‘তোলাবাজ ভাইপো হঠাও’, বিজেপিতে যোগ দিয়েই হঙ্কার শুভেন্দুর

‘তোলাবাজ ভাইপো হঠাও’মেদিনীপুরের জনসভায় বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী।

জাস্ট দুনিয়া ব্যুরো: ‘তোলাবাজ ভাইপো হঠাও’, বিজেপিতে যোগ দিয়েই এই হঙ্কার ছাড়লেন শুভেন্দু অধিকারী। নাম না করে তিনি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশাপাশি তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও বিঁধেছেন। নিজের ‘মা’ এবং ‘দেশমাতা’— এই দুয়ের বাইরে তাঁর কোনও মা নেই বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। শনিবার মেদিনীপুরে কলেজমাঠের যে মঞ্চে অমিত শাহের উপস্থিতিতে বিজেপি-তে যোগ দিলেন শুভেন্দু, সেখান থেকেই প্রাক্তন তৃণমূলমন্ত্রীর এমন হুঙ্কার শুনে সামনের জনতা হাততালিতে ফেটে পড়ে।

বিজেপি-তে শুভেন্দুর যোগ দেওয়া নিয়ে জল্পনা ছিলই। ঘনিষ্ঠ মহলেও তিনি জানিয়েছিলেন, অমিতের উপস্থিতিতে মেদিনীপুরের সভাতে বিজেপিতে যোগ দেবেন। সেই মতো এ দিন দুপুরের কিছু আগেই মেদিনীপুরে পৌঁছন শুভেন্দু। কাঁথির বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন বেলা ঠিক সাড়ে ১২টায়। অমিত শাহ যখন দুপুর আড়াইটের সময় মঞ্চে উঠলেন, শুভেন্দু তাঁর পাশেই ছিলেন। সঙ্গে ছিলেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। দলে যোগদান করিয়ে শুভেন্দুর হাতে পুষ্পস্তবক তুলে দেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরী। এর পরেই অমিতের পায়ে হাত দিয়ে শুভেন্দুকে প্রণাম করতেও দেখা যায়।


(বাংলার আরও খবর জানতে ক্লিক করুন এই লিঙ্কে)

নিজের ভাষণে একাধিক বার অমিতকে ‘বড়দাদা’ বলে সম্বোধন করেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, ‘‘আমার যখন কোভিড হয়, তখন ২১ বছর ধরে করা পুরনো দলের এক জনও এক বারের জন্যও খোঁজ নেননি। অথচ তাঁদের জন্য আমি কাজ করেছি। অকৃতদার থেকেছি। কিন্তু অমিত শাহ দু’বার ফোন করেছেন। কেমন আছি জানতে চেয়েছেন। উনি আমার বড়দাদা।’’

তবে বিজেপি-তে যোগ দেওয়ায় দলের পুরনো কর্মীদের কোনও সমস্যা হবে না বলেও এ দিন মন্তব্য করেন শুভেন্দু। তাঁর কথায়, ‘‘শুভেন্দু মাতব্বরি করতে বিজেপিতে আসেনি। আমাকে পতাকা লাগাতে বললে লাগিয়ে দেব। দেওয়াল লিখতে বললেও লিখে দেব। নিচুতলা থেকে একটার পর একটা সিঁড়ি ভেঙে আজ এই জায়গায় এসেছি।’’

তৃণমূলের উদ্দেশে শুভেন্দু আরও আক্রমণ শানিয়েছেন এ দিন। তাঁর কথায়, ‘‘আমাকে বিশ্বাসঘাটক বলছে। কে বলছে? ৯৮ সালে অটলজির আশীর্বাদ ছাড়া বাড়ি থেকে বেরতে পারত না, তারা বলছে। আরে এনডিএ-তে কারা ছিল?’’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ইঙ্গিত করেই শুভেন্দুর আরও বক্তব্য, ‘‘বলছে, মাকে ছেড়ে কেউ যায় না! আমার একটাই মা, তাঁর নাম গায়ত্রী অধিকারী। এবং বিবেকানন্দের আদর্শ মতো, দেশমাতা। আমার আর কোনও মা নেই। আর কোনও মা নেই আমার।’’

তৃণমূলে ব্যক্তিকেন্দ্রিকতা রয়েছে বলেও এ দিন অভিযোগ তুলেছেন শুভেন্দু। তাঁর কথায়, ‘‘ওখানে থাকলে আত্মসম্মানে ঘা লাগে। মুকুলদা আমাকে বলেছিলেন, আত্মসম্মান নিয়ে থাকতে পারবি, বিজেপি-তে চলে আয়।’’ তিনি বলেন, ‘‘আমি চাই, কলকাতায় ও দিল্লিতে একই দলের সরকার থাকুক। নরেন্দ্র মোদীর হাতে বাংলাকে না তুলে দিলে রাজ্যের সর্বনাশ হবে।’’

তবে বক্তব্যের একেবারে শেষে এসে আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন শুভেন্দু। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম না করে তিনি ‘তোলাবাজ ভাইপো হঠাও’ হুঙ্কার দেন। তাঁর কথায়, ‘‘গতকাল আমাকে তৃণমূলের এক পুরনো কর্মী আমাকে একটি ভিডিয়ো পাঠিয়েছেন। লোকসভা ভোটের প্রচারে আমি তৃণমূল কর্মী হিসাবে বলেছিলাম, বিজেপি হঠাও, দেশ বাঁচাও। তো আমি তাঁকে বললাম, যখন যে কাজ করি, নিষ্ঠার সঙ্গে করি। তখন বলেছি তৃণমূলের কর্মী ছিলাম। বলেছি, বিজেপি হঠাও দেশ বাঁচাও। কাল মেদিনীপুরের কলেজ মাঠ থেকে বলব, তোলাবাজ ভাইপো হঠাও।’’


(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)