সাঁতরাগাছি ফুট ওভারব্রিজে পদপিষ্ট হয়ে মৃত ২, আহত দুই শিশু-সহ ১২

সাঁতরাগাছি ফুট ওভারব্রিজে পদপিষ্টসাঁতরাগাছি ফুট ওভারব্রিজ। —ফাইল চিত্র।

জাস্ট দুনিয়া ব্যুরো: সাঁতরাগাছি ফুট ওভারব্রিজে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হল দু’জনের। গুরুতর আহত অবস্থায় হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি আরও ১২ জন। তাঁদের মধ্যে দু’জন শিশুও রয়েছে। মৃতদের মধ্যে এক জনের বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাটে। অন্য জনের বাড়ি মুর্শিদাবাদ জেলায়।

মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ দক্ষিণ-পূর্ব রেলের সাঁতরাগাছি রেল স্টেশনের ফুট ওভারব্রিজে পদপিষ্টের এই ঘটনাটি ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, এ দিন সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ সাঁতরাগাছি স্টেশনে তিনটি দূরপাল্লার ট্রেন এসে দাঁড়ায়। তার কয়েক মিনিট আগেই দু’টি লোকাল ট্রেন ছেড়ে গিয়েছে। ফলে ওই সময়টায় বিপুল যাত্রী চাপ হয়। তাঁদেরই একটা বড় অংশ রেলের ফুট ওভারব্রিজে ওঠেন। সকলেই আগে যাওয়ার চেষ্টা করায় একটা সময়ে তাড়াহুড়ো এবং হুড়োহুড়ি বেধে যায়। সেই সময় পদপিষ্টের ওই ঘটনা ঘটে। 

দুর্ঘটনার খবর পেয়ে রেড রোডে দুর্গাপুজোর কার্নিভালের অনুষ্ঠান থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি সাঁতরাগাছি স্টেশনে পৌঁছন। ওই পদপিষ্টের ঘটনায় মৃতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের কথা ঘোষণা করেন তিনি। পাশাপাশি, আহতদের চিকিৎসার বন্দোবস্তের কথাও বলেন মমতা। গোটা ঘটনার জন্য  তিনি রেলকেই দায়ী করেছেন।

‘আমি কিছু না করলে গল্পটাই বা আর কোথায়? কোনও গল্প নেই’

তবে নিত্যযাত্রীদের একটা বড় অংশের অভিযোগ, প্রতি দিনই সাঁতরাগাছি স্টেশনের ফুট ওভারব্রিজে এমন দৃশ্য দেখা যায়। ট্রেন থেকে নামা এবং ট্রেন ধরতে যাওয়া যাত্রীরা পরস্পর উল্টো অভিমুখেই ওভারব্রিজ দিয়ে যাতায়াত করেন। তার মধ্যে রয়েছেন, এক প্ল্যাটফর্ম থেকে অন্য প্ল্যাটফর্মে যাওয়া যাত্রীরা। ফলে সন্ধ্যার ভরা সময়ে ওই ব্রিজের উপর বিপুল ভিড় হয়। সরু ওভারব্রিজে বিপুল ওই যাত্রী স্রোত প্রতি দিনই আতঙ্কের বিষয়।

এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ওভারব্রিজের উপরে ও নীচে অসংখ্য জুতো পড়ে রয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের চোখেমুখে তখনও আতঙ্কের ছায়া। তাঁদের একটা অংশের বক্তব্য, যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, তাতে আরও বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। শ্বাসরোধ হয়ে মৃত্যু হতে পারত অনেকের। সকলেই রেলের গাফিলতিকে দায়ী করছেন। প্রতি দিনই এমন পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার পরেও রেল কোনও ভাবেই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখেনি। অন্য দিনের মতো এ দিনও ওই ওভারব্রিজে এত ভিড় সত্ত্বেও প্রথম দিকে কোনও রেল পুলিশ বা আরপিএফ কর্মীকে দেখা যায়নি বলে অভিযোগ।

রেলের তরফেও ঘটনায় মৃতদের পরিবার পিছু ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।