লালগড়ে রয়্যাল বেঙ্গল রহস্য ফাঁস হওয়ার আগেই মিলল রক্তাক্ত বাঘের দেহ!

লালগড়ে রয়্যাল বেঙ্গল রহস্যলালগড়ে রয়্যাল বেঙ্গল রহস্য

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: লালগড়ে রয়্যাল বেঙ্গল রহস্য ফাঁস হওয়ার আগেই তার রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার হল। কাজেই জীবিত অবস্থায় তাকে নিয়ে যে রহস্য রোজ চারিয়ে যাচ্ছি‌ল জঙ্গলমহলে, শুক্রবার দেহ মেলার পর একই রকম ভাবে রহস্য তৈরি হল তার মৃত্যু নিয়েও।

এ দিন দুপুরে পশ্চিম মেদিনীপুরের বাঘঘরা জঙ্গলে রয়্যাল বেঙ্গলটির রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। একটি বল্লম বিঁধে ছিল তার মুখে। তবে, কী ভাবে ওই রয়্যাল বেঙ্গলের মৃত্যু হল তা এখনও স্পষ্ট নয়। তার দেহ ময়নাতদন্তের জন্য মেদিনীপুর নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে বন দফতর। তবে, গোটা ঘটনায় গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। নিশানায় বন দফতর।

ওই ছবিতে দেখা যায়, পাতা ঝরা মরসুমে বৈশাখী হাওয়ার মতো রাজকীয় ভঙ্গিমায় ঘুরে বেড়াচ্ছে পূর্ণবয়স্ক একটি বাঘ!

গত মার্চের ৩ তারিখ এ রকমই এক শুক্রবার বন দফতর হঠাৎ করে জানিয়েছিল জঙ্গলে তাদের পেতে রাখা ক্যামেরায় বাঘের ঘুরেফিরে বেড়ানোর ছবি ধরা পড়েছে। তার কিছু দিন আগে থেকেই এলাকায় মিলছিল পায়ের ছাপ। গরু-বাছুরও লোপাট হয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু, ক্যামেরার ছবি সামনে আসতেই সব অঙ্ক উল্টেপাল্টে গিয়ে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ওই ছবিতে দেখা যায়, পাতা ঝরা মরসুমে বৈশাখী হাওয়ার মতো রাজকীয় ভঙ্গিমায় ঘুরে বেড়াচ্ছে পূর্ণবয়স্ক একটি বাঘ!

এই সময়টায় আদিবাসীরা শিকার উৎসব পালন করে জঙ্গলমহলে। বাঘটি সেই উৎসবেরই শিকার হল কি না তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এর পর নানা জল্পনা শুরু হয়। বাঘ কোথা থেকে এল? কেনই বা এল? কী ভাবে তাকে ধরা যায়, তা নিয়েও নানা ফন্দিফিকিরের আয়োজন করে বন দফতর। ছাগল থেকে শুয়োর— সব কিছুই টোপ হিসাবে ব্যবহার করা হয়। নিয়ে আসা হয় সুন্দরবন থেকে কুকুর। বাঘ বিশেষজ্ঞ থেকে বন দফতরের অভিজ্ঞ কর্মীকেও আনা হয়। খাঁচা পাতা হয় জঙ্গলের বিভিন্ন জায়গায়। ওড়ানো হচ্ছিল ড্রোন। বিভিন্ন জায়গায় নতুন করে ক্যামেরা বসানো হয়। বাঘ ধরার ফাঁদে লক্ষ্য রাখতে গিয়ে দু’জন বনকর্মীর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। গাড়িতে পাহারা দেওয়ার সময় তাঁরা বাঘের ভয়ে সব জানলা বন্ধ করে শুয়েছিলেন। পরে স্বাস আটকে তাঁদের মৃত্যু হয়। কিন্তু, এত কিছুর পরেও বাঘ ধরা যায়নি।

বাঘ ধরতে গিয়ে বনকর্মীর রহস্যমৃত্যু, গোয়ালতোড়ে

এ দিন বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ যদিও বন দফতরের কোনও গাফিলতির কথা মেনে নিতে চাননি। তাঁর দাবি, বন দৱতর সব রকমের চেষ্টা করেছে। কী ভাবে মৃত্যু হল, তা-ও খতিয়ে দেখা হবে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলেই প্রকৃত কারণ বোঝা সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

এই সময়টায় আদিবাসীরা শিকার উৎসব পালন করে জঙ্গলমহলে। বাঘটি সেই উৎসবেরই শিকার হল কি না তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এর আগে বাঘের আক্রমণে বেশ কয়েক জন আহত হয়েছেন বলে দাবি উঠেছিল। এ দিন সকালেও ধেড়ুয়ার কাছে দু’জন জখম হয়েছেন। তাঁরা এখনও মেদিনীপুর মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন। এর পরেই বাঘের দেহ উদ্ধার করা হয়। ফের লালগড়ে রয়্যাল বেঙ্গল রহস্য দানা বাধল।