মাধ্যমিক কি তুলে দেওয়া উচিত?

মাধ্যমিক পরীক্ষাএ বারের মাধ্যমিকের কৃতীরা

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: মাধ্যমিক পরীক্ষা তুলে দেওয়া উচিত। এমনটাই মনে করছেন অনেকে।

বুধবার রাজ্যে মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করেছে কোচবিহারের সুনীতি অ্যাকাডেমির সঞ্জীবনী দেবনাথ। ৭০০-র মধ্যে সে পেয়েছে ৬৮৯। মধ্যশিক্ষা পর্যদের প্রকাশ করা মেধাতালিকায় প্রথম দশে রয়েছে মোট ৫৬ জন পরীক্ষার্থীর নাম। এদের বেশির ভাগই বিভিন্ন জেলার পড়ুয়া। সেই তুলনায় কলকাতার ফল বেশ খারাপ। প্রথম দশে রয়েছে মাত্র দু’জন। জেলার চেয়ে কেন কলকাতা পিছিয়ে পড়ল, তা খতিয়ে দেখতে বিশেষজ্ঞ কমিটিও নিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্কুলশিক্ষা দফতর।

কিন্তু, এমন খারাপ ফল কেন হল শহরে? স্কুল কর্তৃপক্ষদের একটা অংশ এর দায় চাপিয়ে দিয়েছেন সিবিএসই এবং আইসিএসই বোর্ডের উপর। তাঁদের মতে, শহরের মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের একটা বড় অংশ কেন্দ্রীয় ওই বোর্ড দু’টির আওতায় থাকা স্কুলে ভর্তি হয়। ফলে মেধার নিরিখে একটু পিছিয়ে থাকারাই মধ্যশিক্ষা পর্যদের স্কুলগুলিতে পড়াশোনা করে। তার ফসলই এ বারের ফল।

যদিও এর উল্টো ব্যাখ্যাও রয়েছে। এত দিন তো শহর এবং শহরতলির স্কুলগুলি ভাল ফল করে এসেছে। এমনকী, মেধাতালিকার প্রথম দিকে তাদের একাধিক ছাত্রছাত্রী থাকত। তখন কেন্দ্রীয় বোর্ডের তত্ত্ব ওঠেনি। হঠাৎ করে এমন তত্ত্ব খাড়া করে তবে কি ওই স্কুলগুলো নিজেদের দায় ঝেড়ে ফেলতে চাইছে! আসলে পর্যদ নিয়ন্ত্রিত স্কুলগুলোতে পড়াশোনার মান নেমে গিয়েছে বলেই একটা বড় অংশের মত।

এই দুই মতের প্রেক্ষিতে একটাই প্রশ্ন উঠছে, তা হলে আর মাধ্যমিক পরীক্ষা রেখে লাভ কি? যদি মেধাবীদের বেশির ভাগই কেন্দ্রীয় বোর্ডে পড়াশোনা করে, আর তার জেরে ফল খারাপ হয়, প্রশ্ন ওঠাই স্বাভাবিক। আবার, পড়াশোনার মান নেমে গেলেও সেই একই প্রশ্ন। আর সেখানেই দেশ জুড়ে অভিন্ন পরীক্ষাবিধির প্রস্তাব ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।

এমনিতেই কেন্দ্রীয় ওই দুই বোর্ডের ফল রাজ্যের পর্যদের থেকে অনেকটাই ভাল। সেখানে দশম শ্রেণিতে প্রথম হওয়া পরীক্ষার্থী প্রায় ৯৯.৯৯ শতাংশ নম্বর পায়। বাকি পরীক্ষার্থীদের একটা বড় অংশ ৯০ শতাংশের ঘরে। কিন্তু, এ বঙ্গে মাধ্যমিকে যে প্রথম হয়, তার নম্বর সেই তুলনায় কিছুটা পিছিয়েই থাকে। ৯০ শতাংশের উপরে নম্বর পাওয়া ছাত্রছাত্রীর সংখ্যাও বেশ কম। অভিন্ন পরীক্ষাবিধি হলে নম্বরের এই বিভেদ অনেকটাই কমবে বলে মনে করছেন অনেকে।

ঠিক যেমন ভাবে জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা অভিন্ন হয়ে গিয়েছে দেশ জুড়ে। তাতে ফল ভালই হয়েছে। সে ভাবেই মাধ্যমিক উঠিয়ে অভিন্ন পরীক্ষার দাবি তুলছেন অনেকে। আঞ্চলিক ভাষাতে পরীক্ষা হলেও বোর্ড একটাই হোক বলে ওই অংশের মত।

এ বারের ফল

প্রথম: সঞ্জীবনী দেবনাথ, প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৯

দ্বিতীয়: শীর্ষেন্দু সাহা, প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৮

তৃতীয়: ময়ূরাক্ষী সরকার, নীলব্জ দাস এবং মৃন্ময় মণ্ডল, প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৭

চতুর্থ: দীপ গায়েন, প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৬

পঞ্চম: অঙ্কিতা দাস, সৌমী নন্দী, সৃজা পাত্র, অনীক জানা এবং প্রথমকান্তি মজুমদার, প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৫

ষষ্ঠ: সুমিত বাগচী, নিধি চৌধুরী, অরিত্রিকা পাল, প্রতিমান দে, শ্রুতি সিংহ মহাপাত্র এবং রৌনক সাহা, প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৪

সপ্তম: মহাশ্বেতা হোমরায়, দেবাঞ্জন ভট্টাচার্য, অরিন্দম ঘোষ, পারমিতা মণ্ডল এবং সার্থক তালুকদার, প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৩

অষ্টম: দেবস্মিত রায়, তাপস দেবনাথ, জুমানা নারজিস, অরিন্দম সাহা, অনমিত্র মুখোপাধ্যায়, দেবারতি পাঁজা, দিশা মণ্ডল, প্রেরণা মণ্ডল এবং রূপ সিংহবাবু, প্রাপ্ত নম্বর ৬৮২

নবম: ঐতিহ্য সাহা, সায়ন্তিকা রায়, অম্লান ভট্টাচার্য, সায়ন্তন চৌধুরী, মহম্মদ রফিকুল হাসান, সায়ন নন্দী, সৌত্রিক শূর, তন্ময় চক্রবর্তী, সোহম আহমেদ, সৈকত সিংহরায় এবং স্বস্তিক ঘোষ, প্রাপ্ত নম্বর ৬৮১

দশম: বৈদুর্য বিশ্বাস, সুমনকুমার সাহা, প্রিমরোজ সরকার, মির মহম্মদ ওয়াসিফ, অরিত্র সরকার, তামান্না ফিরদৌস, অন্বেষা বেঘুরিয়া, গৌরব মণ্ডল, মোনালিসা সামন্ত, শুভম রায়, ইন্দ্রজিৎ মিশ্র, অগ্নিভ সিংহ, দেবন্য প্রধান, পবিত্র  সেনাপতি, প্রাপ্ত নম্বর ৬৮০

‘সুনীল আপনি এ বার ফুটবলটা ছেড়ে দিন’