বিজেপিকে সরাতে ব্রিগেড, বিরোধীরা তুলল স্লোগান, ‘মোদী হঠাও, দেশ বাঁচাও’

বিজেপিকে সরাতে ব্রিগেড

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: বিজেপিকে সরাতে ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে তৃণমূলের সমাবেশে হাজির হলেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তের প্রায় ২৫টি দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। শনিবারের সেই মেগা সভায় সকলেই আগামী লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে ধরাশায়ী করতে একে অপরের হাত ধরে চলার কথা বললেন। বার্তা দিলেন বিরোধী জোটের। যে জোট একত্রিত হয়ে কেন্দ্রে গড়বে নয়া সরকার।

তবে সেই সরকারের মুখ কে হবেন, তা নিয়ে যদিও এ দিনের সভা কোনও সিদ্ধান্তের কথা শোনায়নি। বরং সভা থেকে একাধিক নেতা জানিয়েছেন, জোটের প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, সেটা  নির্বাচনের পরে ঠিক হবে। এই মুহূর্তে সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে ভোটে লড়াটাই লক্ষ্য তাঁদের। বিজেপি বিরোধী ‘একত্রিত ভারত’-এর যে ছবি এ দিন দেখল ব্রিগেড, তাতে খুশি তৃণমূল-সহ ওই সব দলের নেতৃত্ব।

আম আদমি পার্টির অরবিন্দ কেজরিওয়াল, প্রাক্তন বিজেপি নেতা অরুণ শৌরী, প্রাক্তন বিজেপি নেতা যশবন্ত সিন্‌হা, কংগ্রেসের অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি, লোকসভার বিরোধী নেতা কংগ্রেসের মল্লিকার্জুন খাড়্গে, ডিএমকে নেতা স্ট্যালিন, কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী এইচডি কুমার স্বামী, তাঁর বাবা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচডি দেবেগৌড়া, জম্মু-কাশ্নীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুখ আবদুল্লা, তাঁর ছেলে ওমর আবদুল্লা, টিডিপি নেতা চন্দ্রবাবু নায়ডু, এনসিপি-র শরদ পওয়ার, এলজেডি নেতা শরদ যাদব, আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব, সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব, বহু জন সমাজ পার্টির সতীশ মিশ্র— এঁদের সঙ্গেই এক মঞ্চে দেখা গেল জিগ্নেশ মেবাণী, হার্দ্যিক পটেল, জয়ন্ত চৌধরী, প্রফুল পটেল, বিজেপি নেতা শত্রুঘ্ন সিন্‌হা, হেমন্ত সরেনকেও। এত জন হেভিওয়েট নেতাকে মঞ্চে মোদী বিরোধিতায় সরব হতে দেখা গেল। সব শেষে বললেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

তৃণমূলের ব্রিগেড সমাবেশ: সভাস্থল পরিদর্শন করে মমতা বললেন ‘আমি শুধু ওঁদের কথা শুনব’

ব্রিগেড ভর্তি লাখো লাখো মানুষের সামনে সকলেই তাঁদের বিজেপিকে নিয়ে আশঙ্কার কথা তুলে ধরেছেন। মোদী সরকার ফের ক্ষমতায় এলে ভারতের সংবিধান যে বিজেপি বদলে ফেলতে পারে, তা নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন তাঁরা। পাশাপাশি উঠে এসেছি বেকার সমস্যা, নোটবন্দি বা জিএসটির মতো বিষয়ও। বিজেপি সরকার যে কোনও ক্ষেত্রেই মানুষের উপকার করেনি, সে কথা বার বার তুলে ধরেছেন ওই নেতারা।

অখিলেশ-তেজস্বীরা এক ধাপ এগিয়ে দাবি করেছেন, বিজেপি জোট করেছে সিবিআই-ইডি-র সঙ্গে।  কিন্তু তাঁদের এই জোট মানুষের। সেই জোটের কাছে বিজেপি হারতে বাধ্য বলেও দাবি করেছেন তাঁরা।

এ দিনের সভা থেকে আগামী লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে হঠানোর পাশাপাশি দাবি উঠেছে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)-এ ভোট না করানোর দাবি। ফারুখ আবদুল্লা-চন্দ্রবাবু নায়ডুর মতো নেতারা ফের ব্যালট পেপার ফিরিয়ে নিয়ে আসার দাবি তুলেছেন।

মঞ্চে থাকা সকলেই বিজেপিকে সরানোর কথা, দেশের সংবিধান বাঁচানোর কথা, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার কথা বলেছেন। মমতা যেমন স্পষ্ট ভাবে বলেছেন, ‘অনেক হয়েছে অচ্ছে দিন, এ বার বিজেপিকে বাদ দিন’। মঞ্চে দাঁড়িয়ে সকলের সামনে বলেছেন, ‘‘মোদীবাবুর এক্সপায়ারি ডেট এসে গিয়েছে।’’ তেজস্বী যাদব বলেছেন, ‘‘বিজেপি ভাগাও, দেশ বাঁচাও।’’ শত্রুঘ্ন সিন্‌হা যেমন বলেছেন, ‘‘বাজপেয়ীজির সময়ে দেশে লোকশাহি চলত। এখন তানাশাহি চলে।’’

ব্রিগেডের সবার পর বিজেপি বিরোধী সব নেতাদের নিয়ে আলিপুরের একটি সভাগৃহে চা-চক্রের ব্যবস্থা করা হয়। সেখানেও এই সব দলের নেতারা বিজেপিকে রুখতে জোট বাঁধার কথা বলেছেন।

(বাংলার আরও জানতে ক্লিক করুন এই লিঙ্কে)