লোকসভা নির্বাচন পাখির চোখ, দলীয় কর্মীদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে কড়া বার্তা মমতার

মোদী-দিদি তরজা

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: লোকসভা নির্বাচন পাখির চোখ, তাই দলকে তৃণমূল স্তর থেকে ঢেলে সাজাতে চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই সাজানোর কাজে দলবিরোধী, জনবিরোধী কোনও কিছুকেই বরদাস্ত করা হবে না। বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম থেকে সেই বার্তাই অত্যন্ত কড়া ভাবে দিয়ে দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো।

এ দিন নেতাজি ইন্ডোরে তৃণমূলের বর্ধিত কোর কমিটির বৈঠক ছিল। সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলীয় কর্মীদের বুঝিয়ে দেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনে যে সমস্ত ত্রুটি-বিচ্যুতির কারণে তাঁর দলকে বেগ পেতে হয়েছে, আগামী লোকসভা নির্বাচনে তিনি আর সে সব বরদাস্ত করবেন না। সে কারণেই তিনি বেশ কয়েক দফা নিদান দিয়েছেন। সেখানে যেমন তিনি দলীয় কর্মীদের তোলাবাজি বন্ধের কথা বলেছেন, তেমনই পুরনো কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে কাজ করার নির্দেশও দিয়েছেন। পাশাপাশি মমতা জানিয়ে দিয়েছেন, যে নেতা নিজেকে দলের উপরে ভাবছেন তৃণমূলে তাঁর কোনও জায়গা নেই।

এক জায়গায় দুটো অফিস পাশাপাশি যেন না থাকে। দুই সংগঠনের অনুষ্ঠানও যেন এক দিনে না হয়। মনে রাখতে হবে, যুব তৃণমূল মূল সংগঠনের অধীনে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় দেখা গিয়েছে, তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে দলীয় কর্মীরা নির্দাল প্রার্থী হিসাবে ভোটে দাঁড়িয়ে পড়েছেন। অনেকে নির্দল প্রার্থী হিসাবে জিতেওছেন। ফলে দলের ভাঙন স্পষ্ট হয়ে দেখা দিয়েছে। সে কারণেই বিভিন্ন জায়গায় দলের ফল অত্যন্ত খারাপ হয়েছে। লোকসভা নির্বাচনে যাতে তেমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়, সে বিষয়ে সতর্ক করেছেন মমতা। তাঁর দাওয়াই, জনসংযোগ বাড়াতে হবে। যে নেতার জনসংযোগ নেই তাঁকে দল ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী।

মহেশতলায় জিতল তৃণমূল, দ্বিতীয় স্থানে বিজেপি

ছাত্রসংগঠনের নেতাদেরও সতর্ক করেছেন মমতা। এ দিন তিনি জানান, ছাত্র সংগঠন আসলে ছাত্ছাত্রীদের পাশে থাকার জন্য। নানা সুবিধা-অসুবিধায় তাদের পাশে দাঁড়ানোই সংগঠনের কাজ। কিন্তু, ছাত্র সংগঠনের নামে টাকা তোলা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তৃণমূল নেত্রী। সেই তোলাবাজি বন্ধ করার নির্দেশ দেন তিনি। পাশাপাশি যুব তৃণমূলের নেতাদেরও সতর্ক করেছেন মমতা। জেলার নেতাদের মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে তাঁদের। এমনকি, যেখানে তৃণমূল পার্টি অফিসের পাশে যুব-র কার্যালয় রয়েছে, সেখানে তা রাখা যাবে না বলে এ দিন জানিয়ে দিয়েছেন মমতা। তাঁর কথায়, ‘‘এক জায়গায় দুটো অফিস পাশাপাশি যেন না থাকে। দুই সংগঠনের অনুষ্ঠানও যেন এক দিনে না হয়। মনে রাখতে হবে, যুব তৃণমূল মূল সংগঠনের অধীনে।’’

মমতার এ দিনের আগ্রাসী ভাষণের নিশানায় বিজেপি-ও ছিল। কেন্দ্রীয় শাকদলের বিরুদ্ধে তিনি রাজ্যে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলেছেন। পাশাপাশি, কংগ্রেস এবং সিপিএমের বিরুদ্ধে বিজেপি-র হাত ধরার কথাও বলেছেন তিনি। সব নিলিয়ে এ দিনের সভা থেকে মমতা যা বললেন, তাতে একটা বিষয় স্পষ্ট, ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচন পাখির চোখ তাঁর।