কসবার শীলা চৌধুরী খুন, খুনি তাঁর ঘরেই সাফাইয়ের কাজ করা বছর আঠেরোর যুবক!

বালির স্তুপের নিচে উদ্ধার বিবস্ত্র তরুণীর দেহ

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: কসবার শীলা চৌধুরী খুন হয়েছেন। তাঁকে প্রথমে দেওয়ালে মাথা ঠুকে, পরে বালিশ চাপা দিয়ে খুন করা হয়। এই ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

রবিবার কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দাপ্রধান প্রবীণ ত্রিপাঠী জানিয়েছেন, সাফাইয়ের কাজ করা বছর আঠেরোর যুবক শম্ভু কয়াল এবং তার সঙ্গী এক নাবালক এই খুন করেছে। দু’জনেই গ্রেফতার হয়েছে। পুলিশ জানায়, শম্ভু এ বছর উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছে। গোয়েন্দারা জানান, শীলাদেবীকে মাটিতে ফেলে বছর পনেরোর ওই কিশোর পা চেপে ধরে। শম্ভু মহিলার মাথা ক্রমাগত মেঝেতে ঠুকেছিল। পরে তাঁর শ্বাসরোধও করা হয়।

প্রবীণ জানান, শম্ভুর থেকে নেওয়া ২৭,০০০ টাকা শোধ করছিলেন না শীলাদেবী। পুলিশের দাবি, তা ফেরত না পেয়েই শম্ভু তাঁকে খুন করে। তবে শম্ভুর সঙ্গে শীলাদেবীর ‘ঘনিষ্ঠ’ সম্পর্ক ছিল বলেও পুলিশের একাংশের দাবি। খুনের পিছনে আরও কোনও কারণ আছে কি না, তা-ও দেখা হচ্ছে।
টেগোর পার্কের ওই ফ্ল্যাটে একা থাকতেন শীলাদেবী (৫৪)। স্বামী বিশ্বজিৎ ১৭ বছর আগে ছেলে সায়মকে নিয়ে ক্যালিফোর্নিয়া চলে যান। পাঁচ বছর আগে সেখানে মৃত্যু হয় তাঁর। শনিবার শীলাদেবীর মৃত্যুর পরে তাঁর বড়দা সায়মকে ঘটনাটি জানান। সায়ম জানিয়ে দেন, তিনি কলকাতায় আসবেন না। পুলিশ জানায়, কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মী শীলাদেবীর জীবনযাত্রা ছিল বিলাসবহুল। রোজগারের টাকায় কুলিয়ে উঠতে পারতেন না। বন্ধু তাপস পালের থেকেও টাকা নিতেন।

পুলিশের দাবি, শীলাদেবীর মৃত্যুটি দুর্ঘটনা বলে সাজানোর চেষ্টা করে শম্ভু। বসার ঘরে শীলাদেবীর দেহ যেখানে পড়েছিল, রান্নাঘর থেকে গ্যাস সিলিন্ডার ও আভেন বার করে সেখানে রাখে। সিলিন্ডার অন করে পাইপটি আভেন থেকে পুরো না খুলে একটু লাগিয়ে রাখে। ওই পাইপ থেকে একটি লম্বা দড়ি বেঁধে তিনতলার বারান্দা থেকে ঝুলিয়ে দেয়। মৃতার পায়ের কাছে একটি নাইটিতে আগুন লাগিয়ে, শীলাদেবীর ৭০০০ টাকা নিয়ে দরজা টেনে নেমে যায়। পুলিশের দাবি, শম্ভুর পরিকল্পনা ছিল, নীচে গিয়ে দড়িটা টানলেই পাইপ খুলে আসবে। সেখান থেকে গ্যাস বেরিয়ে নাইটির আগুনে গিয়ে পড়বে। সিলিন্ডার ফেটে পুড়ে যাবে দেহ। কিন্তু শম্ভু দড়ি টানতেই তা ছিঁড়ে গিয়ে পরিকল্পনা ভেস্তে যায়।

অর্জুন রামপালের ডিভোর্স হল কেন?

শনিবার পুলিশকে শম্ভু জানিয়েছিল, শীলাদেবী তাকে ‘সস’ কিনতে বলেছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনা সাজানোর জন্য শম্ভু পুঁই শাক কিনে বিকেলে ফ্ল্যাটের কলিং বেল মেরে নীচে নেমে আসে। তখন তার সঙ্গে দেখা হয় তাপসবাবুর। তাঁর কাছেই ফ্ল্যাটের দ্বিতীয় চাবি থাকত। তাঁর সঙ্গে শম্ভু আবার ফ্ল্যাটে যায়। দরজা খুলে দেখা যায়, শীলাদেবী মেঝেতে পড়ে। খবর পেয়ে ডিসি (এসএসডি) সন্তোষ নিম্বলকরের নেতৃত্বে তদন্তে নামে পুলিশ। আসেন গোয়েন্দাপ্রধানও। প্রথম থেকেই সন্দেহের নিশানায় ছিল শম্ভু। তাকে টানা জেরাতেই রহস্য উদ্ঘাটিত হয়।