশের দাবি, এই ঘটনায় জড়িত থাকা সন্দেহে ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।


(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)