মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবার থেকে কেউ মুখ্যমন্ত্রী হতে আগ্রহী নন: কল্যাণ

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবার

জাস্ট দুনিয়া ব্যুরো: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবার থেকে কেউ মুখ্যমন্ত্রী হতে আগ্রহী নন বলে শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে দাবি করলেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ মেদিনীপুরের জনসভা থেকে মমতার উদ্দেশে একাধিক তোপ দাগেন। ছুড়ে দেন কটাক্ষও। অমিতের সভা থেকে নাম না করে তৃণমূল নেতৃত্বের বিরুদ্ধে হুঙ্কার দেন সদ্য দল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়া শুভেন্দু অধিকারীও। এ দিন বিকেলে তৃণণূল ভবন থেকে সে সবেরই জবাব দিয়েছেন কল্যাণ।

এ দিন অমিত তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে রাজ্যে কর্মসংস্থান হয়নি বলে অভিযোগ তোলেন। তাঁর কথায়, ‘‘মমতা দিদি ১০ কোটি বাঙালির ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবেন না। কোটি কোটি যুবকের ভবিষ্যতও তিনি দেখতে পান না । তাঁর কাছে তার ভাইপোই সব কিছু। তিনি সব সময় ভাবেন, ভাইপোকে কী ভাবে মুখ্যমন্ত্রী বানাবেন।’’ কল্যাণ তার পাল্টায় বলেন: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবার থেকে কেউ মুখ্যমন্ত্রী হতে আগ্রহী নন। এ নিয়ে অপপ্রচার করা হচ্ছে। বিজেপি এই প্রচার করছে। অমিত শাহের লজ্জা পাওয়া উচিত। বাংলার মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুখ্যমন্ত্রী করেছেন। অন্য কেউ নন।


(বাংলার আরও খবর জানতে ক্লিক করুন এই লিঙ্কে)

অমিতের জবাব দিতে গিয়ে তিনি ‘অধিকারী পরিবারতন্ত্র’ নিয়ে পাল্টা প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, ‘‘অধিকারী পরিবারতন্ত্রের কি বিশ্বাসযোগ্যতা আছে?’’ শুভেন্দু বিজেপি-তে যোগ দিলেও তাঁর বাবা শিশির অধিকারী এবং ভাই দিব্যেন্দু অধিকারী এখনও তৃণমূলের লোকসভা সাংসদ। আর এক ভাই সৌমেন্দুও তৃণমূলেই রয়েছেন। তিনি কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যান। শিশির আবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের সভাপতি। মেদিনীপুরের সভায় শুভেন্দু মন্তব্য করেছিলেন, ‘তৃণমূল পচে গিয়েছে’। কল্যাণের পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘তৃণমূল পচে গিয়েছে তো এত দিন ছিলেন কেন?’’

এ দিন শুভেন্দুই তৃণমূলের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি আক্রমমাত্মক ছিলেন। নিজের বক্তব্যের একেবারে শেষে তিনি স্লোগান তোলেন, ‘তোলাবাজ ভাইপো হঠাও’। কল্যাণ শুভেন্দুকে সরাসরি আক্রমণ করে বলেছেন, ‘‘আপনি কাপুরুষ, তাই ভাইপোর নাম নেননি। বুকের পাটা থাকলে নাম নিয়ে দেখান।’’ ১৯৯৮ সালে দলগঠনের সময়েও শুভেন্দু ছিলেন না বলে দাবি করেন কল্যাণ। তাঁর কথায়, ‘‘সম্মান পাননি? তিনটি দফতর, ৫-৬টি জেলার পর্যবেক্ষক। এ বার কি মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ার চান? ক্ষুদিরাম বিদ্যাসাগর, মাতঙ্গিনীর দেশে এমন আদর্শহীন মানুষ আগে জন্মায়নি।’’

অমিতের উদ্দেশে কল্যাণের খোঁচা, ‘‘যিনি বলেছেন, তিন অঙ্কে পৌঁছাবে না। বলছি, ৫০ আসন পেরোবে না বিজেপি। ২১০ নিয়ে ফের মুখ্যমন্ত্রী হবেন মমতা। বঙ্গ বিজেপি ক্ষেপা ষাঁড়ের মতো ঘুরছে। তাদের মধ্যে আজ আরও কিছু ভিড়েছেন।‌’’

কল্যাণ এ দিন শুভেন্দুকে ফের তাঁর পুরনো বিধানসভা কেন্দ্র নন্দীগ্রামে দাঁড়ানোর চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন। তিনি বলেন ‘‘২০১৬ সালে নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়ে মমতা বলেছেন, ২৯৪ আসনে আমি প্রার্থী। নন্দীগ্রামেও বলেছিলেন। সে দিনও শুভেন্দু বলেননি, ‘দিদি আপনি না আমিই প্রার্থী’। ৩০টা সিআইএসএফ আর কনভয় নিয়ে আপনি যেন ফের নন্দীগ্রামেই দাঁড়ান। সিটটা আবার বদল করবেন না।’’

মেদিনীপুরের সভায় বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার পর অমিতের পায়ে হাত দিয়ে শুভেন্দুকে প্রণাম করতে দেখা গিয়েছে। সে প্রসঙ্গে কল্যাণের কটাক্ষ, ‘‘যে প্রণামটা অমিত শাহকে শুভেন্দু করেছেন, সেটা ১০ বছর ধরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে করেছেন।’’


(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)