মমতার একুশের ভাষণ: ১৬ অগস্ট রাজ্যে রাজ্যে খেলা হবে, নিশানায় বিজেপি

উপনির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু বাংলায়

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: মমতার একুশের ভাষণ শুরু করেই ধন্যবাদ জানালেন শরদ পওয়ার, সুপ্রিয়া সুলে, রামগোপাল যাদব, জয়া বচ্চন, তিরুচি শিবার মতো বিজেপি-বিরোধী শিবিরের নেতাদের। বুধবার তাঁরা তখন মমতার ভাষণ শুনছেন দিল্লির কনস্টিটিউশন ক্লাবে বসে মমতার ভাষণ শুনছেন ভার্চুয়ালি। এর পরেই একের পর এক বাণে বিজেপি এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে বিদ্ধ করবেন মমতা। তাঁর নিশানা থেকে বাদ যাবেন না নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহরাও।

নিজের ভাষণে বাংলার মানুষকে কৃতজ্ঞতা জানান মমতা। ১০ বছর ক্ষমতায় থাকার পর তাঁকে তৃতীয় বারের জন্য ফিরিয়ে আনার জন্য ধন্যবাদও দিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘অনেক বাধা ছিল। মানি পাওয়ারের বাধা, এজেন্সি পাওয়ারের বাধা, মাসল পাওয়ারের বাধা, কিন্তু আপনারা সব বাধা ভেঙে দিয়েছেন।’’ একই সঙ্গে তিনি প্রশান্ম কিশোরের সংস্থা আইপ্যাককেও ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘ডেলি প্যাসেঞ্জারের মতো বাংলায় আসছিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। বাংলার মানুষ আমাদের আশীর্বাদ করেছেন। আইপ্যাক-কে ধন্যবাদ। বাংলার মা-মাটি মানুষকে ধন্যবাদ।’’

বিজেপি স্বৈরশাসন চায় বলে এ দিন অভিযোগ করেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘ত্রিপুরায় আমাদের অনুষ্ঠান করতে দেয়নি। ভোটপরবর্তী হিংসার অভিযোগ মিথ্যা। কোনও হিংসা হয়নি রাজ্যে। মানবাধিকারের রিপোর্ট ভিত্তিহীন। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। ভোটের আগের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়িত করা হচ্ছে।’’ নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশেও তোপ দেগে মমতা বলেন, ‘‘বিজেপি পার্টি অফিসের মতো কাজ করেছে নির্বাচন কমিশন।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘আমাদের ফোন ট্যাপ করা হচ্ছে। অত্যন্ত বিপজ্জনক পরিস্থিতি। মানুষকে শান্তিতে থাকতে দিচ্ছে না বিজেপি। মানুষকে হেনস্থা করছে। আমি চিদম্বরমজি, শরদ পওয়ারজির সঙ্গে কথা বলার উপায় নেই। ফোন ট্যাপ করছে। গরিব মানুষকে টাকা দেওয়ার বদলে আঁড়ি পাততে টাকা খরচ করা হচ্ছে। আপনার আমার সবার ফোন ট্যাপ করা হচ্ছে।’’

রান্নার গ্যাসের দাম দু’মাসে ৪৭ বার বেড়েছে। মমতার একুশের ভাষণ থেকে প্রশ্ন, ‘‘এত টাকা যাচ্ছে কোথায়? কেন মানুষ টিকা পাচ্ছেন না। পিএম কেয়ার্স কোথায় যাচ্ছে? কেউ কাউকে বিশ্বাস করতে পারছে না। মন্ত্রী, আমলা, বিরোধীদের নেতা, বিচারপতিদের ফোনে আড়ি পাতা হচ্ছে। গণতন্ত্রকে ভালবাসলে, প্রতিষ্ঠাতাদের ভালবাসলে যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো ভেঙে গুঁড়িয়ে দিত না বিজেপি। নির্বাচন, সংবাদমাধ্যম এবং বিচার বিভাগ, গণতন্ত্রের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ কাঠামোই ভেঙে দিয়েছে। গণতন্ত্রের বদলে দেশ জুড়ে স্পাইগিরি চালাচ্ছে বিজেপি।’’

প্রধানমন্ত্রী উদ্দেশে তোপ দেগে মমতার বক্তব্য, ‘‘গঙ্গায় মৃতদেহ ভাসছে আর প্রধানমন্ত্রী বলছেন উত্তরপ্রদেশ দেশের মধ্যে সেরা রাজ্য। একটুই লজ্জা নেই। টিকা নেই, ওষুধ নেই, অক্সিজেন নেই, মৃতদেহ সৎকার পর্যন্ত করতে দিতে হচ্ছে না। আমরা গঙ্গা থেকে তুলে সৎকার করেছি। খালি বড় বড় কথা। আপনার ব্যর্থতা চূড়ান্ত। আপনাদের জন্য ৪ লক্ষ লোক মারা গিয়েছে। দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ন্ত্রণ কার যেত সঠিক সময় ব্যবস্থা নিলে। কিন্তু বাংলায় ডেইলি প্যাসেঞ্জারের মতে এসে গণতন্ত্র ধ্বংস করতেই ব্যস্ত ছিলেন আপনারা। বাংলার মানুষ বুঝিয়ে দিয়েছেন, স্বাধীনতা আন্দোলন হোক বা যে কোনও লড়াই, লড়তে প্রস্তুত বাংলা। সব রাজ্যকে বলব, একজোট হয়ে লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হন। জোট গড়ে তুলুন। এটাই ঠিক সময়। যত দেরি করবেন, ততই সময় নষ্ট হবে। আমি দিল্লি যাচ্ছি। শরদজি, চিদম্বরমে বলব বৈঠক ডাকলে আমরা যাব।’’

এর পরেই মমতার মন্তব্য, ‘‘খেলা একটা হয়েছে, খেলা আবার হবে। যত দিন বিজেপি-কে বিদায় করতে না পারি রাজ্যে রাজ্যে খেলা হবে।’’ মমতার একুশের ভাষণ: ‘‘সমস্ত জায়গায় খেলা হবে। ১৬ অগাস্ট খেলা দিবস হিসেবে পালিত হবে।’’

মমতার বক্তব্য..


(প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে)

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)