নারদ মামলার শুনানি দিনের মতো শেষ, গৃহবন্দি আরও দু’দিন

নারদ মামলার শুনানি

জাস্ট দুনিয়া ব্যুরো: নারদ মামলার শুনানি সোমবারের মতো শেষ হল। পরবর্তী শুনানি বুধবার। যদিও বুধবার রাজ্যে ঘূর্ণিঝড় ইয়সের আছড়ে পড়ার কথা। এই অবস্থায় ভার্চুয়াল শুনানি কতটা স্বাভাবিক গতিতে এগোবে তা নিয়েও সংশয় রয়েছে। যদিও এদিন শুনানির পর কোনও সিদ্ধান্তে না যেতে পারায় চার নেতা-মন্ত্রীকে আরও দু’দিন গৃহবন্দি হয়েই থাকতে হচ্ছে। এদিন পাঁচ সদস্যের বেঞ্চে ছিলেন প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল, অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়, সৌমেন সেন ও হরিশ ট্যান্ডন। তাঁদের সামনেই দু’পক্ষ একে অপরের মত রাখে।

এদিন ঠিক সকাল ১১টায় মামলার শুনানি শুরু হয়। তার আগেই অবশ্য সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার শুনানি স্থগিত রাখার আবেদন জানায় সিবিআই। যদিও সুপ্রিম কোর্টের এই মামলা এখনও গ্রহন না করায় তা খারিজ হয়ে যায়। জানা গিয়েছে মধ্যরাতে অনলাইনে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানানো হয়েছিল। এর পর শুনানি শুরু হলে তা বুধবার পর্যন্ত স্থগিত রাখার অনুরোধও করা হয়। কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়েছে দিয়েছে, যতক্ষণ না সুপ্রিম কোর্ট থেকে কোনও নির্দেশ আসছে ততক্ষণ মামলা চলবে। মামলা শুরু হলে বিচারপতিদের দু’জন ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় ও সৌমেন সেন জানতে চান গত ৭ বছর ধরে এই মামলা চললেও কেন অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়নি। তারপর চার্জশিট পেশ করেই গ্রেফতার কেন করা হল? এর সদুত্তর দিতে পারেননি সিবিআই-এর তরফের আইজীবী। এদিন তর্ক-বিতর্ক, যুক্তি-পাল্টা যুক্তির মাধ্যমে স্থির করা হয় এই শুনানির বিষয়বস্তু।

এদিনও ঘুরে ফিরে আসে নিজাম প্যালেসে সদস্য, সমর্থকদের ধর্ণা, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেখানে গিয়েছে ৫-৬ ঘণ্টা কাটানো  ও তাঁর দলের সদস্যদে ছেড়ে দিতে বলা ইত্যাদি। বুধবার যদি সব ঠিক থাকে তাহলে এই মামলার রায় তিন দিকের একটিতে যেতে পার। প্রথমত, চার নেতার গৃহবন্দি অবস্থা বজায় থাকতে পারে। দ্বিতীয়ত, অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেওয়া হতে পারে এবং তৃতীয়ত, মামলার সরাসরি নিষ্পত্তিও হতে পারে।

শুক্রবার বিচারপতি রাজেশ বিন্দল ও অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে নারদ মামলায় শুনানি ছিল। বুধবারের পর বৃহস্পতিবার শুনানি থাকলেও তা বিশেষ কারণবশত বাতিল করা হয়। শুক্রবার আবার সেই শুনানি শুরু হলে দুই বিচারপতি সিদ্ধান্তে একমত হতে পারেননি। রাজেশ জিন্দল অভিযুক্তদের জামিনের বিপক্ষে মত দেন এবং অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় রায় দেন পক্ষে। সে কারণে কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছনো যায়নি। তার পরই মামলা বৃহত্তর বেঞ্চে সরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তৈরি হয় ৫ সদস্যের বেঞ্চ। তার আগেই অবশ্য চার নেতা-মন্ত্রীকে জেল হেফাজত থেকে গৃহবন্দি থাকার অনুমতি দেয় আদালত।

গত সোমবার সকালে রাজ্যের দুই মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, সাংসদ মদন মিত্র ও প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কে নারদ মামলায় গ্রেফতার করে সিবিআই। সেদিনই সিবিআই-এর বিশেষ আদালতে এই চারজনের শুনানি হয়। সেখানে চারজনকেই জামিন দেওয়া হয়। কিন্তু তার পর জামিনের স্থগিতাদেশ চেয়ে হাইকোর্টে যায় সিবিআই। এবং তার পরই জামিনে স্থগিতাদেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট।

মঙ্গলবার এই চারজনের তরফে কলকাতা হাইকোর্টে আবারও জামিনের আবেদন জানানো হয়। বুধবার সেই শুনানিতে জামিন মেলেনি। ইতিমধ্যেই অসুস্থতার জন্য চার জনের মধ্যে তিন জনই রয়েছেন হাসপাতালে। সুব্রত, মদন ও শোভনের এসএসকেএম-এ চিকিৎসা চলছে।

গৃহবন্দির নির্দেশের পর বাড়ি ফিরতে পেরেছেন ফিরহাদ। পর দিন ফিরেছেন শোভন। ঘূর্ণিঝড়ের কথা ভেবে তড়িঘড়ি বাড়ি ফিরতে চাইছেন সুব্রতও। তবে ডাক্তাররা এখনও তাঁকে ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি।

(প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে)

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)