পদে রেখেও শোভনকে নির্বাচনের দায়িত্ব থেকে বাদ!

sovon chaterjeeশোভন চট্টোপাধ্যায়

জাস্ট দুনিয়া ডেস্ক: দক্ষিণ ২৪ পরগনার তৃণমূল সভাপতি তিনি। অথচ, পঞ্চায়েত নির্বাচনে সেই শোভন চট্টোপাধ্যায়কে কোনও দায়িত্ব রাখা হয়নি।

এ বছরেই রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন। তারই রণকৌশল ঠিক করতে বৃহস্পতিবার তৃণমূল ভবনে বৈঠকে বসেছিলেন দলীয় নেতৃত্ব। সেখানে এ দিনও গরহাজির ছিলেন শোভন। সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানান, শরীর খারাপ। তাই যওয়া হয়নি। এর আগে গত শুক্রবার দলের কোর কমিটির বৈঠকেও তাঁকে দেখা যায়নি। সেই সময়েও শরীর খারাপের কথা শোনা গিয়েছিল কলকাতা পুরসভার মেয়রের মুখে। পরে যদিও তিনি বলেছিলেন, পরের দিন অর্থাৎ শনিবার পুরসভার বাজেট অধিবেশন ছিল। তাই তিনি কোর কমিটির বৈঠকে যেতে পারেননি।

দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সুব্রত বক্সীকেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে, দলের তরফে এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি।

যদিও তৃণমূল সূত্রে খবর, শোভনকে দলনেত্রীর নির্দেশেই পদে রেখে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হল। জেলায় পঞ্চায়েত নির্বাচন সংক্রান্ত সমস্ত দায়িত্ব বর্তেছে রাজ্য নেতৃত্বের উপর। শোনা যাচ্ছে, দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সুব্রত বক্সীকেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে, দলের তরফে এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি।

কোর কমিটির বৈঠক যে দিন ছিল, সে দিন সন্ধ্যায় শোভনকে শহরের অন্যত্র দেখা গিয়েছিল বলে শোনা যায়। পরের দিন বাজেট অধিবেশনেও তিনি দেরি করে পৌঁছেছিলেন। যা নিয়ে বিরোধীরা সরব হয়েছিল।

বেশ কয়েক দিন ধরে আসলে ব্যক্তি শোভন বেশ অস্বস্তিতে রয়েছে। এক দিকে তাঁর ‘পারিবারিক বন্ধু’ বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়, অন্য দিকে ‘স্ত্রী’ রত্না চট্টোপাধ্যায়— এই দু’জনকে ঘিরে শোভনকে নিয়ে রীতিমতো তরজা চলছে সংবাদমাধ্যমে। কখনও কখনও সেই তালিকায় ঢুকে পড়ছেন তাঁর শ্বশুর দুলাল দাস। গত নভেম্বরে যদিও রত্নার বিরুদ্ধে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা করেছেন শোভন। সেই মামলা চলাকালীন স্ত্রীর বিরুদ্ধে বেহালা পর্ণশ্রী থানায় এফআইআরও করেছেন। আবার কয়েক দিন আগে তিনি নিরাপত্তা চেয়ে রবীন্দ্র সরোবর থানাতেও আবেদন করেছেন। সেখানে তিনি জানিয়েছিলেন, স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায় তাঁকে গুন্ডা পাঠিয়ে ফ্ল্যাট থেকে উচ্ছেদ করতে চান।

এর মধ্যেই জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছিল, শোভন কি দল ছাড়ছেন? যদিও পরে পুরসভায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শোভন বলেছিলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে কাজ চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন। মমতা নাকি তাঁকে ফোন করে বলেছেন, মন দিয়ে দায়িত্ব নিয়ে কাজ করে যাও।

শোভন কলকাতা পুরসভার মেয়রের পাশাপাশি রাজ্যের তিনটি দফতরের মন্ত্রীও বটে। গুরুত্বপূর্ণ সেই সব দায়িত্বে রেখে কেন পঞ্চায়েত নির্বাচনের দায়িত্ব থেকে তাঁকে সরানো হল, উঠছে সে প্রশ্ন। তবে, এ নিয়ে তৃণমূল বা শোভন কোনও মন্তব্য করেননি।