পঞ্চায়েত নির্বাচনে মনোনয়ন শেষ দিনে জমা দিতেই পারল না বিরোধীরা!

পঞ্চায়েত নির্বাচনে মনোনয়ন জমা দেওয়া নিয়ে অশান্তি রাজ্য জুড়েপঞ্চায়েত নির্বাচনে মনোনয়ন জমা দেওয়া নিয়ে অশান্তি রাজ্য জুড়ে

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: পঞ্চায়েত নির্বাচনে মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন সোমবারেও অশান্তি অব্যাহত রইল রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায়। মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারলেন না বিরোধী শিবিরের প্রায় কোনও প্রার্থীই। সর্বত্রই শাসকদলের কড়া চোখ ঘোরাফেরা করেছে। নিশানায় ছিলেন বিরোধী দলের কর্মী, সমর্থক, প্রার্থী হতে চাওয়া ব্যক্তিদের পাশাপাশি সংবাদমাধ্যমের কর্মীরাও। আর এই প্রার্থী দিতে না পারার কারণে বীরভূমে প্রায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেলা পরিষদের দখল নিয়েছে তৃণমূল।

এ দিন সকালেই সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিয়েছিল, পঞ্চায়েত নির্বাচনে মনোনয়ন জমা দেওয়া নিয়ে বিরোধীদের সমস্ত অভিযোগ রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছেই করতে হবে। এ ব্যাপারে শীর্ষ আদালত কোনও ভাবেই নাক গলাবে না। বিচারপতি আর কে অগরওয়াল এবং বিচারপতি এ এম সাপরের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, নির্বাচনী পদ্ধতিতে তারা কোনও ভাবেই ঢুকবে না। কিন্তু, প্রত্যেক দল এবং প্রার্থীর স্বাধীনতাকে আদালত মান্যতা দিচ্ছে, পরিস্থিতির কথা জানাতে তাঁরা রাজ্য নির্বাচন কমিশনে গিয়ে সমস্ত অভিযোগ করতে পারেন। গত শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টে বিজেপি একটি মামলা দায়ের করে। সেখানে তারা পঞ্চায়েত নির্বাচনে মনোনয়ন জমা দেওয়া সংক্রান্ত রাজ্য জুড়ে অশান্তির কথা জানিয়ে মনোনয়নপত্র পেশের শেষ দিন এবং নির্বাচনের দিন পরিবর্তনের আবেদন করে। কিন্তু, শীর্ষ আদালত সে দিন রায় স্থগিত রেখে সোমবার জানাবে বলেছিল। এ দিন সেই সংক্রান্ত রায় দিয়েছে। তাতে নির্বাচনের দিন পরিবর্তনের আবেদনও খারিজ করে দিয়েছে আদালত।

নির্বাচনী পদ্ধতিতে তারা কোনও ভাবেই ঢুকবে না। কিন্তু, প্রত্যেক দল এবং প্রার্থীর স্বাধীনতাকে আদালত মান্যতা দিচ্ছে, পরিস্থিতির কথা জানাতে তাঁরা রাজ্য নির্বাচন কমিশনে গিয়ে সমস্ত অভিযোগ করতে পারেন। সুপ্রিম কোর্ট

সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশ জানার পর রাজ্য জুড়ে শাসক দলের দাপট অনেকটাই বেড়ে যায় বলে বিরোধীদের অভিযোগ। বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, পূর্ব মেদিনীপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা— রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় জেলাশাসক, মহকুমাশাসক বা সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিকের কার্যালয়ে পৌঁছতেই দেওয়া হয়নি বিরোধীদের। গ্রামের মোড়ে মোড়ে জটলা বেঁধে দাঁড়িয়েছিল শাসকদলের লোকজন। বিরোধী দলের কাউকে দেখলেই তাড়া করে ঘরে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। শান্তি বজায় রাখতে এলাকায় মোতায়েন থাকা পুলিশ কর্মীরা তৃণমূলের ওই বাহিনীকেই নানাবিধ ভাবে সাহায্য করেছে বলে বিরোদীদের অভিযোগ। এমনকী, সংবাদমাধ্যমের কর্মীদেরও খবর সংগ্রহ করতে বাধা দেওয়া হয়েছে।

জেলায় জেলায় অশান্তি অব্যাহত

গোটা বিষয় নিয়ে নির্বাচন কমিশনে গিয়েছিলেন বিজেপি নেতারা। এ দিন বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্টের রায় মেনেই কাজ করবেন বলে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার অমরেন্দ্রকুমার সিংহ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

এ সবের মধ্যেই বীরভূম জেলায় প্রায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেলা পরিষদ দখল করে নিল তৃণমূল। সেখানে ৪২টি আসনের মধ্যে ৪১টিতে বিরোধীরা কোনও প্রার্থীই দিতে পারেনি। মাত্র একটি আসনে বিজেপি মনোনয়ন জমা দিতে পেরেছে। আগামী ১, ৩ এবং ৫ মে রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন। ফল ঘোষণা ৮ মে। তার আগেই বীরভূম জেলা পরিষদ নিজেদের ঘরে তুলে নিয়েছে শাসকদল।