বাজেট পড়লেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, ভোটের আগে যেন ‘কল্পতরু’ মুখ্যমন্ত্রী

মমতার শপথে আমন্ত্রিতদের তালিকা

জাস্ট দুনিয়া ব্যুরো: বাজেট পড়লেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ১৯৮২ সালের পর এই প্রথম কেউ বিধানসভায় বাজেট পড়লেন। বিধানসভা নির্বাচনের আগে এ বারের বাজেটে মমতা যেন একেবারে ‘কল্পতরু’। তবে শুক্রবার তিনি যখন বাজেট পড়ছেন, অধিবেশন বয়কট করে তত ক্ষণে বেরিয়ে গিয়েছেন বাম, বিজেপি এবং কংগ্রেস বিধায়করা।

অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র অসুস্থ। সে কারণে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের অনুমতি নিয়েই এ দিন বাজেট পড়েন মুখ্যমন্ত্রী। ভোটের আগে চার মাসের ‘ভোট অন অ্যাকাউন্ট’-এ কৃষি, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য খাতে বিপুল অর্থ বরাদ্দ করেছেন তিনি। বাজেটে যেমন পার্শ্বশিক্ষকদের বেতন ৩ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী, তেমনই তফসিলি জাতি ও জনজাতিদের জন্য স্কুল তৈরির কথাও বলেছেন।


আরও খবর জানতে ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

শহরে উড়ালপুল এবং গ্রামাঞ্চলে রাস্তা তৈরিতে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। শহর কলকাতায় বেশ কয়েকটি উড়ালপুলের প্রস্তাব রয়েছে বাজেটে। গ্রামীণ এলাকায় ৪৬ হাজার কিলোমিটার নতুন রাস্তা তৈরি হবে বলে বাজেটে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সংস্কার করা হবে ১০ হাজার কিলোমিটার রাস্তা।

এ দিন বাজেট বক্তৃতার শুরুতেই তুমুল বিশৃঙ্খলা শুরু হয় বিধানসভায়। বিজেপি বিধায়করা তুমুল হই-হট্টগোল শুরু করেন। ওয়েলে নেমেও বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। স্পিকার বার বার আর্জি জানানোর পরেও তাঁদের দমানো যায়নি। পরে বিধানসভা থেকে ওয়াকআউট করেন বিজেপি বিধায়করা। অন্য দিকে বামেরা আগেই বাজেট বয়কট করেছিলেন। ফলে বিরোধীশূন্য বিধানসভাতেই বাজেট পেশ করেন মমতা।

বাজেটে বলা হয়েছে, গত ১০ বছরে ৪ লক্ষের বেশি শূন্যপদে নিয়োগ হয়েছে। আগামী ৩ বছরে বিভিন্ন বিভাগে শূন্যপদগুলিতে নিয়োগ হবে। বিগত ১০ বছরে ১০০ দিনের কাজে ৭.২৪ কোটি গ্রামের মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। পর্যটন শিল্পে ১০ হাজার থেকে ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ, বরাদ্দ ১০ কোটি টাকা।

বালুরঘাট, মালদহ, কোচবিহার থেকে বিমান চলাচলে ৫০ কোটি বরাদ্দ। ডেউচা-পাঁচামিতে কাজ শুরু হবে খুব শীঘ্রই। সেখানে দক্ষ-অদক্ষ হাজার হাজার শ্রমিক কাজের সুযোগ পাবেন। জমি অধিগ্রহণে দাম ঠিক হলে বর্ধিত মূল্য এবং সরকারি চাকরি নিশ্চিত।

সেচের জন্য ১০০ কোটি বরাদ্দ, ব্যবসায়িক পরিবহণে ৩০ জুন পর্যন্ত কর মকুব। অন্ডাল বিমানবন্দরটিকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে গড়ে তোলা হবে, তার জন্য ১৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ।

তাজপুরে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মিত হবে। অশোকনগরে গ্যাস উত্তোলনের জন্যও বরাদ্দ।

বিনামূল্যে আবাসিক হিসেবে থেকে পড়াশোনা করা যাবে। তাঁদের অনুদানও দেওয়া হবে। ‘যুবশক্তি’ নামে নতুন প্রকল্পে যুবকদের ইন্টার্ন হিসেবে নেওয়া হবে। ইন্টার্নশিপ শেষ হলে চাকরি দেওয়া হবে।

রাজ্যে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প চালু হয়েছে। নগদ জমা ছাড়া সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা পাওয়া যাবে। এই প্রকল্প সারা বছর চলবে। প্রতি তিন বছর অন্তর রিনিউ করা যাবে। এর জন্য দেড় হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

দুয়ারে সরকার এবং পাড়ায় সমাধান বছরে দু’বার হবে। এটা শুধু এখনকার জন্য নয়, এই প্রকল্প প্রতি বছর দু’বার করে হবে। পরেও সেই ক্যাম্পে গিয়ে নাম লেখানো যাবে বা রিনিউ করা যাবে।

এ ছাড়া কৃষকবন্ধু প্রকল্পে একর পিছু অনুদান আগামি খারিফ মরসুমের জন্য় ৫০০০ থেকে বাড়িয়ে ৬০০০ টাকা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বাজেটে।


(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)