ইস্তফাপত্র দিলেন শোভন, মন্ত্রীর আবেদন মঞ্জুর করলেন ক্ষুব্ধ মমতা

ইস্তফাপত্র দিলেন শোভনইস্তফাপত্র দিলেন শোভন

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: ইস্তফাপত্র দিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। রাজ্যের দমকল এবং আবাসন মন্ত্রীর সেই ইস্তফাপত্র গ্রহণ করে নবান্ন তা পাঠিয়ে দিল রাজভবনে। গোটা ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিলেন, মেয়র পদ থেকেও যেন সরে দাঁড়ান তাঁর এক কালের ঘনিষ্ঠ পাত্র শোভন চট্টোপাধ্যায়।

ঘটনার সূত্রপাত বেশ কয়েক মাস আগেই। বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় নামে এক কলেজ শিক্ষিকার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে মেয়র তথা রাজ্যের মন্ত্রী শোভনের। তার পর ঘটনাচক্রে স্ত্রী রত্নার বিরুদ্ধে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা করেন তিনি। এর পর নিজের বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে এসে গড়িয়াহাটের কাছে একটি ফ্ল্যাটে একা থাকতে শুরু করেন মেয়র। ঘটনাপ্রবাহ যে দিকে যাচ্ছিল, তার সবটাই তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কানে যায়। তিনি বেশ কয়েক বার শোভনকে সতর্ক করেন। প্রকাশ্যে ধমকেওছেন বলে তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছিল।

মঙ্গলবার বিধানসভা অধিবেশন চলাকালীন ফের শোভনকে তাঁর কাজ নিয়ে সতর্ক করেন মুখ্যমন্ত্রী। কাজে ফাঁকি দিয়ে তিনি যে কী করছেন, সে বিষয়েও এ দিন দুপুরে শোভনের কাছে জানতে চান মমতা। এর পরেই দু’জনের মধ্যে একটু উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয় বলে একটি সূত্রের দাবি। মমতা তার পর নবান্নে চলে যান। সেখানে দমকলের একটি অনুষ্ঠানে মমতার সঙ্গে একই মঞ্চে দেখা যায় শোভনকেও।

কিন্তু সেই অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার কিছু ক্ষণ পরেই এ দিন বিকেলে মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়ের সচিব গৌতম সান্যালের কাছে নিজের ইস্তফাপত্র জমা দেন শোভন। তার পর আর পুরসভায় ফেরেননি তিনি।

এই সংক্রান্ত আরও খবর
○ শোভন-বৈশাখী একসঙ্গে আদালতে, কাটালেন ঘণ্টাখানেক, রত্না চাইলেন খোরপোষ
○ পদে রেখেও শোভনকে নির্বাচনের দায়িত্ব থেকে বাদ!
○ বৈশাখীকে ‘বন্ধু’ বলায় রে রে করে উঠলেন শোভনের ‘স্ত্রী’ রত্না

এর কিছু সময় পরেই মমতা নবান্নে হাজির সাংবাদিকদের জানান, শোভনের ইস্তফা গৃহীত হয়েছে। সেই ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে রাজভবনে রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর কাছে। তিনি আরও জানান, শোভনকে মেয়ররে পদ থেকেও ইস্তফা দিতে বলা হয়েছে। তাঁর জায়গায় আপাতত আবাসন এবং দমকল দফতরের মন্ত্রিত্ব পদে মমতা ফিরহাদ হাকিমকে নিয়ে এসেছেন। অন্য দিকে কলকাতা পুরসভা আপাতত সেখানকার পুরকমিশনার খলিল আহমেদ সামলাবেন।

ইস্তফাপত্র জমা দেওয়া বা তা গৃহীত হওয়া নিয়ে এ দিন শোভন চট্টোপাধ্যায় প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করেননি। তবে মমতা জানিয়েছেন, এর আগেও তিন চার বার মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ইস্তফাপত্র নমিয়ে এসেছিলেন শোভন। কোনও বারই তা গ্রহণ করেননি মমতা। তিনি বলেন, ‘‘এর আগেও চার পাঁচ বার ইস্তফা দিয়েছিল শোভন। কোনও বার নিইনি। এ বার নিয়ে ‌নিলাম।’’

মুখ্যমন্ত্রীর এই সব বক্তব্য থেকে একটা জিনিস স্পষ্ট, তিনি তাঁর প্রিয় কাননের (শোভনকে তিনি এই নামেই ডাকেন) উপর বেজায় চটেছেন।