উত্তপ্ত ভাঙড়, ১০ দিনের পুলিশি হেফাজতে আরাবুল

উত্তপ্ত ভাঙড়

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: উত্তপ্ত ভাঙড়। গোটা দিনই উত্তপ্ত থাকল এলাকা।  তার মধ্যেই আরাবুল ইসলামের বাড়ির পিছনের আমবাগান থেকে উদ্ধার হল কয়েকশো তাজা বোমা। অন্য দিকে শনিবার বারুইপুর আদালতে আরাবুলকে হাজির করানো হলে, তাঁকে ১০ দিন পুলিশি হেপাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।

এ দিন আদালতে হাজির করানো হলে বিচারকের সামনে আরাবুল বলেন, তিনি সম্পূর্ণ নির্দোষ। পাওয়ার গ্রিড বিরোধী প্রার্থীদের প্রচার মিছিলে হাফিজুল মোল্লা নামে এক ব্যক্তির গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা য়াওয়ার ঘটনায় তাঁর কোনও যোগ নেই বলেই দাবি করেছেন তিনি। এ দিন বারুইপুর থানা থেকে আদালতে যাওয়ার পথে আরাবুল সংবাদ মাধ্যমকে জানান, ওই ঘটনার সময় তিনি নতুনহাট এলাকায় ছিলেন না। তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে। গোটাটাই তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে জানাবেন বলেও জানিয়েছেন।

শুক্রবার রাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে আরাবুলকে তাঁর বাড়ির পিছনের একটি আমবাগান থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আরাবুলের দাবি, ঘটনার সময় তিনি ওখানে ছিলেন না। বিচারককে তিনি বলেন, তদন্ত করে প্রকৃত দোষীকে শাস্তি দেওয়া হোক। কমিটির লোকজন পরিকল্পনা করে ওই গুলির ঘটনা ঘটিয়েছে। ওদের গুলিতেই মারা গিয়েছে ওই যুবক।

শুক্রবার বারুইপুর মহকুমা আদালতে আরাবুলকে পেশ করা হলে বিচারক ১০ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। শুধু আরাবুল নয়। নতুনহাটে মিছিলে গুলি চালানোর ঘটনায় আরাবুল ইসলাম, তাঁর ছেলে হাকিবুল ও ভাই আজিজুর ইসলাম-সহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।

রাতেই গ্রেফতার আরাবুল ইসলাম

আন্দোলনকারীদের তরফে অলীক চক্রবর্তী অবশ্য আরাবুলের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, ওই ঘটনায় আরাবুল সরাসরি জড়িত। ঘটনার সময় আরাবুল ও তাঁর ছেলের গাড়ি দলীয় অফিসের সামনেই ছিল।

শুক্রবার নির্দল প্রার্থীর সমর্থনে মিছিল বার করেছিল জমি রক্ষা কমিটি। সেই মিছিলে হাফিজুলও ছিলেন। মিছিল বড় রাস্তায় উঠতেই তাঁদের উপর হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে আরাবুলের সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে। গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় হাফিজুলের। তার পরই ভাঙড়ে পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে রাতে গ্রেফতার করা হয় আরাবুল ও তাঁর এক সহযোগীকে। সারা রাত দেহ নিয়ে রাস্তা অবরোধের পর এ দিন সকালে হাফিজুলের দেহ কাটাপুকুর মর্গে পাঠানো হয়। ময়নাতদন্তের পর বিকালে ভাঙড়ে নিয়ে আসা হয় তাঁর দেহ।

এ দিন ভাঙড় ছিল উত্তপ্ত। এলাকাবাসীর মতে, আরাবুল ইসলামকে বাঁচানোর স্বার্থেই তাকে মুখ্যমন্ত্রী গ্রেফতার করিয়েছেন। এ দিন ভাঙড়ের ঘটনায় মৌলালি থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত প্রতিবাদ মিছিল করে সিপিএম। সেই মিছিলে দেখা গিয়েছে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র এবং বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসুকে। ভাঙড় জমি জীবিকা বাস্তুতন্ত্র ও পরিবেশ রক্ষা কমিটির তরফে শর্মিষ্ঠা চৌধুরীর অভিযোগ, সন্ত্রাস করে শাসক দলে ভোট বানচাল করার চেষ্টার পরিণতিতেই ভাঙড়ে হাফিজুল ইসলামের প্রাণ গিয়েছে। পুলিশের দাবি, এই খুনের ঘটনায় আরাবুলের জড়িত থাকার কিছু প্রমাণ মিলেছে। বাকিদেরও শীঘ্রই গ্রেফতার করা হবে।