মরা পশুর মাংস ভাগাড় থেকে আমার-আপনার পাতে!

মরা পশুর মাংস

জাস্ট দুনিয়া ব্যুরো: মরা পশুর মাংস নিয়ে শোরগোল সর্বত্র। শুরুটা হয়েছিল বজবজ থেকে। শেষ কোথায়? সেটা বোঝা যাচ্ছে না।

এলাকায় কোনও পশু মারা গেলে, সাধারণ ভাবেই তা স্থানীয় ভাগাড়গুলিতে ফেলা হয়। সরকারি নিয়ম, হয় সেগুলি মাটিতে পুঁতে ফেলতে হবে অথবা আগুনে পুড়িয়ে দিতে হবে। কিন্তু বজবজের একটি পুর-ভাগাড়ে দেখা গেল, সেখানে ফেলে যাওয়া মৃত পশু কেটে তাদের চামড়া এবং মাংস আলাদা করে ফেলা হচ্ছে। তার পর সেই মাংস ট্যাক্সি করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে অন্যত্র। পরে জানা যায়, ওই মাংস বিক্রির জন্য যেত শিয়ালদহ এলাকার বাজারে। সেখানে টাটকা মাংসের সঙ্গে ওই ভাগাড়ের ওই মরা পশুর মাংস মিশিয়ে বিক্রি করা হত!

বজবজের ওই ভাগাড় থেকে যারা মাংস নিয়ে যাচ্ছিল, তাদের এক জন স্থানীয় পুরসভার কর্মী। অথচ পুরসভা জানতই না। তাদের কর্মীরা যে এমন কাজ করছেন, সেটা না জানাটা কি খুব স্বাভাবিক? প্রশ্নটা উঠেছে। ভাগাড়ের মরা পশুর মাংস ওই বাজার থেকেই তো পৌঁছে যেত, আমার আপনার ঘরে। রেস্তরাঁ বা হোটেলে। কাজেই, আমাদের পছন্দের কোনও মেনুতে যে ওই মাংস ছিল না, তা কি হলফ করে বলা যায়! যে দামে কলকাতা এবং শহরতলির দোকানগুলিতে মাংসের খাবারদাবার পাওয়া যায়, তাতে সন্দেহটা তো বাড়ছেই।

শিনা বোরা হত্যা মামলায় নতুন মোর

এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর কলকাতা পুরসভার কর্মীরা বিভিন্ন রেস্তরাঁ-হোটেলে ঢুঁ মেরেছেন। খাবারের নমুনা সংগ্রহ করে ফরেন্সিক পরীক্ষায় পাঠানো হয়েছে। কিন্তু, সেই তৎপরতা ঘটনার ভয়াবহতার চেয়ে নগন্য। আরও আগে কেন নড়েচড়ে বসা যায়নি? কেন ভাগাড়গুলিতে নজরদারি চালানো হত না? কেন হয় না? প্রশ্নগুলো সাধারণ নাগরিকদেরর মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে।

ওই মরা পশুর মাংস খেয়ে তো শরীর খারাপ হওয়ার কথা। চিকিৎসকেরাও তেমনটা বলছেন। না জেনে খেয়ে হয়তো অনেকেরই শরীর খারাপ হয়েছে। কিন্তু, কারণটা অন্য ভাবা হয়েছে। হয়তো অনেকে খাবারে বিষক্রিয়ায় মারাও গিয়েছেন। কারণ, হয়তো এই ভাগাড়ের মাংস! জবাবটা তো এখন আর পরিষ্কার হওয়ার নয়।

তবে, প্রশাসন যে খুব একটা গা ঝাড়া দিয়ে উঠেছে, তেমনটা নয়। নিউটাউনে এক মুরগির খামারে উদ্ধার হয়েছে কয়েকশো কিলোগ্রাম মাংস। সবটাই ফ্রিজারে রাখা ছিল। ওই খামারে মুরগি মারা গেলে নাকি ফেলা হত না। ওই খামারের মালিকের রেস্তরাঁ রয়েছে। সেখানেই ওই মাংস চালানো হত। আশপাশের অনেক রেস্তরাঁতে তা সাপ্লাইও করা হত। স্থানীয়রা বিষয়টা জানতে পেরে পুলিশকে খবর দেয়। তার পরেই প্রকাশ্যে আসে বিষয়টি। কিন্তু, প্রশাসন কেন স্বতপ্রণোদিত ভাবে তদন্তে নামছে না! এমন পচাগলা ভাগাড়ে ফেলে যাওয়া মরা পশুর মাংস কেন খেতে হবে মানুষকে? যাদের দেখার কথা তারাও কেন নীরব হয়ে বসে থাকবেন? জবাবটা মিলছে না।