কলকাতা পুরসভা: শোভন বিদায়ে ফিরহাদ নয়া মেয়র, ডেপুটি হবেন অতীন

কলকাতা পুরসভাকলকাতা পুরসভা-র নয়া মেয়র হবেন ফিরহাদ হাকিম।

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: কলকাতা পুরসভা নতুন মেয়র পাচ্ছে। শুধু তাই নয়, দায়িত্ব নিচ্ছেন নতুন ডেপুটি মেয়রও। আর সবটাই হচ্ছে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ইস্তফার কারণে।

মঙ্গলবার রাজ্য মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন। মাঝে একটা দিন ছেড়ে বৃহস্পতিবার কলকাতা পুরসভা থেকেও বিদায় নিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। মেয়র পদ থেকেও দিয়ে দিলেন ইস্তফা। তার পরেই এ দিন সন্ধ্যায় আলিপুরে উত্তীর্ণ ভবনে নতুন মেয়র নির্বাচনের ঘণ্টাটা বাজিয়ে দিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এ দিন সেখানে পুরসভার সকল কাউন্সিলরকে নিয়ে বৈঠক ডাকা হয়েছিল। সেখানে শোভন-সহ পাঁচ জন কাউন্সিলর ছাড়া বাকি সকলেই উপস্থিত ছিলেন। মমতা তাঁদের কাছে পুর-দলের নেতার নাম প্রস্তাব করতে বলেন। একমাত্র নাম হিসাবে সেখানে উঠে আসে ফিরহাদ হাকিমের নাম। সেই নাম সমর্থনও করেন অনেকে। এর পর ডেপুটি লিডার হিসাবে অতীন ঘোষের নাম প্রস্তাবিত হয়। বর্তমানে পুরসভার ডেপুটি মেয়র যিনি, সেই ইকবাল আহমেদ অসুস্থ থাকার কারণে তাঁকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হচ্ছে বলে তৃণমূল সূত্রে জানানো হয়েছে।

বৈশাখীর অসম্মান মেনে নিতে পারছিলেন না বলেই ক্ষমতা ছেড়েছেন মন্ত্রী শোভন 

আইন মেনে নোটিস জারি করে নতুন মেয়র নির্বাচনের জন্য ৭-১০ দিন সময় লাগবে বলে জানিয়ে দেন মমতা। তত দিন পুরসভার কাজ অফিসাররই চালিয়ে নেবেন বলে আশ্বাস দেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ইস্তফার সঙ্গে সঙ্গেই মেয়র ইন কাউন্সিলের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু, ওই কাউন্সিলে যারা আছেন, তাঁদের কাজ চালিয়ে যেতে নির্দেশ দিয়েছেন দলনেত্রী। নতুন মেয়র দায়িত্ব নিয়েই বাকিটা করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

এ দিন সকালে ব্যকক্তিগত নিরাপত্তারক্ষীর হাতে ইস্তফাপত্র পুরসভার চেয়ারপার্সন মালা রায়ের কাছে পাঠিয়ে দেন শোভন। মালাদেবী সেই ইস্তফাপত্র পেয়েই জানিয়ে দেন, ইস্তফা গৃহীত হয়েছে। এর পর এ দিন দুপুরে নবান্নে ফিরহাদ এবং অতীনকে ডেকে পাঠান মমতা। সেখানে ঘণ্টাখানেকের বৈঠক হয়। নবান্ন সূত্রে খবর, সেখানেই মমতা ওই দু’জনকে দায়িত্ব নেওয়ার কথা বলেন। এর পর সন্ধ্যায় উত্তীর্ণ বৈঠকে দলনেতা হিসাবে ওই দু’জনের নাম স্থির হয়।

ফিরহাদ এই মুহূর্তে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী। তবে তিনি কলকাতা পুরসভা-র  কোনও ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নন। তিনি মেয়র হলে ৬ মাসের মধ্যে তাঁকে কোনও ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর হিসাবে জিতে আসতে হবে। সে ক্ষেত্রে ১১৭ নম্বর ওয়ার্ড থেকে তিনি দাঁড়াতে পারেন। কারণ ওই ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলরের মৃত্যুর পর সেখানে উপনির্বাচনের দিন ঘোষণা করা হয়েছে। তবে, এ দিন শোভনও জানিয়েছেন, এমন কেউ যদি মেয়র হন, যিনি কাউন্সিলর নন, তবে দলের নির্দেশ পেলে তিনি নিজের ওয়ার্ড ছেড়ে দিতে রাজি। সে ক্ষেত্রে কাউন্সিলর পদ থেকেও তিনি ইস্তফা দেবেন। তবে সবটাই দল চাইলে করবেন বলে জানিয়েছেন শোভন।

এ দিনই বিধানসভায় পুরআইনে সংশোধনী এনে বিল পাশ হয়েছে। বর্তমান আইন অনুযায়ী কাউন্সিলর নন, এমন কোনও ব্যক্তি কলকাতা পুরসভা-র মেয়র হতে পারবেন না। কিন্তু, নয়া সংশোধিত আইনে কাউন্সিলর নন এমন কেউ মেয়র হলে তাঁকে ৬ মাসের মধ্যে কোনও ওয়ার্ড থেকে জিতে আসতে হবে।