বিজেপি নেতাকে প্রকাশ্যে ছুরি! অভিযুক্ত তৃণমূল

হাত ভাঙল তৃণমূল নেতার

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: বিজেপি নেতাকে প্রকাশ্যে ছুরি চালানোর দৃশ্য সবাই দেখল টিভিতে। যা দেখে চমকে উঠেছিলেন অনেকে। প্রকাশ্য দিনের আলোয়, ভিড়ে ভরা জেলাশাসকের কার্যালয় চত্বরে এক ব্যক্তিকে ছুরি দিয়ে আক্রমণ করা হচ্ছে। আশপাশের মানুষজন ঠেকানোর আগেই ওই ব্যক্তির শরীরে পিছন দিকের অংশ ছুরির আঘাতে জখম এবং রক্তাক্ত। ওই ব্যক্তির সাদা পাজামা আর গেরুয়া রঙের পাঞ্জাবি তত ক্ষণে ভিজে গিয়েছে রক্তে।

আহত ওই ব্যক্তির নাম কালোসোনা মণ্ডল। তিনি বীরভূম জেলার বিজেপি-র সাধারণ সম্পাদক। মঙ্গলবার দুপুরে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনার জন্য সিউড়িতে জেলাশাসকের দফতরে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে বেরনোর সময় তাঁর উপর ধারালো ছুরি নিয়ে আক্রমণ চালায় দুই ব্যক্তি। বিজেপি-র অভিযোগ, তৃণমূল কর্মীরাই ওই আক্রমণ চালিয়েছে। তৃণমূল যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছে এই ঘটনার সঙ্গে তাদের কোনও যোগ নেই।

ছবিটা যে শুধু সিউড়ির, তেমনটা নয়। গোটা রাজ্যেই আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে এমন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। সোমবারেই জারি হয়েছে নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি। শুরু হয়েছে মনোন।নপত্র জমা দেওয়ার কাজও। কিন্তু, সেই সঙ্গেই বেড়ে চলেছে সংঘর্ষের ঘটনা। বেশির ভাগ জায়গাতেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিজেপি আক্রমণ চালানোর অভিযোগ এনেছে। এ দিন যেমন সিউড়ির পাশাপাশি বিজেপি কর্মীদের উপর আক্রমণের অভিযোগ উঠেছে হুগলির আরামবাগ, খানাকুলে। বীরভূমের সিউড়িতে। মুর্শিদাবাদের ডোমকল, লালবাগে।

কেন্দ্রের আর্জি শুনবে সুপ্রিম কোর্ট

এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ আরামবাগ মহকুমাশাসকের দফতরে মনোনয়নপত্র জমা দিতে গিয়েছিলেন খানাকুলের বিকাশ লক্ষ্মণ। মহকুমাশাসকের সামনেই দফতরের ভিতর থেকে তাঁকে মারতে মারতে টেনেহিঁচড়ে বাইরে বের করে আনা হয়। রাস্তায় দাঁড়িয়েও তাঁকে মারধর করতে দেখা যায়। পাশাপাশি হামলা চালানো হয় বিজেপি কর্মীদের উপর। আহত হন তপন মণ্ডল নামে বিজেপির প্রস্তাবক। বিজেপির দাবি, মিনিট কুড়ি ধরে তাণ্ডব চালায় শাসক দলের কর্মী-সমর্থকেরা।

মুর্শিদাবাদের লালবাগেও মনোনয়নপত্র জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে তৃণমূল-বিজেপি। বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূল সমর্থকদের হাতে আক্রান্ত হন মুর্শিদাবাদের জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর ঘোষ। তাঁকে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়। বীরভূমের লাভপুরে বিডিও অফিসের সামনে তলোয়ার হাতে ঘোরাঘুরি করার অভিযোগ ওঠে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে।

রাজ্য বিজেপি নেতাদের দাবি, এ ভাবে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া প্রায় অসম্ভব। বিজেপি নেতা মুকুল রায় এ দিন রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে দেখা করেছেন। সঙ্গে ছিলেন শমীক ভট্টাচার্য এবং জয়প্রকাশ মজুমদারের মতো নেতাও। দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বিকালে রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর সঙ্গে দেখা করেন। আগামী কাল বুধবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজভবনে গিয়ে দেখা করবেন রাজ্যপালের সঙ্গে।

গোটা পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এরা (বিজেপি) বোধহয় আইনের শাসনকে ভয় পাচ্ছে।’’