মণিপুরে জঙ্গি হামলায় শহিদ বাংলার জওয়ান, ফেরা হল না মেয়ের কাছে

মণিপুরে জঙ্গি হামলায় শহিদমণিপুরে জঙ্গি হামলায় শহিদ বাংলার শ্যামল দাস

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: মণিপুরে জঙ্গি হামলায় শহিদ বাংলার জওয়ানের আর ঘরে ফেরা হল না। কথা ছিল মেয়ের জন্মদিনের উপহার নিয়েই বাড়ি ফিরবেন কিন্তু শনিবার সেনা কনভয়ের উপর আচমকা জঙ্গি হানায় শহিদ হয়েছেন ৭ জন। তার মধ্যে রয়েছেন কর্নেলের স্ত্রী ও পুত্রও। সঙ্গে আরও যে তিনজন জওয়ানের মৃত্যু হয়েছিল তাঁদের মধ্যে ছিলেন মুর্শিদাবাদের শ্যামল দাস। মুর্শিদাবাদের কান্দি মহকুমার খড়গ্রাম ব্লকের কীর্তিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নগর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন শ্যামল। শনিবারই তাঁর গ্রামের বাড়িতে তাঁর শহিদ হওয়ার খবর পৌঁছয়। এখনও তাঁর দেহ পৌঁছয়নি।

মণিপুরের মায়ানমার বর্ডারের কাছে সেনা কনভয়ের উপর হামলা চালায় জঙ্গিরা। শুক্রবার সেখানে গিয়েছিল সেনাবাহিনির এই দলটি। সেই দলে সেনা প্রধানের সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্ত্রী ও পুত্রও। শনিবার সকালে তাঁরা সেখান থেকেই ফিরছিলেন। সকাল ১০টার আশপাশে এই হামলা চালায় জঙ্গিরা। এখনও পর্যন্ত এই হামলার দায় কেউ স্বীকার করেনি। এই হামলার নিন্দা করেছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মৃতদের ন্যায় দিতে বদ্ধপরিকর সরকার।

শ্যামলের মৃত্যু তাঁর বাড়িতে ভেঙে পড়েছে গোটা গ্রাম। বাড়ির ভিতর থেকে ভেসে আসছে ঘন ঘন কান্নার রোল। মেয়ের জন্মদিনে শেষ ফোন করেছিলেন শ্যামল। কিন্তু মেয়ের জন্মদিনে তার সঙ্গে থাকতে পারেননি বলে আফশোস ছিল শ্যামলের। তাই বাড়ি ফেরার আগে মেয়ের জন্য উপহার কেনার কথাও জানিয়েছিলেন স্ত্রী রুপাকে। কিন্তু সেই উপহার আর কখনওই পৌঁছবে না তাঁর মেয়ের কাছে। ফিরবেন না বাবাও। বুঝেও যেন বুঝতে পারছে না ছোট্ট মেয়েটি। বাবার ছবি হাতে নিয়ে বসে সে।

এদিকে, শ্যামলের মৃত্যুতে অন্ধকার নেমে এসেছে দুস্থ এই পরিবারে। শ্যামলই ছিলেন একমাত্র ভরসা। তাঁর রোজগারেই চলত সংসার। ২০০৯ সালে অসম রাইফেলসে যোগ দিয়েছিলেন শ্যামল। অতীতেও জঙ্গি সেনা লড়াইয়ে সাফল্যের সঙ্গে জঙ্গি দমন করে ফিরেছিলেন মুর্শিদাবাদের ছেলে। বাবার আফশোস, এবার আর ফেরা হল না। কিছুদিন আগেই ছোট ছেলেকে হারিয়েছেন তিনি। এবার চলে গেল শেষ সম্বল টুকুও। দুই ছেলেকে হারিয়ে পাথর হয়ে গিয়েছেন ধীরেন দাস। জঙ্গিদের ফাঁসির আর্জি জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি ছেলের জন্য গর্বিত তিনি। শেষ বাড়ি ফিরেছিলেন পুজোর আগে। আবার ফেরার কথা ছিল নবান্ন উৎসবে। তবে তার আগেই ফিরছেন শেষ বারের মতো কফিনবন্দি হয়ে।

প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)