এনআরএস মেডিক্যাল কলেজে ডাক্তার বিক্ষোভ, থমকে স্বাস্থ্য পরিষেবা

এনআরএস মেডিক্যাল কলেজে ডাক্তার বিক্ষোভআহত এক জুনিয়র ডাক্তার। ডান দিকে পরিবহ মুখোপাধ্যায়ের মাথার সিটি স্ক্যানের ছবি।

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: এনআরএস মেডিক্যাল কলেজে ডাক্তার বিক্ষোভ, কেন না রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় সোমবার রাতে জুনিয়র চিকিৎসকদের বেধড়ক মারধর করা হয়েছে। তার মধ্যে পরিবহ মুখোপাধ্যায় নামে এক জুনিয়র ডাক্তারের অবস্থা বেশ আশঙ্কাজনক। তিনি এই মুহূর্তে মল্লিকবাজারের কাছে ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেসে ভর্তি। তাঁর মাথার করোটি ভেঙে বিতরে ঢুকে গিয়েছে।

ঘটনার সূত্রপাত সোমবার সন্ধ্যায়। মহম্মদ শাহিদ নামে এক রোগীর মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল। রাতেই রোগীর পরিবারের লোকজন চড়াও হয় কর্তব্যরত জুনিয়র ডাক্তারদের উপর। তাঁদের বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।

এর পর মঙ্গলবার সকাল থেকে ওই হাসপাতালে বহির্বিভাগে রোগী দেখা বন্ধ করে দেওয়া হয়। দুপুরের মধ্যেই রাজ্যের সব ক’টি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে একই চিত্র ধরা পড়ে। এরই সঙ্গে বুধবার ১২ ঘণ্টার জন্য রাজ্যের সমস্ত সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালের আউটডোর অর্থাৎ বহির্বিভাগ বন্ধ রাখার ডাক দিয়েছে চিকিৎসকদের সংগঠন। তবে তারা আশ্বাস দিয়েছে, জরুরি পরিষেবা চালু রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রাইভেট চেম্বার বন্ধ রাখারও অনুরোধ করা হয়েছে ওই সংগঠনের তরফে।

আরও পড়তে…
মমতা বাঘের সঙ্গে নিজের তুলনা টানলেন, মুকুলের পাল্টা ‘আমরাই আহত বাঘ’

সোমবার বিকালে এনআরএসের মেডিসিন বিভাগে চিকিৎসাধীন ট্যাংরার বাসিন্দা মহম্মদ শাহিদের (৭৫) মৃত্যু হয়। পুলিশ সূত্রের খবর, মৃতের ছেলে মহম্মদ সাবির খানের দাবি, সোমবার বিকেলে তিনি যখন হাসপাতালে যান তখনও তাঁর বাবা সুস্থই ছিলেন। পরে খাবার কিনে ফিরে দেখেন তিনি ছটফট করছেন। সাবিরের অভিযোগ, কোনও চিকিৎসককে তাঁকে দেখতে আসেননি। এর পর প্রায় জোর করে এক জন জুনিয়র ডাক্তারকে নিয়ে আসেন। ওই চিকিৎসক একটি ইঞ্জেকশন দিলে কিছু ক্ষণ পরেই শাহিদের মৃত্যু হয়। এর পরেই শুরু হয় গন্ডগোল।

এর জেরে রাজ্যের প্রায় সব সরকারি মেডিক্যাল কলেজে জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিবাদ কর্মসূচিতে চিকিৎসা পরিষেবা ধাক্কা খায়। বিভিন্ন হাসপাতালে ইন্ডোর, এমনকি জরুরি বিভাগেও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ। হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলেও চিকিৎসকের দেখা মেলেনি।

এনআরএসের ওই গন্ডগোলে গুরুতর জখম হন জুনিয়র ডাক্তার পরিবহ মুখোপাধ্যায়। ইটের আঘাত লাগে তাঁর কপালের উপরের দিকে মাথার ডান দিকের অংশে। সেখানে ফেটে যায়। শুধু তাই নয়, তাঁর করোটি ভিতরের দিকে ঢুকে যায় ভেঙে গিয়ে। তাঁকে মল্লিকবাজারের ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেসে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁর অস্ত্রোপচার হয়েছে এ দিন। আপাতত বিপন্মুক্ত আছেন পরিবহ।

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)