জাস্ট দুনিয়া ব্যুরো: মনসা মঙ্গল পালা গান গাওয়ার সময়েই সাপের কামড়ে মৃত অভিনেত্রী। মঙ্গলবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার হাসনাবাদ থানার বরুণহাট বাজারের কাছাকাছি একটি এলাকায়।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃত মহিলা কালীদাসী মণ্ডলের বয়স ৬৩। তাঁর বাড়ি পার হাসনাবাদের কদমতলা গ্রামে। হাসপাতাল কাছে থাকা সত্ত্বেও সাপের ছোবলের পর দীর্ঘ তিন ঘন্টা পর সেখানে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। কালীদাসী দেবী যে দলে পালা গান গাইতেন, তারই সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এক ওঝা। সেই দয়াল ঠাকুর-সহ দু’জন পালিয়েছে। এলাকায় মনসা মঙ্গলের ভাসান গানের জন্য কালীদাসী দেবীর বেশ নামডাক হয়েছিল।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আগে মাঠে কাজ করতেন কালীদাসী। গত কুড়ি বছর ধরে তিনি ভাসান গানই গেয়ে বেড়ান। গত কয়েক মাস ধরে তিনি জীবন্ত সাপ নিয়ে মনসার ভূমিকায় অভিনয় করেন। হাসনাবাদ, হিঙলগঞ্জ-সহ জেলার বিভিন্ন জায়গায় তাঁর পালাগানের দল অভিনয় করে বেড়াত। মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ রাতে হাসনাবাদের বরুণহাটে গলায় কেউটে এবং হাতে পদ্মগোখরো সাপ নিয়ে মনসা সেজে পালাগান করছিলেন কালীদাসী। সাপ নিয়ে গান করে দর্শকদের কাছ থেকে টাকা তোলার সময়ে হঠাৎ কঁকিয়ে ওঠেন কালীদাসী। হাত দেখিয়ে বলেন, সাপে ছোবল মেরেছে।
আফগানিস্তান-তাজিকিস্তান বর্ডার ভূমিকম্পের উৎসস্থল
সাপের ছোবলে তিনি যখন আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন, তখন তাকে হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে ওই দলেরই ওঝা দয়াল ঠাকুর ঝাড়ফুঁক শুরু করেন। হাসপাতালে নিয়ে যেতেও তিনি তিনি বারণ করেন। কালীদাসী দেবীকে স্থানীয় একটি ধর্মস্থানে নিয়ে গিয়ে ঝাড়ফুঁক করতে শুরু করেন তিনি। ঘটনাস্থল থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরেই হাসপাতাল ছিল। হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে ঝাড়ফুঁক করা হয়। তিনি যখন আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন, তখন বিপদ বুঝেই নাকি ওঝা দয়াল ঠাকুর পালিয়ে যান। রাত প্রায় সাড়ে দশটা নাগাদ স্থানীয় লোকজন কালীদাসী দেবীকে হিঙলগঞ্জের ব্লক হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
তাঁর পরিবারের লোকজন জানিয়েছেন, বাড়তি টাকার জন্য বিষহীন সাপ নিয়ে গান করতেন কালীদাসী। কিন্তু, কোথা থেকে বিষধর সাপ এল, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। কেনই বা ওই ঘটনার পর পালাদলের দু’জন পালাল? তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।