স্কুল ছুটি দু’মাস, রাজ্যের স্কুলশিক্ষা দফতরের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সরব শিক্ষক-অভিভাবকরা

স্কুল ছুটি

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: স্কুল ছুটি দু’মাস, কারণ, ভয়াল ঘূর্ণিঝড় আর প্রচণ্ড গরম! স্কুলশিক্ষা দফতরের এই নির্দেশিকা নিয়ে বিতর্ক চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। ঘূর্ণিঝড় ফণী আছড়ে পড়ার আশঙ্কায় গোটা রাজ্য যখন সতর্ক, সেই সময়ে স্কুলশিক্ষা দফতর একটি নির্দেশিকা জারি করে রাজ্যের সমস্ত সরকারি এবং সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুল বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করে। পরে জানানো হয়, শুধু ক্লাস দু’মাস স্কুল পুরোপুরি বন্ধ থাকবে। ৩ মে থেকে ৩০ জুন— স্কুল ছুটি দু’মাস টানা।

শিক্ষক সংগঠনগুলোর একটা বড় অংশের মতে, এই ছুটির ফলে সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হবে আগামী বছরের মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা। গরমের ছুটির পরে তিন মাস পড়াশোনা। তার পরেই ফের পুজোর ছুটি এবং তার কিছু দিন পরেই ওই ছাত্রছাত্রীদের টেস্ট। এত কম সময়ে পাঠ্যক্রম শেষ কী ভাবে হবে, সে প্রশ্ন তুলছে তারা।

শুধু পাঠক্রম শেষ নয়, ওই সংগঠনগুলোর কাছে চিন্তার আরও একটা বড় কারণ মিড ডে মিল। একটা বড় অংশের ছাত্রছাত্রী পুষ্টিযুক্ত খাবার পায় একমাত্র স্কুল থেকে। মিড-ডে মিলের খাবারের উপরে অনেক ছাত্রছাত্রই নির্ভরশীল। সেই ছাত্রছাত্রীরা দুপুরের খাবার পাবে না। কারণ, অনেক পড়ুয়াই আসে দারিদ্রসীমার নীচের পরিবার থেকে। মিড-ডে মিলের খাবার থেকেই তারা কিছুটা পুষ্টি পায়। স্কুল টানা দু’মাস বন্ধ থাকলে ওই ছাত্রছাত্রীরা খাবারই পাবে না। ফলে তাদের স্বাস্থ্য বেহাল হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা।

নুসরত জাহান চেয়ারে বসে, হেলে পড়ল মঞ্চ, গড়বেতায় তৃণমূলের সভায়

স্কুল ছুটি দু’মাস টানা, এর ফলে বেশির ভাগ সরকারি স্কুলে পড়ুয়াদের আয়রন ট্যাবলেট খাওয়া বন্ধ থাকবে। সেটাও অভিভাবক ও শিক্ষকদের কাছে চিন্তার বিষয়। কারণ, ওই ট্যাবলেট খেলে ছাত্রছাত্রীদের শরীর-স্বাস্থ্য ভাল থাকে। সব মিলিয়ে ছাত্রছাত্রীদের ওজন ও বৃদ্ধি কমে যাবে। তাদের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতাও কমে যাবে বলে আশঙ্কা।

বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতি মনে করে, ৮ জুনের পরে স্কুল খুলে দেওয়া উচিত। পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক সমিতিরও মত, এত দীর্ঘ ছুটির ফলে পাঠ্যক্রম শেষ করা মুশকিল। মাধ্যমিক শিক্ষা ও শিক্ষাকর্মী সমিতি এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সব জেলা স্কুল পরিদর্শকের দফতরে বিক্ষোভ দেখাবে। স্কুলে এত লম্বা ছুটি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রতিবাদ বন্যা। সেখানে সরব হয়েছেন শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী এবং অভিভাবকরাও।

স্কুল শিক্ষা দফতর এই দু’মাসের ছুটিকে তিন ভাগে ভাগ করেছে। ১) ঘূর্ণিঝড় ফণীর জন্য ৩ এবং ৪ মে ছুটি। ২) ভয়ঙ্কর গরমের জন্য ৬ মে থেকে ১৯ মে পর্যন্ত বাড়তি ছুটি। ২০ মে থেকে চলবে গরমের ছুটি। ৩) ৮ জুন শেষ হওয়ার কথা ছিল গরমের ছুটি। কিন্তু প্রলম্বিত গরমের জন্য ছুটি বাড়ানো হয়েছে ৩০ জুন পর্যন্ত।

(বাংলার আরও খবরের জন্য ক্লিক করুন এই লিঙ্কে)