নতুন দায়িত্বে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, যুব নেতা থেকে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ইডির জেরা

জাস্ট দুনিয়া ব্যুরো: নতুন দায়িত্বে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আর তার জন্যই যুব তৃণমূল ছাড়লেন তিনি। তাঁকে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। অভিযেকের ছেড়ে দেওয়া পদ অর্থাৎ যুব তৃণমূলের সভাপতি করা হয়েছে অভিনেত্রী সায়নী ঘোষকে। শনিবার তৃণমূল ভবনে দলের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক ছিল। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ দলের শীর্ষ নেতৃত্ব, সাংসদ-বিধায়ক এবং বিভিন্ন স্তরের জনপ্রতিনিধিরা ওই বৈঠকে অংশ নেন। সেখানেই অভিষেক এবং সায়নী সম্পর্কে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই মিটিংয়ের আগে থেকেই অভিষেককে নিয়ে গুঞ্জন ছিল। মনে করা হচ্ছিলই অভিষেককে এবার বড় দায়িত্ব দেওয়া হবে। ঠিক তেমনটাই হল।

এক দল, এক পদ— দলের নতুন এই নীতি মেনেই অভিষেক এবং সায়নীকে এমন দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সায়নী বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলে যোগ দেন। তার পর তৃণমূল তাঁকে আসানসোল দক্ষিণ কেন্দ্রে প্রার্থী করে। যদিও ওই আসনে সায়নী বিজেপি-র অগ্নিমিত্রা পালের কাছে হেরে যান।

সম্প্রতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে আগের তুলনায় অনেকবেশি দায়িত্বশীল দেখাচ্ছিল। ইয়াস পরবর্তী সময়ে যে কাজটা এতদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে করতে দেখা গিয়েছে সেই ভূমিকায় দেখা যাচ্ছিল তাঁকে। ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় ঘুরে ঘুরে তিনি মানুষের অবস্থা দেখছিলেন এবং সরকারের তরফে সাহায্যের ব্যবস্থা করছিলেন। ইয়াসের দিনও তাঁকে তাঁর নিজের কেন্দ্রে দেখা গিয়েছিল। তার পর থেকে দীঘাসহ বিভিন্ন জায়গায় প্রতিদিন তিনি ঘুরছেন। মানুষের কষ্টের কথা শুনছেন এবং তাঁদের সুস্থ জীবন ফিরিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন। তাঁর এই সফর নিয়ে তৈরি হয়ে গিয়েছে তৃণমূলের বিজ্ঞাপনও। ক্রমশ তৃণমূলের মুখ হয়ে উঠছেন অভিষেক তা আরও একবার স্পষ্ট করে দিল এই পদ।

এদিন ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকেই যুব তৃণমূলের সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন অভিষেক। মনে করা হচ্ছে এই এক ব্যক্তি, এক পদ নীতি মেনেই অভিষেকের এই ইস্তফা। আর তার পরই তাঁর কাঁধে তুলে দেওয়া হয় সর্ব ভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের সম্পাদকের পদ। দলের সাংগঠনিক স্তরে বিপুল রদ বদলের ইঙ্গিত ছিলই। এদিন সেই মতো দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হল সকলকে। এদিনের বৈঠকে কড়া ভাষায় জানিয়ে দেওয়া হল, মন্ত্রীরা আর জেলা সভাপতি থাকতে পারবেন না। মন্ত্রীদের গাড়িতে লালবাতি লাগানো যাবে না। কারও নাম যেন কোনও দুর্নীতিতে না জড়ায়। ফেসবুক-সোশ্যাল মিডিয়ায় যা ইচ্ছে পোস্ট করা যাবে না। সম্প্রতি ঘন ঘন সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট ও লাইভ করে নেত্রী তোপের মুখে পড়লেন মদন মিত্র।

এদিন আর যাঁদের দায়িত্ব দেওয়া হল, সর্বভারতীয় মহিলা তৃণমূলের সভাপতি হলেন কাকলি ঘোষ দস্তিদার। ব্যারাকপুরের বিধায়ক রাজ চক্রবর্তীকে রাজ্য তৃণমূলের সংস্কৃতি শাখারসভাপতি করা হল। প্রাক্তন বিধায়ক পূর্ণেন্দু বসুর হাতে দলের খেতমজুর শাখার সভাপতির দায়িত্ব তুলে দেওয়া হল। তৃণমূলের শ্রমিক সগঠনের সর্বভারতীয় সভাপতি হলেন দোলা সেন। আর শ্রমিক সংগঠনের রাজ্য সভাপতি হলেন প্রাক্তন বাম সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক করা হল কুনাল ঘোষকে।

এদিন কোর কমিটির বৈঠকে হাজির ছিলেন, সুব্রত বক্সী, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, কাকলি ঘোষ দস্তিদার, ববি হাকিম, গৌতম দেব, অরূপ বিশ্বাস, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। ওয়াকিং কমিটির বৈঠকের পর জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে বার্চুয়াল বৈঠক করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জেলা নেতৃত্বেও বেশ কিছু রদবদল করা হল এদিন।

(প্রতিদিন নজর রাখুন জাস্ট দুনিয়ার খবরে)

(জাস্ট দুনিয়ার ফেসবুক পেজ লাইক করতে ক্লিক করুন)