বিজেপি বলল: বন্‌ধ শান্তিপূর্ণ, উড়িয়ে দিল তৃণমূল

বিজেপি বললশুভেন্দু অধিকারী, দিলীপ ঘোষ এবং পার্য চট্টোপাধ্যায়

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: বিজেপি বলল, বন্‌ধ শান্তিপূর্ণ ভাবে সফল হয়েছে। আর তৃণমূল বলল, বন্‌ধ ব্যর্থ।

উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিম— রাজ্যের একাধিক জায়গায় বন্‌ধকে ঘিরে বুধবার উত্তেজনা দেখা গিয়েছে। সবচেয়ে বেশি গন্ডগোল নজরে পড়েছে উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরেই। এই ইসলামপুরের দাড়িভিট হাইস্কুলের ঘটনাকে কেন্দ্র করেই বিজেপি এ দিন ১২ ঘণ্টার বাংলা বন্‌ধের ডাক দিয়েছিল।

১২ ঘণ্টার বন্‌ধ ডাকলেও এ দিন বিকেলে কলকাতায় বিজেপি সদর দফতরে বসে দলের রাজ্য সভাপতি সেই বন্‌ধ তুলে নিলেন নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার আগেই। তিনি এ দিন বলেন, ‘‘কোচবিহার থেকে কলকাতা হয়ে কাকদ্বীপ পর্যন্ত সমস্ত জেলায়, সমস্ত শহরে সাধারণ মানুষ এই বন্‌ধকে সমর্থন করেছেন। আমরা বলেছিলাম, শান্তিপূর্ণ বন্‌ধ করতে। ইসলামপুরের দুই ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় আমরা বন্‌ধ ডেকেছিলাম। এটা একটা স্পর্শকাতর বিষয়। রাস্তায় আমরা কাউকে আটকাইনি। বাধাও দিইনি। অথচ তৃণমূলের লোকজন আমাদের মিছিলে, আমাদের কর্মীদের উপর আক্রমণ করেছে। মহিলা কর্মীদেরও ছাড় দেওয়া হয়নি। কারও মাথা ফেটেছে। হাত পা ভেঙেছে। তা সত্ত্বেও মানুষ শান্তিপূর্ণ ভাবে বন্‌ধ করেছেন। স্কুল চলছে, ছাত্রছাত্রী নেই। বাস চলছে, যাত্রী নেই। রাস্তায় লোকজন নাই। কোথাও কোনও মানুষের ক্ষোভ বিক্ষোভ আমাদের চোখে পড়েনি। বন্‌ধের সমর্থনে মানুষ সাড়া দিয়েছেন। তাঁরাও মর্মাহত ছিলেন। তারাও নিঃশব্দে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এ ধরনের শান্তিপূর্ণ বন্‌ধ বাংলার ইতিহাসে কেউ কখনও দেখেনি।’’

বিজেপির বাংলা বন‌্ধ মোটের উপর শান্তিপূর্ণ, শহরে প্রভাব না পড়লেও বিঘ্নিত শহরতলীর রেল চলাচল

মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্য সরকার এমনকি শাসক দল তৃণমূল এই বন্‌ধের বিরোধিতা করে এসেছে প্রথম থেকেই। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই মুহূর্তে বিদেশ সফরে ইতালিতে রয়েছেন। সেখান থেকে এ দিন তিনি বলেন, ‘‘বন্ধ্যাত্বক বন্‌ধ ব্যর্থ করার জন্য বাংলার মানুষকে অভিনন্দন। বিহার-ঝাড়খণ্ড থেকে জোর করে লোক ঢুকিয়ে বিজেপি ঝামেলা পাকানোর চেষ্টা করেছে। কিন্তু সার্বিক ভাবে বন্‌ধ ব্যর্থ হয়েছে। ওরা বাস ভাঙচুর করেছে। এটা জমিদারি নাকি! সরকারি জিনিস ভাঙচুর করে কেউ যেন পার না পায় সে জন্য পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলেছি। বিজেপির দিন শেষ। হিংসাত্মক রাজনীতি এবং সন্ত্রাস ছাড়া ওদের আর কোনও কাজ নেই। রাজনৈতিক ভাবে ওরা সম্পূর্ণ নীতিহীন।’’

এ দিন দুপুরে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী তথা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘‘মানুষ টোটালি এই কর্মনাশা দিবসকে প্রত্যাখ্যান করেছে। বাংলা এখন উন্নয়ন চায়। বাংলা এখন কর্মানাশা বন্‌ধ চায় না। এরা প্রতিবাদটাই শেখেনি। ভাল শিক্ষকের কাছে থাকলেই যে ভাল ছাত্র তৈরি হবে তা তো নয়। পরিবহণ মন্ত্রী ইতিমধ্যেই বলেছেন, বাস পোড়ানো এবং ভাঙচুর করার ঘটনায় আমরা ব্যবস্থা নেব।’’

পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী যদিও এ দিন ইসলামপুরে ছিলেন। দাড়িভিটে মৃত ছাত্রদের বাড়িতে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু, বিজেপির অবরোধের জেরে তিনি ইসলামপুর থেকেই কলকাতার উদ্দেশে রওনা দেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘এনবিএসটিসির ভাঙাচোরা বাসের সিসি ক্যামেরা থেকে ছবি সংগ্রহ করে নিয়েছি। সকলকে জেলে পোরা হবে। এত টায়ার জ্বালাচ্ছিল কারা, বাস পোড়াচ্ছিল কারা? ১৭ জনকে ইতিমধ্যেই পুলিশ ধরেছে। তার মধ্যে পাঁচ জন বিহারের বাসিন্দাও রয়েছেন। ওঁরা এখানে কী করছিলেন, পুলিশ সব খতিয়ে দেখবে।’’