নারদ কাণ্ডে গ্রেফতার ফিরহাদ-সুব্রত-মদন-শোভন, ধর্নায় মমতা

নারদ মামলার শুনানি

জাস্ট দুনিয়া ব্যুরো: নারদ কাণ্ডে গ্রেফতার রাজ্যের দুই মন্ত্রী, এক সাংসদ ও এক প্রাক্তন‌ মন্ত্রী। হঠাৎই নারদ মামলা নিয়ে তৎপর সিবিআই। সোমবার সকালেই নিজাম প্যালেসে নিয়ে গিয়ে গ্রেফতার করা হয় চার জনকে। তার পরই সেখানে পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজাম প্যালেসের সামনে তৃণমূল সমর্থকদের জটলা হতে শুরু করে খবর প্রচার হয়ে যেতেই। শুরু হয় প্রতিবাদ। কোভিড পরিস্থিতিতে যখন রাজ্যকে স্বস্তি দিয়ে লকডাউন চলছে তখনই এই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। নিজাম প্যালেসের ভিতরেই ধর্নায় বসেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দাবি গ্রেফতার করতে হবে তাঁকেও।

সোমবার সকাল থেকেই সিবিআই প্রত্যেককে তাঁদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে আসে নিজাম প্যালেসে সেখানেই তাঁদের গ্রেফতার করা হয়। স্পিকারের অনুমতি ছাড়াই এই গ্রেফতার বলে জানা গিয়েছে। ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মদন মিত্র, শোভন চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করা হয়েছে।

যা খবর এদিনই চার জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেবে সিবিআই। প্রশ্ন উঠছে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের ভূমিকা নিয়েও। কিছুদিন আগে তিনিই নারদ মামলায় চার্জশিট গঠনের অনুমতি দেন। তার পরই সিবিআই চারজনকে গ্রেফতার করে।

ফিরহাদের গ্রেফতারের খবরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথমে ফিরহাদের বাড়িতে যান তার পর সেখান থেকে সোজা চলে যান নিজাম প্যালেসে। সেখানে তিনি জানান, দেখা করতে গিয়েছেন তিনি। তার পরই এই গ্রেফতারের প্রতিবাদ করেন এবং তা বেআইনি বলে তাঁকেও গ্রেফতারের দাবি জানান। তিনি এও বলেন যতক্ষণ না তাঁকে গ্রেফতার করা হচ্ছে তিনি সেখানেই থাকবেন।

খবর ছড়িয়ে পড়তেই নিজাম প্যালেসের সামনে ভিড় জমতে শুরু করে তৃণমূল কর্মী, সমর্থকদের। চলতে থাকে স্লোগান। ভিতরে ধর্নায় মমতা আর বাইরে রাস্তার উপরই ধর্ণায় বসে পড়েন কর্মী, সমর্থকরা। ভিড় সামলাতে নিজাম প্যালেসের সামনের রাস্তা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয় পুলিশ।

ফিরহাদ হাকিমের বাড়ির সামনেও প্রতিবাদ করতে দেখা যায় কর্মী, সমর্থকদের। কিন্তু মন্ত্রী নিজেই তাঁদের শান্ত করেন এবং অশান্তি না করার আবেদন জানান। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে কেন্দ্রের প্রতিশোধস্পৃহা নিয়ে। তৃণমূলের তিন নেতার সঙ্গে গ্রেফতার হয়েছেন তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যাওয়া এবং পরবর্তী সময়ে নিজেকে সেখান থেকেও গুটিয়ে নেওয়া শোভন চট্টোপাধ্যায়। তবে শুভেন্দু অধিকারী ও মুকুল রায় কেন নয়?

এই একই মামলায় নাম জড়িয়ে রয়েছে শুভেন্দু ও মুকুলের। এর কোনও সদুত্তর পাওয়া যায়নি। তবে তদন্ত যেমন এগোবে তেমনভাবেই পরবর্তী গ্রেফতার হবে বলে দাবি বিজেপিসূত্রে। সেই তালিকায় কি এই দু’জন থাকবেন?

এদিকে তাঁর অনুমতি ছাড়া এই গ্রেফতার বেআইনি বলে দাবি করেছেন, বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। বিধানসভার কোনও সদস্যকে গ্রেফতার করতে হলে  অধ্যক্ষের অনুমতি নিতেই হয়। তাঁর কাঠগড়ায়ও রাজ্যপাল। পুরো ঘটনাটিকেই অগনতান্ত্রিক বলে ব্যাখ্যা করেছেন অধ্যক্ষ।

এর পর নিজাম প্যালেসে পৌঁছন বেহালা পূর্বের বিধায়ক ও শোভন চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়ও। জানা যাচ্ছে তাঁকেও ডেকে পাঠিয়েছে সিবিআই। কিন্তু কেন তা এখনও পরিষ্কার নয়। এখনও উত্তেজনা চলছে নিজাম প্যালেসের সামনে। কেন্দ্রীয় বাহিনী ও পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তির পাশাপাশি ইট-বোতল বৃষ্টি হতে থাকে। গ্রেফতারের প্রতিবাদে রাজ্য জুড়ে শুরু হয়েছে প্রতিবাদ।

(প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে)

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)