লালগোলার কৃষ্ণপুরে একের পর এক ট্রেনে আগুন, বিক্ষোভ-অশান্তিতে নাজেহাল রাজ্য

লালগোলার কৃষ্ণপুরে একের পর এক ট্রেনে আগুনলালগোলার কৃষ্ণপুরে একের পর এক ট্রেনে আগুন

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: লালগোলার কৃষ্ণপুরে একের পর এক ট্রেনে আগুন, বিক্ষোভ-অশান্তিতে নাজেহাল রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা। গোটা দিন জুড়ে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ চলছিল। রেল অবরোধের সঙ্গে রাস্তা রোকো, ইট-পাটকেল ছোড়ার পাশাপাশি কয়েক জায়গায় বাসে আগুন লাগানোর ঘটনাও ঘটেছে।

শনিবার বিকেল থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু হয় দক্ষিণ-পূর্ব রেলের সাঁতরাগাছিতে। তবে, সবচেয়ে খারাপ চেহারা নেয় মুর্শিদাবাদ জেলা। পূর্ব রেলের লালগোলা এবং কৃষ্ণপুর স্টেশনে জ্বালিয়ে দেওয়া হয় একাধিক ট্রেন। আগুন লাগানো হয় লালগোলা স্টেশনে। একই সঙ্গে সুতিতে বাস পুড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি সামশেরগঞ্জ থানায় হামলা চালানো হয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আইনভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিলেও গোটা পরিস্থিতিকে প্রশাসনের ব্যর্থতা হিসেবেই দেখছে রাজ্যের বিরোধী শিবির।


রাজ্যের আরও খবর পড়তে ক্লিক করুন

উদ্বিগ্ন মমতা এ দিন বলেন, ‘‘গণতান্ত্রিক পথে আন্দোলন করুন। কিন্তু আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। পথ অবরোধ, রেল অবরোধ করবেন না। সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বরদাস্ত করা হবে না। যাঁরা গন্ডগোল করছেন, রাস্তায় নেমে আইন হাতে তুলে নিচ্ছেন, তাঁদের কাউকে ছেড়ে দেওয়া হবে না। বাসে আগুন লাগিয়ে, ট্রেনে পাথর ছুড়ে, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করলে, আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

এ দিন বিকেলে লালগোলার আগের স্টেশন কৃষ্ণপুরে থামিয়ে দেওয়া হয় একটি ট্রেনকে। যাত্রীদের নামিয়ে দিয়ে সেই ট্রেনে আগুন লাগিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা। পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ফাঁকা ট্রেনও জ্বলতে দেখা যায়। লালগোলা স্টেশনে আগুন লাগানো হয় রেলের সম্পত্তিতে। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক নিখিল চক্রবর্তী জানিয়েছেন, সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত কৃষ্ণপুরে দাঁড়িয়ে থাকা ৫টি রেকে আগুন লাগানো হয়েছে। এ ছাড়াও লালগোলা এবং কৃষ্ণপুর স্টেশনেও আগুন লাগানো হয় বলে জানিয়েছেন তিনি।

এ দিন সকাল থেকে হাওড়ার ডোমজুড়ের সলপ মোড়ে ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ চলে। কোনা এক্সপ্রেসওয়েতে টায়ার জ্বালিয়ে দেখানো হয় প্রতিবাদ। বেশ কয়েকটি সরকারি বাসে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠেছে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে। বিক্ষোভকারীদের হঠাতে গেলে পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পাল্টা লাঠিচার্জও করতে হয় পুলিশকে। অন্য দিকে, মুর্শিদাবাদের সুতিতে তিনটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা।

একই সঙ্গে দক্ষিণ-পূর্ব এবং পূর্ব রেলের বিভিন্ন স্টেশনে ট্রেন অবরোধ করা হয়। শিয়ালদহ ডিভিশনের বারাসত-হাসনাবাদ শাখায় বিক্ষোভের জেরে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায় সকাল সাড়ে ৬টা থেকে। হাসনাবাদ শাখার সোঁদালিয়া-লেবুতলা স্টেশনের মাঝে অবরোধ করা হয়। শিয়ালহদ দক্ষিণ শাখার লক্ষ্মীকান্তপুর-নামখানা লাইনে রেলের ওভারহেড তারে কলাপাতা ফেলে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে। সকাল ৮টা থেকেই ওই শাখায় ট্রেন চলাচল বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।

মালদহ ডিভিশনের আজিমগঞ্জ শাখাতেও বিক্ষোভের জেরে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বিভিন্ন স্টেশনে আটকে পড়ে বহু ট্রেন। যাত্রীদের হয়রানির শিকার হতে হয়। বাতিল করা হয় একাধিক দূরপাল্লার ট্রেন। কিছু ট্রেন অল্প দূরত্বে চালানো হয়। আজিমগঞ্জ শাখার বাসুদেবপুরে হল্ট স্টেশনে আগুন ধরিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা। খড়্গপুর শাখার সাঁকরাইল স্টেশনে বিক্ষোভকারীরা ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন।


(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)