বিপর্যয় মোকাবিলা আইন প্রয়োগ হওয়া উচিত প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধেও: অভিষেক

যুব তৃণমূল ছেড়ে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়

জাস্ট দুনিয়া ব্যুরো: বিপর্যয় মোকাবিলা আইন প্রয়োগ হওয়া উচিত প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধেও। ইয়াস পরবর্তী পরিস্থিতি দেখতে বুধবার পাথরপ্রতিমা গিয়ে এই মন্তব্য করেন যুব তৃণমূলের সভাপতি তথা ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সদ্য প্রাক্তন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিপর্যয় মোকাবিলা আইনে শো-কজ করছে কেন্দ্রীয় সরকার। গত সোমবার ওই চিঠি আলাপনের হাতে এসে পৌঁছয়। ওই দিনই তাঁর চাকরির মেয়াদের শেষ দিন ছিল। কিন্তু অবসরের পর মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে নিজের মুখ্য উপদেষ্টা পদে নিযুক্ত করেন।

এ প্রসঙ্গে অভিষেক বলেন, ‘‘এ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী যা বলার বলেছেন। কেন্দ্র-রাজ্য প্রসঙ্গে আমার কিছু বলা উচিত নয়। তবে এটুকু বলতে পারি, বিপর্যয় মোকাবিলা আইনের অজুহাত দেখিয়ে যারা শোকজ করছে, তারা তো আগে দায়ী। ওই আইনে আগে দায়ী করা উচিত নির্বাচন কমিশনকে। রাজনৈতিক দলগুলোকে। আমি তো মনে করি যারা নির্বাচনের দায়িত্বে ছিলেন, প্রত্যেক আধিকারিকের বিরুদ্ধে ওই আইন প্রয়োগ করা উচিত। প্রত্যেক রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে, আমাদেরকে ধরেই বলছি, ওই আইন প্রয়োগ করা উচিত। ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে করা উচিত। ভারতের প্রধানমন্ত্রী বিরুদ্ধে প্রয়োগ করা উচিত।’’

রাজ্যে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির জন্য অভিষেক দায়ী করেছেন রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং নির্বাচন কমিশনকে। তিনি বলেন, ‘‘যখন দেশে ৪ লাখ মানুষ করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন, তখন মধ্যপ্রদেশ-দিল্লির নেতারা এখানে ৫০ হাজার লোক নিয়ে রোড শো করছে।’’ তাঁর প্রশ্ন, ‘‘ওঁদের বিরুদ্ধে বিপর্যয় মোকাবিলা আইন প্রয়োগ হবে না কেন? কেন্দ্রীয় সরকার যদি নিরপেক্ষ হয়, তা হলে আপনি আমাকেও চিঠি দিন, ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকেও চিঠি দিন। কেউ তো বারণ করছে না, হওয়া উচিত।’’

এর পরেই আলাপন প্রসঙ্গ তোলেন অভিষেক। তিনি বলেন, ‘‘যিনি আজ মানুষের জন্য কাজ করছেন এবং এমন একটা সময়, যখন বাংলা উভয় সঙ্কটের সম্মুখীন, এক দিকে কোভিড পরিস্থিতি, আর দিকে ইয়াসের মতো ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড়, সেখানে ত্রাণ, পুনর্বাসনের কাজ যাঁরা করছেন, যাঁর নেতৃত্বে কোভিড টাস্ক ফোর্সগুলো কাজ করছে, যাঁর নেতৃত্বে এই সাইক্লোনের টাস্কফোর্সগুলো কাজ করছে, তাঁকে দিল্লিতে অ্যাটাচ করে দেওয়া হল! তাঁকে বিপর্যয় মোকাবিলা আইনের অজুহাত দেখিয়ে শো-কজ করা!’’

এর পরেই অভিষেকের মন্তব্য, ‘‘আরে আপনারা নিজেদের মুখটা আয়নায় দেখুন। আজকে এই নির্বাচন কমিশনের ব্যর্থথার জন্য কত মানুষ মারা গিয়েছেন। কেন বাংলায় ৮ দফায় নির্বাচন হবে? আজকে গোটা ভারত জুড়ে যে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ, এটা তো নির্বাচন কমিশনের ব্যর্থতা। ব্যর্থতার নিদারুণ উদাহরণ তো আমরা দেখেছি। তাই এই দ্বিচারিতার কোনও জায়গা নেই।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘চ্যারিটি বিগিনস অ্যাট হোম বলে একটা কথা আছে না, আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে শো-কজ করার আগে তাঁরা নিজেদের মুখটা আগে আয়নায় দেখুক। মুখ্য নির্বাচন আধিকারিককে শো-কজ করা উচিত আগে। যেখানে মানুষকে আবেদন রেখে প্রধানমন্ত্রীর বলা উচিত, আপনারা বাড়িতে থাকুন, সুস্থ  থাকুন, রাস্তায় বেরোবেন না, কোভিড বাড়ছে, সেখানে তিনি এসে বলছেন, এত বড় সভা আমি জীবনে দেখিনি। আমার খুব ভাল লাগছে। এটা আমাদের দুর্ভাগ্য।’’

(প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে)

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)