গড়িয়াহাটের জোড়া খুন, রহস্য উন্মোচিত হলেও আততায়ী অধরা

গড়িয়াহাটের জোড়া খুনপ্রতীকী চিত্র

জাস্ট দুনিয়া ব্যুরো: গড়িয়াহাটের জোড়া খুন মামলায় রহস্য উন্মোচিত হয়েছে বলে দাবি করলেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্র। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, ‘‘আমাদের গোয়েন্দা বিভাগ এবং অন্য অফিসাররা মিলে গড়িয়াহাটের জোড়া খুনের ঘটনার সমাধান করেছেন। এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আরও কয়েক জনকে গ্রেফতার করা বাকি। সবাই গ্রেফতার হলে আমরা জানিয়ে দেব।’’ রবিবার গড়িয়াহাটের কাঁকুলিয়া রোডের একটি বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় সুবীর চাকী এবং রবীন মণ্ডল নামে দু’জনের রক্তাক্ত দেহ। কর্পোরেট-কর্তা সুবীর খড়্গপুর আইআইটির প্রাক্তনী। তিনি জোকা আইআইএম-এও পড়াশোনা করেছেন। বিত্তশালী সুবীরের গাড়িচালক ছিলেন রবীন।

এই ঘটনায় বুধবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবার থেকে মিঠু হালদার নামে এক পরিচারিকাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ দিন তাকে আলিপুর আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। এই মিঠুই খুনের ঘটনার মূল ষড়যন্ত্রকারী বলে জানা গিয়েছে গোয়েন্দা সূত্রে। পাশাপাশি জানা গিয়েছে, ওই খুনের ঘটনায় মিঠুর বড় ছেলে ভিকিও জড়িত। শুধু তাই নয় ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে ভিকি খুন করেছে সুবীর-রবীনকে, এমনটাই জানা গিয়েছে।

গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, ভিকি আগে থেকেই জমি-বাড়ির দালালির সঙ্গে যুক্ত ছিল। করোনাকালের আগে সুবীরের মা কাঁকুলিয়া রোডের বাড়িতেই থাকতেন। কিন্তু করোনা আবহে তিনি মা-কে তাঁর নিউটাউনের বাড়িতে নিয়ে যান। সেই সময় ঠিক করেন কাঁকুলিয়া রোডের বাড়ি বিক্রি করে দেবেন। সেই মতো খবরের কাগজে বিজ্ঞাপনও দেন। সেই বিজ্ঞাপন নজরে পড়ে ভিকির।

সে বাড়ি কেনার আগ্রহ দেখিয়ে সুবীরের সঙ্গে যোগাযোগ করে। কিন্তু প্রায় দেড় কোটি টাকা দাম চাওয়ায় ভিকির আর এই বাড়ি কেনা হয়নি। কিন্তু তখনই সে ঠিক করে ফেলে, বিত্তশালী সুবীরের টাকাপয়সা লুঠ করবে। সেই মতো সে পরিকল্পনাও করে। এ সব বেশ কয়েক মাস আগের কথা। ইতিমধ্যে কলকাতায় একটি সংস্থায় সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি নিয়ে ডায়মন্ড হারবার থেকে চলে আসে ভিকি।

তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, এর পর সুবীরের সঙ্গে যোগাযোগ করে ভুয়ো পরিচয় দিয়ে। বাড়ি কেনার প্রস্তাব দেয় সে। এর পর রবিবার বাড়ি দেখতে যাওয়ার কথাবার্তা পাকা হয়। সেই মতো রবিবার বাড়ি দেখাতে যান সুবীর। তাঁকে গাড়ি করে সেখানে নিয়ে যান রবীন। বাড়ি দেখতে এসে সুবীরের পরে থাকা আংটি এবং মানি পার্স ভয় দেখিয়ে কেড়ে নেয় ভিকি। সুবীর সেই সময় তাকে চিনতে পারেন। এর পরেই সুবীরকে ছুরি দিয়ে আঘাত করে সে। রবীন চিৎকার শুনে সেখানে এলে তাঁকেও মেরে ফেলা হয়।

গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, ভিকি একা নয়, ওই সময় ঘটনাস্থলে আরও তিন-চার জন ছিল। খুনের পর তারা সবাই ঢাকুরিয়া স্টেশনে চলে যায়। সেখানে তখন তাদের জন্য অপেক্ষা করছিল মিঠু। তার হাতেই রক্তমাখা জামাকাপড় দিয়ে কাজে চলে যায় ভিকি। মিঠু ফিরে যায় ডায়মন্ড হারবারে। বুধবার সেখান থেকেই তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে রহস্য উন্মোচিত হলেও ভিকি এবং তার সঙ্গীসাথীদের এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। তার খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চলছে।

প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)