অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়: স্ত্রীর ব্যাগে সোনা ছিল দেখাতে পারলে রাজনীতি ছেড়ে দেব

যুব তৃণমূল ছেড়ে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর স্ত্রী রুজিরা নারুলাকে নিয়ে রাজ্য রাজনীতি আপাতত সরগরম। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি পোর্টাল এবং সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়, বিদেশ থেকে সোনা নিয়ে আসার সময় কলকাতা বিমানবন্দরে শুল্ক দফতরের হাতে ধরা পড়েন রুজিরা। রবিবার বিকেলে এই প্রসঙ্গে প্রথম মুখ খুললেন অভিষেক। জানিয়ে দিলেন, তাঁর স্ত্রী রুজিরা নারুলার বিরুদ্ধে নিয়ম বহির্ভূত ভাবে বিদেশ থেকে সোনা আনার যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, তার কোনও সত্যতা নেই।

এ দিন বিকেলে ডায়মন্ড হারবারের বিদায়ী সাংসদ তথা এ বারের তৃণমূল প্রার্থী অভিষেক একটি ব্যক্তিগত সাংবাদিক বৈঠক ডাকেন। তাঁর কেন্দ্রের অন্তর্গত আমতলায় ওই বৈঠক ডেকেছিলেন তিনি। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘কেউ বলছেন দু’কিলো সোনা, কেউ বলছেন পঞ্চাশ হাজার ডলার নিয়ে আসছিল রুজিরা। অনেকে আবার বলছেন সরকারি কাজে বাধা দেওয়া হয়েছে। আমি তাঁদের বলছি, গোটা বিমানবন্দর সিসিটিভি ক্যামেরার আওতাধীন। দু’কিলো সোনা তো দূরের কথা, দু’গ্রাম সোনা ছিল দেখাতে পারলে আমি রাজনীতির আঙিনায় পা রাখব না।”

তিনি এ দিন প্রশ্ন তোলেন, রুজিরা যদি নিয়ম বহির্ভূত ভাবে সোনা নিয়ে আসেন, তা হলে তা বাজেয়াপ্ত করা হল না কেন? একই সঙ্গে তাঁর প্রশ্ন রুজিরা যদি শুল্ক দফতরের কাজে অসহয়তা করে থাকেন, তা হলে বিমানবন্দরের দায়িত্বে থাকা সিআইএসফ ডাকা হল না কেন? কেন তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হল? তাঁর কটাক্ষ, ‘‘চৌকিদার কী করছিল?’’

যুব তৃণমূলের সভাপতি অভিষেক এ দিন প্রশ্ন তুলেছেন, রুজিরা তাঁর স্ত্রী বলেই কি এমন হেনস্থা করা হয়েছিল? তাঁর অভিযোগের আঙুল ছিল কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে। দিল্লির নির্দেশেই গত ১৬ মার্চ কলকাতা বিমানবন্দরে রুজিরাকে হেনস্থা করা হয়েছিল বলে দাবি করেন অভিষেক। কিন্তু, দিল্লি কেন এমনটা করবে? প্রশ্ন ওঠার আগেই কারণ জানিয়ে দেন অভিষেক। তিনি বলেন, “অমিত শাহের বিরুদ্ধে মামলা করেছি। তাই কি এত গাত্র দাহ?” এর পরেই জুড়ে দেন, ‘‘রাজনৈতিক ভাবে মোকাবিলা করতে না পেরে আমার স্ত্রীকে আক্রমণ করছে। আমার পাঁচ বছরের মেয়েকে করবে!”

রাজ্য রাজনীতির আরও খবর পড়তে এখানে ক্লিক করুন

অভিষেকের আরও অভিযোগ, ওই দিন ব্যাঙ্কক থেকে ফেরার পথে কলকাতা বিমানবন্দরে তাঁর স্ত্রীর কাছে টাকা চাওয়া হয়। সেই টাকা দেওয়া হয়নি বলেই হেনস্থা করা হয়েছে। গোটাটাই পূর্ব পরিকল্পিত বলেও ঘনিষ্ঠ মহলে দাবি করেছেন তিনি। তিনি আরও দাবি করেন, ওই দিন বিমানবন্দরে গ্রিন চ্যানেল থেকে রুজিরাকে রেড চ্যানেলে নিয়ে যাওয়া হয়। গোটা ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখলেই ঘটনা স্পষ্ট হবে বলে দাবি করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘‘বিমানবন্দরে কী হয়েছে তার সিসিটিভি ফুটেজ বার করা হোক। যদি এক সেকেন্ডের ভগ্নাংশও দেখাতে পারে তা হলে রাজনীতি ছেড়ে দেব।”

ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ এ দিন, তাঁর স্ত্রী রুজিরার জন্ম এবং বড় হওয়া তাইল্যান্ডের ব্যাঙ্ককে। তাঁর পাসপোর্টটিও তাইল্যান্ডের। রুজিরা যে ভারতীয় ভাটার নন, সে কথাও এ দিন খোলসা করেছেন অভিষেক। কেন রুজিরা তাইল্যান্ড গিয়েছিলেন? অভিষেক ব্যাক্তিগত ওই সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছেন, মেডিক্যাল চেকআপের জন্য রুজিরা ব্যাঙ্কক গিয়েছিলেন।

বিরোধী দলের একাধিক নেতানেত্রী সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়া ওই খবরের পরিপ্রেক্ষিতে সোশ্যালমিডিয়ায় সমালোচনা করেন। অভিষেক তাঁদের অনেককেই আইনি নোটিস পাঠিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে অভিষেকের মন্তব্য, ‘‘একাধিক পোর্টাল এবং সংবাদমাধ্যম সর্বৈব মিথ্যা ওই খবরটি করেছে। তার ভিত্তিতেই বিজেপি, সিপিএম এবং কংগ্রেসের নেতারা আওয়াজ তুলছেন। আমি সবাইকে আইনি নোটিস পাঠিয়েছি।”

জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন