দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রীকে যৌন হেনস্থা, গ্রেফতার স্কুলের দারোয়ান

বেশ কয়েক দিন ধরেই ছোট্ট মেয়েটি স্কুলে যেতে চাইছিল না। চুপচাপ থাকছিল। কিন্তু, মা তাকে প্রায় জোর করেই স্কুলে পাঠাচ্ছিলেন। তবে, মঙ্গলবার একেবারেই যেতে না চাওয়ায় মা তাকে জিজ্ঞেস করেন, কী হয়েছে? স্কুলে কোনও বন্ধুর সঙ্গে গণ্ডগোল? এর পর আট বছরের ওই মেয়েটি তার মাকে জানিয়েছে, স্কুলের এক ‘কাকু’ তার গায়ে হাত দেয়। তার এতে খারাপ লাগে। সে জন্যই সে স্কুলে যাবে না।

মা-কে সে আরও বলে, দিন দশেক আগে ওই ‘কাকু’ তাকে অন্য অনেক দিনের মতোই জাপ্টে ধরে। এবং শরীরের বিভিন্ন জায়গায় হাত দেয়। রেগে গিয়ে সে ‘সবাইকে বলে দেব’ বলায়, তিনি তাকে স্কুলের একটি ঘরে অনেক ক্ষণ আটকে রাখেন। ভয় পেয়ে কান্নাকাটি শুরু করে দেয় দ্বিতীয় শ্রেণির ওই ছাত্রী। এর পর চিৎকার শুনে স্কুলের এক শিক্ষিকা তাকে ওই ঘর থেকে উদ্ধার করে।

বেলুড় প্রাথমিক বালিকা বিদ্যালয়ে পড়া মেয়ের কাছে এ সব শুনে বুধবার স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার কাছে সবটা নিয়ে অভিযোগ জানাতে গিয়েছিলেন তার বাবা-মা। আর তাতেই গোল বাধে। অন্য অভিভাবকরা বিষয়টি জেনে গিয়ে স্কুলে চলে আসেন। কিন্তু, প্রধান শিক্ষিকা তাঁদের কোনও কথা শুনতে চাননি। এর পরেই ক্ষোভ বাড়তে থাকে। আটকে থাকা ছাত্রীকে যে শিক্ষিকা উদ্ধার করেছিলেন, তিনিও বিষয়টি স্বীকার করে নেন। পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে ওঠে।

অভিযুক্ত সুশান্ত দাস ওই স্কুলে দারোয়ানের কাজ করেন। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে প্রধান শিক্ষিকা পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে ওই অশিক্ষক কর্মচারীকে গ্রেফতার করে। পকসো আইনে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়েছে। এর পর প্রধান শিক্ষিকার পদত্যাগ এবং গ্রেফতারির দাবিতে উত্তাল হয়ে ওঠে বেলুড়। জিটি রোড অবরোধ করেন অভিভাবকেরা। বিক্ষোভ সামলাতে বিশাল পুলিশ বাহিনী আসে। তাদের সঙ্গে অভিভাবকদের ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এর পরেই বিক্ষোভে ফেটে পড়েন অভিভাবকেরা।

শেষে অবরোধ তুলতে পুলিশ তাঁদের দিকে লাঠি উঁচিয়ে যায় বলে অভিযোগ। এর পর ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়েন অভিভাকেরা। কিছু ক্ষণের মধ্যেই সেই বিক্ষোভ ফের এসে পড়ে স্কুল চত্বরে। ঘিরে রাখা হয় শিক্ষিকাদের। পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন বিকেল পর্যন্ত পরিস্থিতি অস্বাভাবিক ছিল।