সাপ ধরতে পাইথনের পেটে চলে যাচ্ছিলেন জলপাইগুড়ির ফরেস্ট রেঞ্জার

সাপ ধরতে পাইথনের পেটেসাপ গলায় সেই ফরেস্ট রেঞ্জার.

জাস্ট দুনিয়া ব্যুরো: সাপ ধরতে পাইথনের পেটে চলে যাচ্ছিলেন।কলকাতা শহর থেকে থেকে ৬০০ কিলোমিটার দুরের জলপাইগুড়ি জেলার গ্রামে হঠাৎ শোরগোল। দেখা গিয়েছে এক বিশালাকার পাইথন। রবিবারের ঘটনা। জানা যায় সেই পাইথন নাকি পর পর খেয়ে ফেলছে গৃহপালিত ছাগল। সেই খবর পেয়ে গ্রামে ছুটলেন জঙ্গলের রেঞ্জার। ও তাঁর সহকারি।

সেখানেই তিনি দেখা পেলেন সেই পাইথনের। যার দৈর্ঘ ১৮ ফুট আর ওজন ৪০ কেজি। এই ক্ষেত্রে সাধারণত সেই সাপকে বক্সের মধ্যে ধরে গভীর জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু ফরেস্ট রেঞ্জারের মতলবটা ঠিক তেমন ছিল না। তিনি গ্রামবাসীদের কাছে হিরো হতে চেয়েছিলেন বোধ হয়। তাই নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে সেই পাইথনকে নিজেই হাত দিয়ে ধরলেন সেই ফরেস্ট রেঞ্জার। এবং সেখানেই থামলেন না। সেই ৪০ কেজি ১৮ ফুটের পাইথনকে নিজের গলায় জড়িয়ে মোবাইল ক্যামেরার সামনে জুত করে পোজও দিলেন।

যদিও সেই অবস্থা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই সেই পাইথন সাময়িক ধাক্কা সামলে নিজের শক্তি প্রদর্শন করতে শুরু করল। রেঞ্জারের আদিখ্যেতা তার নিশ্চই পছন্দ হয়নি। তাই এ বার পাইথন মশাই রেঞ্জারের গলা ক্রমশ জড়িয়ে ধরতে শুরু করে। নড়াচড়াও করতে থাকে রেঞ্জারের গলা থেকে শরীর বেয়ে নামতেও থাকে। তখন কিন্তু ভয় পেয়ে যান হিরো রেঞ্জার।

গরমে ‘কাঁপছে’ কলকাতা এবং গোটা রাজ্য

এ বার তিনি গ্রামের সেই ভিড় থেকে বেরিয়ে পড়ার চেষ্টা করেন। এর পরই শুরু হয়ে যায় গ্রামবাসীদের হুরোহুরি। ততক্ষণে সেই পাইথন আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ফেলেছে রেঞ্জারকে। পিছন থেকে জড়িয়ে ফেলেছে মুখ। যিনি লেজটি ধরেছিলেন তাঁর হাত থেকেও ছিটকে গিয়েছে পাইথনের লেজ। পরিস্থিতি তখন প্রায় নিয়ন্ত্রণের বাইরে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই লড়াইয়ে সফল রেঞ্জার।

ফরেস্টের ড্রেসেই থাকা একজন ততক্ষণে চলে এসেছিলেন রেঞ্জারকে বাঁচাতে। ভিডিও ক্যামেরা যিনি করছিলেন তিনি হয়ত ততক্ষণে ভয়ে তা বন্ধ করেছেন। কিন্তু স্টিল ছবি উঠতেই থাকে। অল্পের জন্য প্রাণে বাঁচলেন হিরো রেঞ্জার। সেই সময় শোনা যায়, আসতে আসতে রেঞ্জার তাঁর সহকারিকে বলছেন, ‘‘লেজটা ধর, লেজটা ধর।’’ তার পর তিনি বলেন, ‘‘ঠিক আছে, সব ঠিক আছে।’’

এর পর সেই পাইথনকে সাহিব বাড়ি গ্রামের কাছে বৈকুন্ঠপুর জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হয়। অনেকেই মেনে নিয়েছেন ভয়ে প্রায় হৃদয় মুখে চলে এসেছিল সবার। ভেবেছিলেন, ফরেস্ট রেঞ্জারকে আর বাঁচানো যাবে না। পশ্চিমবঙ্গল ফরেস্ট মিনিস্টার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।