মাঝেরহাট ব্রিজ ভেঙে পড়ার ২৭ ঘণ্টা পর উদ্ধার আরও একটি দেহ

মাঝেরহাট ব্রিজমাঝেরহাট ব্রিজ। চলছে উদ্ধারকাজ।

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: মাঝেরহাট ব্রিজ ভেঙে পড়ার প্রায় ২৭ ঘণ্টা পর ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার হল আরও এক জনের দেহ। মৃতের নাম প্রণব দে। তাঁর বাড়ি মুর্শিদাবাদে।

বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ ব্রিজের ভাঙা অংশের উত্তর-পশ্চিম প্রান্তে কংক্রিটের চাঙড় সরিয়ে রপ্রণবের দেহের সন্ধান মেলে। ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স (এনডিআরএফ) এবং কলকাতা পুলিশের উদ্ধারকারীরা ওই দেহ উদ্ধার করেন। প্রাথমিক ভাবে, দেহটি জোকা-বিবাদীবাগ মেট্রো প্রকল্পের নির্মাণ শ্রমিক প্রণব দের বলে চিহ্নিত করেছেন তাঁর পরিবারের লোকজন। দেহ উদ্ধারের পর তা সোজা নিয়ে যাওয়া হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত দু’জনের মৃত্যু হল এই সেতু দুর্ঘটনায়। সোমবার ওই দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিলেন বেহালার শীলপাড়ার বাসিন্দা সৌমেন বাগ।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে আরও এক জনের ওই ধ্বংসস্তূপের তলায় আটকে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। তাঁর খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছেন উদ্ধারকারীরা। সেতু ভেঙে পড়ার পরই মেট্রো প্রকল্পের নির্মাণ শ্রমিকরা জানিয়েছিলেন, তাঁদের দুই সহকর্মীর কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। ব্রিজের ভাঙা অংশের তলাতেই চাপা পড়েছিল শ্রমিকদের থাকার অস্থায়ী ঝুপড়ি। প্রণব এবং আরও এক জন শ্রমিক ওই সময়ে সেখানে ছিলেন। মেট্রো কর্মীদের আশঙ্কা ছিল ওরা দুু’জনই আটকে পড়েছেন সেতুর ভাঙা অংশের তলায়। রাতেই এনডিআরএফের কর্মীরা তাঁদের প্রশিক্ষিত কুকুরদের সাহায্যে একটি নির্দিষ্ট জায়গা চিহ্নিত করেন।

দুবাই থেকে নিউইয়র্কগামী বিমানে অসুস্থ ১০০ যাত্রী

রাত থেকেই  তাঁরা ইলেকট্রিক ড্রিল মেশিনের সাহায্যে তাঁরা ছোট ছোট গর্ত করে ভেতরে তল্লাশি চালাচ্ছিলেন। বুধবার সেই উদ্ধারকার্য প্রথম দিকে খুব ধীর গতিতে চলে। কারণ, ধ্বংসস্তূপ সরানোর জন্য বড় ক্রেন বা জেসিবি মেশিন ব্যবহার করা যাচ্ছিল না। উদ্ধারকারীরা ভেঙে যাওয়া ব্রিজের মধ্যে কার্যত একটি সুরঙ্গ তৈরি করে নির্দিষ্ট একটি জায়গায় পৌঁছনোর চেষ্টা করেন।

গত কাল যখন সেতুটি ভেঙে পড়ে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তখন দার্জিলিঙে ছিলেন। দার্জিলিং হিল বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্বোধন করার কথা ছিল তাঁর। সেই কাজ সেরে উত্তরবঙ্গ সফর কাটছাঁট করেই এ দিন বিকালে কলকাতা চলে এসেছিলেন মমতা। বিমানবন্দর থেকে সরাসরি তিনি পৌঁছে গিয়েছিলেন মাঝেরহাট সেতুতে। গোটা জায়গাটা ঘুরে দেখার পর মমতা ত্রাণ ও উদ্ধার কাজের প্রশংসা করেন। তাঁর কথায়, ‘‘কাল ঘটনা ঘটার পর থেকে গোটা টিম, কলকাতা পুলিশ, ডিএমজি, এনডিআরএফ, সকলে খুব ভাল কাজ করেছে।’’ স্থানীয় মানুষ উদ্ধারকাজে যে ভাবে হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন, মুখ্যমন্ত্রী তার প্রশংসা করেন।

ঠিক কী কারণে সেতু ভেঙে পড়ল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে তিনি ইঙ্গিত দেন। কলকাতার অনেক সেতুর কাগজপত্র ঠিক মতো খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন। মেট্রো রেলের কাজের জন্যও এই মাঝেরহাট সেতুর ক্ষতি হয়ে থাকতে পারে বলেও মুখ্যমন্ত্রী ইঙ্গিত দেন। তিনি বলেন, ‘‘এখানে মেট্রোর কাজ হচ্ছিল। পাইলিং-এর সময়ে খুব কম্পন হয়েছে। স্থানীয়েরাও বলতেন, মনে হয় যেন ভূমিকম্প হচ্ছে। এটা হয়। কলকাতা মেট্রোর কাজের সময় উত্তর কলকাতা বা সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ের দিকে এ রকম হত। এটা প্রাকটিক্যাল। আমরা কোনও সম্ভাব্য কারণকেই ছোট করে দেখতে চাই না। সবটাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’