তরুণীর পচাগলা দেহ সুটকেসে, সস্ত্রীক ব্যাঙ্ক ম্যানেজার ধৃত

সকাল সাড়ে আটটা। দুর্গাপুর থানায় একটি ফোন আসে। এক মহিলা কণ্ঠ জানায়, তাদের ফ্ল্যাটে লিফটের উল্টো দিকে একটি বেওয়ারিশ সুটকেস পড়ে রয়েছে।

সঙ্গে সঙ্গেই বেনাচিতির রূপালি অ্যাপার্টমেন্টে পৌঁছয় পুলিশ। লিফটের সামনে থেকে তারা উদ্ধার করে একটি সুটকেস। আর তা খুলতেই বেরোয় এক তরুণীর পচাগলা নগ্ন দেহ। এর পর সামনের ফ্ল্যাটের বাসিন্দা এক ব্যাঙ্ক ম্যানেজার এবং তাঁর স্ত্রীকে প্রথমে আটক করে পুলিশ। পরে বৃহস্পতিবার বিকালে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে।

স্টেট ব্যাঙ্কের মেজিয়া শাখার ওই ম্যানেজারের নাম রাজীব কুমার। তিনি ১২ তলার রূপালি অ্যাপার্টমেন্টের একটি ফ্ল্যাটে সস্ত্রীক ভাড়া থাকেন। স্ত্রী মনীষাও স্টেট ব্যাঙ্কের ফুলঝোরা শাখার সহকারী ম্যানেজার। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের ধারণা, ওই তরুণীকে খুন করে সুটকেস বন্দি করা হয়েছিল। তবে ঠিক কবে ওই তরুণী মারা গিয়েছেন, ময়নাতদন্তের পরেই তা জানা যাবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

মৃত তরুণীর নাম শিল্পা অগ্রবাল (২৮)। তাঁর বাড়ি বাঁকুড়ার মেজিয়ায়। রাজীব যে শাখার ম্যানেজার, সেখানেই ‘ব্যাঙ্ক মিত্র’ হিসাবে কাজ করতেন শিল্পা। সেই সূত্রেই দু’জনের পরিচয়। গত শুক্রবার থেকে নিখোঁজ ছিলেন তিনি। তবে শনিবার সন্ধ্যা সওয়া ৭টা নাগাদ শেষ বার মোবাইলে পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন। তখন জানান, কিছু ক্ষণের মধ্যেই বাড়ি ফিরবেন। তার পর থেকে তাঁর সঙ্গে আর কোনও যোগাযোগ হয়নি পরিবারের।

কী ভাবে খুন হলেন শিল্পা? রাজীব এবং তাঁর স্ত্রী-ই কি এই খুনের সঙ্গে জড়িত? যদি অন্য কেউ খুন করে থাকে, তবে রাজীবের ফ্ল্যাটে সুটকেসবন্দি দেহ এল কী ভাবে? এ সবের হদিশ পেতে আপাতত রাজীব আর মনীষাকে জেরা করছে পুলিশ। তারা জানতে পেরেছে, গত ১০ তারিখ থেকে মনীষা ওই ফ্ল্যাটে ছিলেন না। ফিরেছেন সোমবার অর্থাৎ ১২ ফেব্রুয়ারি। সেই সময়েই কী শিল্পাকে ফ্ল্যাটে ডেকে এনে খুন করেছেন রাজীব? তদন্তে সবটাই খতিয়ে দেখছে পুলিশ।