অভিযুক্ত অভিষেককুমার পাণ্ডে গ্রেফতার, আনন্দপুরে যৌন হেনস্থার ঘটনার তিন দিন পর

অভিযুক্ত অভিষেককুমার পাণ্ডে গ্রেফতার

জাস্ট দুনিয়া ব্যুরো: অভিযুক্ত অভিষেককুমার পাণ্ডে গ্রেফতার হলেন। আনন্দপুরে যৌন হেনস্থার ঘটনায় গত তিন দিন ধরে পুলিশ তাঁকে খুঁজছিল। তবে প্রথমে তাঁর আসল নাম জানত না পুলিশ। নিগৃহীতা পুলিশের কাছে অভিযোগে অন্য নাম বলেছিলেন— অমিতাভ বসু। তাই প্রথম থেকে অমিতাভ বসু নামের এক ব্যক্তিকেই খুঁজছিল পুলিশ। পরে অভিযুক্তের গাড়ির সূত্র ধরে এই অভিষেক পাণ্ডের নাম আসে। কলকাতা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে দমদমের একটি গেস্ট হাউস থেকে অভিষেককে গ্রেফতার করা হয়েছে।

গত শনিবার রাতে মায়ের জন্মদিন পালন করে কালিকাপুরে নিজের বাড়িতে ফিরছিলেন নীলাঞ্জনা চট্টোপাধ্যায়, তাঁর স্বামী ও মেয়ে। মায়ের বাড়ি থেকে বেরতেই আনন্দপুরের আর আর প্লটের একটি আবাসনের সামনে অন্য একটি গাড়ি থেকে আর্তনাদ শুনতে পান তাঁরা। মেয়েটি বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করছিলেন। নীলাঞ্জনারা তাঁদের গাড়িটি আড়াআড়ি ওই গাড়ির সামনে দাঁড় করান। সেই সময় অন্য গাড়িটি থেকে এক তরুণীকে রাস্তায় ফেলে দেওয়া হয়। পালিয়ে যাওয়ার সময় নীলাঞ্জনার পায়ের উপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে দেওয়া হয়। পায়ের হাড় ভেঙে যাওয়ায় তিনি এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মার মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী নীলাঞ্জনাদের জানিয়েছেন, তাঁর চিকিৎসার সব খরচ রাজ্য সরকার বহন করবে।


বাংলার আরও খবর জানতে ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

নির্যাতিতা অভিযুক্তের আসল নাম এবং গাড়ির নম্বর জানা সত্ত্বেও পুলিশকে ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করেছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, অভিযুক্ত যুবকই তাঁর প্রেমিক। আর তার নাম অমিতাভ বসু নয়, অভিষেককুমার পাণ্ডে। এ দিন ঘটনাস্থল এবং অভিষেকের গাড়ি পরীক্ষা করে দেখেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা। গাড়ির দরজায, ড্যাশবোর্ড এবং পিছনের সিটে রক্তের দাগ মিলেছে বলে জানা গিয়েছে। তরুণীকে মারধর করার ফলেই রক্ত বেরিয়েছে, আর সেখান থেকেই ওই দাগ লেগেছে বলে পুলিশের অনুমান। ধস্তাধস্তিরও কিছু চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে।

এ দিন রাতে অভিযুক্ত অভিষেককুমার পাণ্ডে গ্রেফতার হলেও সকালে আনন্দপুর থানায় ডেকে পাঠানো হয় তাঁর মা ও জামাইবাবুকে। আনন্দপুর থানার পাশাপাশি এই ঘটনার তদন্তে নেমেছে লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগকেও। অভিষেকের মা দাবি করেছেন, তাঁর ছেলের সঙ্গে অভিযোগকারিণীর দীর্ঘ দিনের সম্পর্ক। দু’জনের বিয়ে হওয়ারও কথা ছিল। অভিষেক পাণ্ডের পাড়া সূত্রে পুলিশ জেনেছে, বছর পাঁচেক আগে ওই যুবকের এক বার বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু আট মাস পরেই বিয়ে ভেঙে যায়। অভিযোগ, স্ত্রীকে মারধর করতে‌ন অভিষেক। তদন্তে পুলিশ জেনেছে, অভিযোগকারিণী আদতে জলপাইগুড়ির বাসিন্দা। বছরখানেক আগে তাঁর সঙ্গে আলাপ হয় অভিষেকের। তাঁর বাড়িতে ওই তরুণীর এবং তরুণীর ফ্ল্যাটে অভিযুক্তের নিয়মিত যাতায়াত ছিল।


(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)