বৈশাখীর অসম্মান মেনে নিতে পারছিলেন না বলেই ক্ষমতা ছেড়েছেন মন্ত্রী শোভন

বৈশাখীর অসম্মানবৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: বৈশাখীর অসম্মান মেনে নিতে পারেননি। বিপদের দিনে যিনি সবচেয়ে বেশি পাশে থেকেছেন, তাঁর সঙ্গে বেইমানি করতে পারবেন না। বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো শুভানুধ্যায়ীকে নিয়ে ‘অহেতুক’ আলোচনাতে বিরক্ত হয়েই মন্ত্রিত্ব ছেড়েছেন বলে জানিয়ে দিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়।

মঙ্গলবারই নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়ে চিঠি দিয়ে আবাসন এবং দমকল দফতরের দায়িত্ব থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন শোভন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই ইস্তফাপত্র গ্রহণ করে রাজভবনে পাঠিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন। পাশাপাশি, মেয়র পদ থেকেই শোভনকে ইস্তফা দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছিলেন। কিন্তু বুধবার সারা দিন ধরে নতুন মেয়র কে হবেন তা নিয়ে জল্পনা চললেও মেয়র পদ থেকে ইস্তফা দেননি শোভন।

এ দিন সন্ধ্যায় তিনি একটি টেলিভিশন চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দেন। সেখানে শোভন জানান, কবে ইস্তফা দেবেন, তা কয়েক দিনের মধ্যেই জানা যাবে। তাঁর মন্তব্য, ‘‘যে ভাবে আমার মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফার খবর জেনেছিলেন, সে ভাবে মেয়র পদ থেকে ইস্তপার খবরও পেয়ে যাবেন।’’

ইস্তফাপত্র দিলেন শোভন, মন্ত্রীর আবেদন মঞ্জুর করলেন ক্ষুব্ধ মমতা

এত দিন তাঁর বিরুদ্ধে স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায় এবং শ্বশুর দুলাল দাস অভিযোগ তুলতেন, বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ই শোভনের এই অবস্থার জন্য দায়ী। এ দিন শোভন পাল্টা রত্নার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন। তিনি দাবি করেন, তাঁর অজান্তেই রত্না ‘জিসিআর’ নামে একটি কোম্পানি খোলেন। গোপাল, চিকু এবং রত্না নামের প্রথম অক্ষর দিয়েই তৈরি জিসিআর। কে এই চিকু? শোভনের কথায়, ‘‘এই প্রশ্ন করায় আমাকে উনি (রত্না) বলেছিলেন, পছন্দ না হলে আমাকে ডিভোর্স করে দাও।’’ শোভন সরাসরি রত্নার বিরুদ্ধে চিকুর সঙ্গে সম্পর্কের অভিযোগ তোলেন।

এখানেই থামেননি শোভন। অভিযোগ করেন, তাঁর জন্মদিনে তাঁকে বিষ মেশানো কেক পাঠানোর পরিকল্পনা করেছিলেন রত্না। এমনকি, বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর মেয়েকে সুপারি কিলার দিয়ে খুনের ছকও কষা হয়েছিল বলে শোভনের দাবি।

যদিও রত্না এ সব অভিযোগ নস্যাৎ করে দিয়ে জানিয়েছেন, যে সব অভিযোগ শোভন করেছেন, সে বিষয়ে তিনি কোর্টে যাবেন। শোভন মিথ্যা কথা বলছেন বলে রত্নার দাবি, ‘‘কোর্টে গিয়ে সবটা প্রমাণ করতে হবে ওঁকে।’’

এত কিছুর মধ্যে বৈশাখী সম্পর্কেও মন্তব্য করেছেন শোভন। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর বিপদের দিনে পাশে ছিলেন বৈশাখী এবং তাঁর পরিবার। তাই শোভন তাঁদের সঙ্গে বেইমানি করতে পারবেন না। বৈশাখীকে নিয়ে চার দিকে যে সমালোচনা চলছে, তাকে নিন্দনীয় বলেও এ দিন মন্তব্য করেন শোভন। তিনি বলেন, “মন্ত্রিত্ব ছাড়ার জন্য দুঃখ-যন্ত্রণা  নেই। আমার শুভানুধ্যায়ীকে আঘাত করার চেষ্টা হচ্ছে, সেটাই যন্ত্রনাদায়ক। ক্ষমতার জন্য তো বন্ধুকে ছেড়ে যেতে পারি না। মানবিকতাকেও ত্যাগ করতে পারব না। ওটা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।”

এ দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি তাঁর আনুগত্যের প্রসঙ্গও তুলেছেন শোভন। বাবা-মায়ের পর তিনি তাঁকেই সবচেয়ে বেশি শ্রদ্ধা করেন বলেও মন্তব্য করেন শোভন।