মালদহে বাবা-মা-ঠাকুমা-বোনকে খুন করে বাড়িতেই পুঁতে রেখেছিল ১৯ বছরের আসিফ

মালদহে বাবা-মা-ঠাকুমা-বোনকে খুনমালদহে বাবা-মা-ঠাকুমা-বোনকে খুন

জাস্ট দুনিয়া ব্যুরো: মালদহে বাবা-মা-ঠাকুমা-বোনকে খুন করে বাড়িতেই পুঁতে রেখেছিল ১৯ বছরের মহম্মদ আসিফ! তারই দাদা ২১ বছরের আরিফকেও খুনের চেষ্টা করেছিল সে। কিন্তু ঘটনাচক্রে  আরিফ বেঁচে যায়। মাস চারেক পালিয়ে বেড়ানোর পর শনিবার সেই আরিফই পুলিশে খবর দেয়। তার পর মালদহের কালিয়াচক থানার পুরাতন ১৬ মাইল এলাকায় তাঁদের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় চার জনের কঙ্কালসার দেহ। গ্রেফতার করা হয় আসিফকে। আরিফের বয়ানেও অসঙ্গতি পাওয়া গিয়েছে বলে তাঁকেও তদন্তের স্বার্থে আটক করেছে পুলিশ।

গত ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে নিখোঁজ ছিলেন ১৬ মাইলের জাওয়াদ আলি, তাঁর মা আলেকজান খাতুন, স্ত্রী ইরা বিবি, মেয়ে আরিফা খাতুন এবং বড় ছেলে মহম্মদ আরিফ। ছোট ছেলে আসিফেরও সন্ধান মিলছিল না। শুক্রবার রাতে আচমকাই মাস চারেক পর কালিয়াচক থানায় হাজির হন আরিফ। তিনি দাবি করেন, মালদহে বাবা-মা-ঠাকুমা-বোনকে খুন করে বাড়িতেই পুঁতে রেখেছে তাঁর ভাই আসিফ। তাঁকেও খুন করার চেষ্টা করে। কিন্তু তিনি কোনও রকমে পালিয়ে কলকাতায় চলে যান।

এর পর আরিফকে নিয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। আরিফের দেখানো জায়গা থেকেই উদ্ধার হয় তাঁর বাবা-মা-ঠাকুমা এবং বোনের কঙ্কালসার দেহ। তাঁদের বাড়ি লাগোয়া একটা বিশাল গোডাউনের মতো ঘরে কবরের মতো খুঁড়ে রাখা ট্যাঙ্ক থেকে ওই দেহ উদ্ধার হয়। গোডাউনের মতো বাড়ির ছাদ ছিল না। ফলে বর্ষার জলে ওই গর্তগুলো বুজে যায়। সেখান থেকেই ওই চার দেহ উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতার করা হয় আসিফকে।

জেরায় এবং জিজ্ঞাসাবাদে আসিফ ও আরিফ জানিয়েছেন, ২৮ ফেব্রুয়ারি দুপুরে বাবা-মা-ঠাকুমা-বোন এবং বড়দাদাকে ফলের রস খেতে দেয় ছোট ভাই। ওই রস খেয়ে সকলেই অচৈতন্য হয়ে পড়ে। এর পর সকলকে শ্বাসরোধ করা হয় মুখে লিউকোপ্লাস্ট আটকে। তার পর ফেলে দেওয়া হয় ওই গর্তে। আরিফের দাবি, তাঁর লিউকোপ্লাস্ট কোনও ভাবে খুলে যায়। এবং তাঁর জ্ঞান ফিরে আসে। এর পর আসিফের সঙ্গে তাঁর ধস্তাধস্তি হয়। তার পর আরিফ ওই বাড়ি থেকে পালিয়ে কলকাতায় চলে আসে। কিন্তু এখানেই প্রশ্ন উঠেছে, এত দিন কলকাতায় কোথায় ছিল আরিফ? কেন তিনি ঘটনার কথা কাউকে জানাননি? কেন পুলিশের কাছে যাননি?

অন্য দিকে তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, আসিফ বিটকয়েনে জুয়া খেলত। কম্পিউটারে বিশেষ ভাবে দড় আসিফ হ্যাকিংয়েও হাত পাকিয়েছিল। কিছু দিন আগে একটি হ্যাকিংয়ের ঘটনায় পুলিশ তাকে আটকও করে। কিন্তু তথ্য প্রমাণের অভাবে ছেড়ে দিয়েছিল। তার সঙ্গে বাবা জাওয়াদ আলির সম্পর্ক বেশ ভাল ছিল। ছোট ছেলের আবদারে জাওয়াদ বেশ কয়েক বিঘের লিচুবাগান সম্প্রতি বিক্রিও করে দেন বলে জানা গিয়েছে। আরিফের দাবি, কিছু দিন আগে আসিফ বাবার কাছে ২৫ লাখ টাকা চায়। তা নিয়েই বিরোধ তৈরি হয়েছিল। সেই রাগেই ছোটভাই সকলকে খুনের পরিকল্পনা করে বলে আরিফের দাবি।

মালদহের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘একই পরিবারের চার জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে। ঘটনায় এক জনকে গ্রেফতার এবং অভিযুক্তের দাদাকে আটক করা হয়েছে। তদন্ত শেষে সবটা জানা যাবে।’’

প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)