চার দিক সবুজে সবুজ পঞ্চায়েত, মাঝে মাঝেই গেরুয়া ছোঁয়া

চার দিক সবুজে সবুজচার দিক সবুজে সবুজ, উঠে আসছে বিজেপি

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: চার দিক সবুজে সবুজ, আর তার মাঝে চা-বাগানের ট্রি শেড-এর মতো গেরুয়া ধ্বজা। গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে নির্বাচনের ফলের যদি কোনও রংবহুল ছবি আঁকা যায়, তা হলে এমনটাই দেখতে হবে। যদিও পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদের ছবিটা একেবারেই আলাদা। সেখানে নিখাদ সবুজ তৃণমূলী বাগিচা।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শুরু হয়েছে রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনের ব্যালট গণনা। প্রথমে গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরের ব্যালট গোনা শুরু হয়। সাতসকালেই অভিযোগ উঠতে থাকে, শাসক দলের লোকজন বিরোধী এজেন্টদের গণনাকেন্দ্রে ঢুকতে দিচ্ছে না। কোথাও বা এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে মেরে বার করে দিয়েছে তারা। কোথাও বোমাবাজির অভিযোগ ওঠে, তো কোথাও মারধরের। উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ায় তো রীতিমতো গুলি চালানোর ঘটনা ঘটে।

তবে এ সবের মধ্যেই বেলা গড়াতে দেখা যায়, অনেক জায়গাতে বিজেপি গ্রাম পঞ্চায়েতে আসন পেতে শুরু করেছে। তবে ঝাড়গ্রামে বিজেপি-র প্রভাব সবচেয়ে বেশি দেখা গিয়েছে। সেখানে একেবারে সেয়ানে সেয়ানে লড়াই হয়েছে তৃণমূল-বিজেপির মধ্যে। জেলার প্রায় অর্ধ্বেক আসনে গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করে নেয় বিজেপি। জঙ্গলমহলের মতো জায়গায় শাসক দলের এমন পরাজয় ভাবিয়ে তুলেছে হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটকে।

অন্য দিকে, ভাঙড়ে আরাবুল ইসলাম নিজে জিতলেও যে ৮টি আসনে ভোট হয়েছিল, তার মধ্যে পাঁচটি আসনই জমি রক্ষা কমিটি ছিনিয়ে নিয়েছে। সেটাও শাসক দলের জন্য একটা মাথাব্যথার কারণ।

পঞ্চায়েত ভোট গননা এক ফ্রেমে দেখে নিন

তবে, সন্ধ্যার পর থেকে পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদের আসন গণনা শুরু হতেই দেখা যায়, তৃণমূল ফের স্বমহিমায়। এমনিতেই রাজ্যের ৩৪ শতাংশ আসনে শাসক দল আগে থেকেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এগিয়ে রয়েছে। আদালতের নির্দেশে এখনও জয়ী বলা যায়নি, তবে ওই সব আসনে আর ভোটের প্রয়োজন পড়েনি। যে ৬৬ শতাংশ আসনে ভোট হয়েছে, তার মধ্যে ৭৩ শতাংশ আসনে জিতেছে শাসক দল তৃণমূল। ১৯ শতাংশ আসনে জিতেছে বিজেপি। ৫ শতাংশ আসনে বামেরা এবং ৩ শতাংশ আসনে জিতেছে কংগ্রেস।

আর তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এই প্রথম বিজেপি গোটা রাজ্যে দ্বিতীয় শক্তি হিসাবে উঠে এল। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে এটা তাদের কাছে কিছুটা অ্যাসিড টেস্টের মতোই ছিল। সেই টেস্টে কার্যত নিজেদের অস্তিত্ব প্রমাণ করেই ছেড়েছে বিজেপি। বামেরাও প্রমাণ করেছে, তারা এ রাজ্য থেকে প্রায় মুছে যাওয়ার পথে।

কাজেই এ রাজ্যে আজ আর লাল পতাকা নয়, চা-বাগানের ওই গেরুয়া ধ্বজাই বড় চিন্তার কারণ শাসক দলের।